১৫ অক্টোবর ২০১৬, শনিবার

সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে আওয়ামী লীগের অপঃরাজনীতি

বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমান কাল ধরে বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষ এখানে সহাবস্থান করে আসছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ শতকরা নব্বই ভাগের বেশি মুসলিম হলেও হিন্দু,বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সব ধর্মের অনুসারীরা অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করে আসছেন যুগ যুগ ধরে।

৩য় বিশ্বের সমস্যাগ্রস্থ দরিদ্র দেশ বাংলাদেশ। শিষ্টাচার বহির্ভূত রাজনীতি, দোষারোপের অপরাজনীতির চারণভূমি। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির উপর বার বার আঘাত দেখে এদেশের মানুষ অভ্যস্থ। এসব কিছুতে ঘি ঢালে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর অযাচিত হামলার ঘটনা। মিডিয়া, আন্তর্জাতিক মিডিয়া, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সকলেই সোচ্চার সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে কিন্তু কি এক অজানা কারণে সকলের আংগুল জামায়াত ইসলামীর দিকে । বর্তমানে তো তা আর ও বড় আকার নিয়েছে। দেশের ভিতরে বা বাইরে সংখ্যালঘু নিয়ে কোন ঘটনা ঘটেলেই তার দোষ চাপানো হয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ওপর। খুন-খরাবি থেকে শূরু করে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সব ধরণের চক্রান্তে জামায়াতের ঘাড়েই চাপানো হয় বোঝা। আইন শৃংখলা বাহিনী যখন কোন কুল কিনারা পাননা তখন জামায়াতকে দায়ি করে দ্বায়সারা বক্তব্য প্রদান করেন। এদিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ও সেই তালে তাল দেয়। জামায়াতের ওপর দোষা চাপানো সরকারের নেশায় পরিণত হয়েছ।

দেশের পুলিশ সবগুলো কেসের জট খুলতে না পারলেও জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা নেই সেটা বের হয়ে আসে। কিন্তু কেন প্রথমে জামায়াতের ঘাড়ে দোষারোপ চাপানো হয়, তার কোন স্বদুত্তর প্রশাসনের কাছে নেই। এরকম নানান অপরাধে জামায়াত কে জড়ানোর পাশাপাশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলায় ও অযথাই এবং অনুমানে নির্ভর করে দায়ী করে পরে নিজেদের নেতা কর্মীদেরই জড়িত থাকার নির্লজ্জ প্রমাণ ও রয়েছে আওমীলিগের ইতিহাসে।

সংখ্যালঘু নির্যাতনের নষ্ট রাজনীতি
আওয়ামী লীগ সরকারই কম বা বেশি, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সাম্প্রদায়িকতাকে প্রশ্রয় দিয়েছে ও দিচ্ছে। তা তারা দিয়েছে ও দিচ্ছে ‘ভোটের জন্য’, ‘ক্ষমতায় থাকার জন্য’ বা ‘ক্ষমতা পাওয়ার জন্য’। আমরা মনে করি শাসকশ্রেণী ও গোষ্ঠী না চাইলে সাম্প্রদায়িকতার সৃষ্টি হবে না বরং তার বিলোপ ঘটবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগই বাঙালি-অবাঙালির বিভেদ তৈরি করে জাতিকে বিভক্ত ও বিভ্রান্ত করে চলছে। তাদের উদ্দেশ্য লুটপাট, হিন্দুদের জমি দখল। হিন্দুদের তাড়াতে পারলে অর্থসম্পদ সম্পত্তির দখল আর দেশে থাকলে জোর জবরবস্তি করে ভোট নেয়াই তাদের মুদ্রা দোষে পরিণত হয়েছে। এদেশে সাম্প্রদায়িক বিভেদের পেছনে কোনো ধর্মীয় বিশ্বাস কাজ করেনি। সবই মূলত ঘটেছে, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক পারস্পরিক হিংসাবিদ্বেষ থেকে।

ইসলামে সংখ্যালঘুদের অধিকার সংরক্ষণ
প্রাণের নিরাপত্তা : অমুসলিম নাগরিকের রক্তের মূল্য মুসলমানদের রক্তের মূল্যের সমান। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমলে জনৈক মুসলমান অমুসলিমকে হত্যা করলে তিনি খুনিকে মৃত্যুদ- দেন। তিনি বলেন, “যে নাগরিকের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয়া হয়েছে, তার রক্তের বদলা নেয়ার দায়িত্ব আমারই।”
“যে অমুসলিম নাগরিককে কষ্ট দিল আমি তার বিরুদ্ধে বাদি হবো। আর আমি যার বিরুদ্ধে বাদি হবো আমি কিয়ামতের দিন জয়ী হবো।” (তারিখে বাগদাদ)

‘যে সংখ্যালঘুকে কষ্ট দিল সে আমাকে কষ্ট দিল আর যে আমাকে কষ্ট দিল সে স্বয়ং আল্লাহকে কষ্ট দিল।’ (তাবরানি আওসাত) হযরত আলী (রা)-এর আদালতে সংখ্যালঘু নাগরিক হত্যাকারী এক মুসলিমকে উপস্থিত করা হলো এবং সাক্ষী-প্রমাণের মাধ্যমে তার অপরাধ প্রমাণিত হলো।

ইসলাম সকল প্রকার সম্প্রদায়িক শ্রেণীভেদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আসছে। লঘিষ্ঠ আর গরিষ্ঠকে মুক্ত করতেই এই জীবনব্যবস্থার আগমন। শাশ্বত বিধান আল ইসলামের লক্ষ্যই হচ্ছে সকল প্রকার ভেদাভেদ উঁচু-নিচু, হিংসা-বিদ্বেষমুক্ত সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলা। লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে অন্য সকল মানুষকে আল্লাহর দ্বীনের পতাকাতলে সমবেত করা। সুতরাং যারা এতুটু চেতনা বিশ্বাস ও আল্লাহর কাছের জবাবদিহির মানসিকতাকে লালন করে তারা কখনোই অন্যের অধিকার হরণ সামাজিক অনাচার সৃষ্টি ও সম্পদ লুণ্ঠনের মতো গর্হিত কাজ করতে পারে?

বিস্তারিত জানতে ও সম্পূর্ণ প্রতিবেদন টি ডাউনলোড করতে পিডিএফ ফাইল থেকেঃ লিঙ্ক