ভূমিকাঃ
দেশের বিভিন্ন সমস্যার কথা যখন চিন্তা করি তখন অনেক বিষয় লেখার জন্য ইচ্ছা জাগে। কিন্তু বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে হয়ে ওঠে না। পত্র-পত্রিকায় ২/১টি লেখা অনেক আগে প্রকাশিত হয়েছে। মরহুম আব্বাস আলী খান, মরহুম অধ্যাপক ইউসুফ আলী ও মরহুম মোহাম্মদ ইউনুছ ভাইয়ের জীবনী কেন্দ্রীক সংকলন বের হওয়ার সময় বেশ তাগিদ দিয়ে দায়িত্বশীল ভাইয়েরা ২/১টি লেখা আদায় করেছেন আমার থেকে।
২০০১ সালে জাপান সফর থেকে আসলে সাপ্তাহিক 'সোনার বাংলা' স্নেহাস্পদ কামরুল খুব তাগিদ দিলেন লেখার জন্য। অভ্যাস না থাকার কারণে বেশ দেরি হলো। একটু লিখে তার হাতে দিলাম। তা সাপ্তাহিক সোনার বাংলায় ছাপা হলো। নীচে লেখা 'চলবে'। পরে আমাকে এসে আবার তাগিদ দিলেন বাকী লেখা শেষ করে দেওয়ার জন্য। আমি বললাম, তুমি তো ভাল হেকমত জানো। আমাকে লেখক বানিয়ে ছাড়বে। অগত্যা কলম হাতে নিলাম, ব্যস্ততার অজুহাতে না লেখা সম্ভব হলো না। এভাবে কয়েক সংখ্যায় লেখা প্রকাশিত হলো। অতঃপর বেশ কয়েকজন ভাই বলল, এটাকে বই করার জন্য। তা আর হয়ে ওঠে না। আমাকে অনেকেই বলেন, কিছু কিছু লিখুন, অনেকেই তো লিখেন। আমি বললাম, সবাই লিখলে পড়বে কে? আমার মতো কিছু লোক পাঠক থাকা দরকার।
সর্বশেষ মরহুম আব্বাস আলী খানের জীবনী লেখক স্নেহাস্পদ নাজমুস সায়াদাত তার শত ব্যস্ততার ভিতর জাপান সফরকে নিজ দায়িত্বে নিয়ে বইয়ের আদলে তৈরি করে আমাকে একটু দেখে দিতে বললেন, কিন্তু বিভিন্ন কারণে শুধু দেখার কাজও করতে অনেক দিন লেগে গেল।
আসলে লেখা একটা আর্ট, লিখতে লিখতে লেখক হয়ে যায়। অনেকদিন আগের কথা প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ মরহুম মাওলানা আবদুর রহীম এক লেখক সম্মেলনে বলেছিলেন, লেখক হওয়া একেবারে সহজ, আপনার বাড়ী থেকে নিজ গ্রামের বাজারে যাওয়া যেমন সহজ তেমনি সহজ। আরো বললেন, আপনি সারাদিন যতকথা বলেন সন্ধ্যায় তা লিখে ফেলুন। দেখবেন একটা লেখা হয়ে গিয়েছে। এ সহজ নোসখা জানার পরও লিখার হাত পাকানো কঠিন। নাজমুস সায়াদাতের অনবরত চেষ্টা, তাগিদ না পেলে হয়ত এ লেখা বইয়ের আকারে বের হতো না।
বই লেখকদের আর একটা বিড়ম্বনা আমাকে ব্যথিত করে। লেখক অনেক চেষ্টা সাধনা করে পাণ্ডুলিপি তৈরি করে প্রকাশককে দেন, বই বের হয়, প্রকাশকদের কম বেশি ব্যবসাও হয় কিন্তু লেখার প্রাপ্য পারিশ্রমিক পেতে বেশ কষ্ট হয় লেখকে।
আমি এক প্রকাশককে বললাম, আপনারা বই ছাপাতে কাগজ, কালি, প্রেসে টাকা খরচ করেন, নগদ টাকা দিতে হয়, কিন্তু লেখকের পাওনা দিতে খুব দেরি হয় কেন? অন্তত তার প্রাপ্য রয়্যালিটির অর্ধেক বই বের হওয়ার সাথে সাথে দিয়ে দিন। কাগজ, কালির মত এটাও আপনার ইনভেস্টমেন্ট খরচ হিসাবে দেখাবেন। এ পাওয়ায় কষ্টক্লেশ করে লেখক যে মেহনত করল হয়তো কিছুটা প্রশান্তি পেল। জানি না প্রকাশক ব্যবসায়ী ভাইয়েরা এটাকে কিভাবে নিবেন?আবার দেখি কবিতার বই ছাপাতে চায় না প্রকাশকগণ slow item বলে। তা হলে কবি মনের এ কাব্যিক দোতনা কোথায় কিভাবে প্রকাশ করবে। অতীতকালে রাজা বাদশাগণ কবি মহাকবিদেরকে সহযোগিতা দিয়ে, সম্মানী/মাসোহারা দিয়ে, সাহিত্যিক অবদান রাখতে, মহাকাব্য রচনা করতে সাহায্য করতেন। এখনো সম্পদশালী লোকেরা এ বিষয়টি সমাজ বিনির্মাণের হাতিয়ার মনে করে উদারভাবে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা করতে পারেন।
স্নেহাস্পদ এ এম আমিনুল ইসলাম প্রফেসর’স পাবলিকেশন্সের সত্বাধিকারী। ব্যবসায়িক দিক থেকে এ বইটি আহামরি না হওয়া সত্বেও সে যে ছাপাতে আগ্রহী হয়েছে এজন্য আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দিক দোয়া করি। আমার এ লেখায় কেউ যদি জীবনের আসল উদ্দেশ্যের পথে একটুও আগানোর প্রেরণা পায়, তা হবে আমার জন্য বড় পাওনা। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে তার সন্তুষ্টি সামনে রেখে যাবতীয় প্রচেষ্টা চালানোর তৌফিক দিন।
মকবুল আহমাদ
মগবাজার, ঢাকা
সম্পূর্ণ বইটি পড়তে ডাউনলোড লিংকে ক্লিক করুনঃ ডাউনলোড