প্রবীণ শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট- এবনে গোলাম সামাদ লিখেছেন - “বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী একটা গোড়া ধর্মান্ধ মৌলবাদী ইসলামপন্থী দল নয়। জামায়াতে ইসলামী একটি চরমপন্থী দল নয়। মুসলিম মূল্যবোধে বিশ্বাসী একটি মধ্যপন্থী দল। সম্প্রতি ইউরোপ ও আমেরিকার অনেক নেতা বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীকে একটি মধ্যপন্থী ইসলামি দল হিসেবে বিবেচনা করছেন। বাংলাদেশের জামায়াত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিকদের কাছে পেতে শুরু করেছে বিশেষ বিবেচনা। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এখন প্রমাণ করতে চাচ্ছে, জামায়াতে ইসলামী হলো একটি গোঁড়া ধর্মান্ধ ইসলামপন্থী দল। তাই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে জামায়াত ক্ষমতায় আসবে। আর এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ইউরো-মার্কিন জোট। কিন্তু ইউরো-মার্কিন জোটের অনেক নেতাই হতে পারছেন না আওয়ামী লীগের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে একমত। বিশেষ করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জামায়াত সম্পর্কে এখন অনেক ভিন্নভাবেই ভাবছে বলেই মনে হয়।
একটি বিষয় বিশেষভাবে লক্ষণীয়, তা হলো সাবেক পাকিস্তান আমলে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে দল হিসেবে জামায়াত মোটেও শক্তিশালী ছিল না। সে শক্তি সঞ্চয় করতে পেরেছে ১৯৭১ সালের পরে। তার ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী মনোভাবের কারণে। পশ্চিমবঙ্গের অনেক পত্রপত্রিকায় লেখা হচ্ছে, বাংলাদেশে জামায়াত সাহায্য ও সহযোগিতা পাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন না, তখনই জামায়াত হয়ে ওঠে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি গ্রহণযোগ্য শক্তি। বিএনপির সাথে জোট গঠন করে জামায়াত থেকে দু’জন মন্ত্রী হন। এই দু’জন মন্ত্রী চেষ্টা করেননি বাংলাদেশে জঙ্গি ইসলামতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার। উদার গণতন্ত্র মেনেই পরিচালনা করতে চেয়েছেন দেশকে। বর্তমানে এই ইতিহাস টুকুকে টপকে যেতে চাচ্ছেন যেন এ দেশের অনেক সাংবাদিক। কেন তারা এটা করছেন, সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। অনেক ভারতীয় পত্রপত্রিকার সাথে মিলছে তাদের সাংবাদিকতার ধারা।
( সুত্র: নয়া দিগন্ত )