১ জানুয়ারি ২০১৯, মঙ্গলবার, ১১:৫৬

ভোটের ফল প্রশ্নবিদ্ধ বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি টিআইবি’র

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নানা অনিয়ম ও সহিংসতায় ১৯ জন নিহত হওয়া, বলপ্রয়োগ ও বহুমুখী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। নির্বাচন ও তার ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে এতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি দেশের জনগণের আস্থাহীনতা সৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। গতকাল এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ দাবি জানান।

বিবৃতিতে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতা ও বলপ্রয়োগসহ নির্বাচনী আচরণবিধির বহুমুখী লঙ্ঘনের যেসব অভিযোগের কারণে নির্বাচন ও তার ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, তার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের ওপর ভিত্তি করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই সব পক্ষের জন্য সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে এসেছি। কিন্তু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে একটি প্রতিদ্বন্দ্বী জোটের প্রার্থী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা, হামলা ও নির্যাতনের সংবাদ প্রচারিত হয়েছে, যা গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত। এমনকি নির্বাচনের আগের রাতে এবং নির্বাচনের দিনও এমন হয়রানি চলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সবচেয়ে বড় আশঙ্কার বিষয় হলো, এতে করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি দেশের জনগণের আস্থাহীনতা সৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।’

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘একটি জোটের পোলিং এজেন্টরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভোটকেন্দ্রে আসতে না পারার অভিযোগের বিষয়টি যেভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এড়িয়ে যেতে চেয়েছেন তা একদিকে যেমন বিব্রতকর, অন্যদিকে নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন তার সাংবিধানিক দায়িত্ব কার্যকরভাবে পালন করতে পেরেছে কিনা সে উদ্বেগ আরো ঘনীভূত করেছে।’

তিনি বলেন, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ লঙ্ঘন করে মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতির নামে ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখার মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে খোদ রাজধানীতেই।

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে যেভাবে সচিত্র প্রতিবেদন আকারে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে তাকে অপপ্রচার বলে উড়িয়ে দেয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়াও ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার আগেই ব্যালট পেপার ভর্তি বাক্স নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া, বহু ভোটার ভোট দেয়ার আগেই ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়া, প্রার্থীকে ভোটকেন্দ্রে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা ইত্যাদি ঘটনার প্রতিটির সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করে টিআইবি।’

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন কর্তৃক তদন্ত করে এসব ক্ষেত্রে তাদের ব্যর্থতা নিরূপণ করা এবং তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা অপরিহার্য। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে আস্থার সংকটের প্রেক্ষিতে কমিশনের গৃহীত পদক্ষেপের পাশাপাশি সরকারের প্রতি আমাদের জোরালো আহ্বান থাকবে, এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের উদ্যোগ নিন।’

অভূতপূর্ব নির্বাচনের মাধ্যমে সৃষ্ট অভূতপূর্ব ফলাফলের উপর ভিত্তি করে যে নতুন সরকার গঠিত হবে তার আত্মবিশ্বাস, মর্যাদা, আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করার স্বার্থেই এই তদন্ত অবশ্যকরণীয় বলে মন্তব্য করেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক।

http://mzamin.com/article.php?mzamin=152504&cat=3