১ জানুয়ারি ২০১৯, মঙ্গলবার, ১০:৪৬

সম্ভাবনা ও প্রত্যাশার যাত্রা শুরু

আজ পহেলা জানুয়ারি ২০১৯, মঙ্গলবার, খ্রিস্টীয় নববর্ষ। বছর ঘুরে আবারো এসেছে ইংরেজি নববর্ষ। গতকাল সোমবার পশ্চিমাকাশে সূর্যাস্তের মাধ্যমে কালের অতলে হারিয়ে গেছে ২০১৮ সাল। ফেলে আসা বছরটি এখন ‘পুরনো সেই দিনের কথা।’ সময় আর স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না’-এই সত্যকে বিমূর্ত করে নতুন বছরের প্রথম সূর্যোদয়। বর্ষবরণের আবাহন রেখে কুয়াশামোড়া পা-ুর সূর্য জীর্ণ ঝরা পল্লবের মত সরল রৈখিক গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে কাল খসে পড়েছে। এক বছরের ‘আনন্দ- বেদনা, আশা-নৈরাশ্য আর সাফল্য ব্যর্থতার পটভূমির ওপর আমাদের ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এই প্রিয় বাংলাদেশ নতুন বছরে পর্বতদৃঢ় একতায় সর্ব বিপর্যয়-দুঃসময়কে জয় করবে অজেয়-অমিত শক্তি নিয়ে’ -এ সংকল্পের সোনালী দিন আজ। যে বছরটি হারিয়ে গেল ,খসে পড়লো ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে, তার সবই কি হারিয়ে যাবে ? মুছে যাবে পলাতক স্মৃুতির মত ? না, সবকিছু মুছে যায় না। আলোড়ন আর তোলপাড় করা ঘটনাবহুল ২০১৮-এর অনেক ঘটনার রেশ নিয়েই মানুষ এগিয়ে যাবে । অনেক ঘটনা মুছে যাবে বিস্মৃতির ধুলোয়। তমসা থেকে জ্যোতিতে উত্তীর্ণ হওয়ার আকাংখা সমুখে নিয়ে সুচনা হলো এই যাত্রা। সারা বিশ্বের মানুষ গত রাত ১২টা বাজার সাথে সাথে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ইংরেজি নববর্ষ ২০১৯ সালকে স্বাগত জানায়।

বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বরণ করে নেয়া হয় নতুন ইংরেজি বছরকে। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নববর্ষ ২০১৯ উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণী দিয়েছেন বিনেপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বাণীতে তারা ইংরেজি নতুন বছর উপলক্ষে দেশবাসী, প্রবাসী বাঙালিসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে খ্রিষ্টীয় নববর্ষে বিগত বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পেছনে ফেলে নতুন বছরে বাংলাদেশ অমিত সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করেছেন। তিনি বলেন, নববর্ষ সকলের মাঝে জাগায় প্রাণের নতুন স্পন্দন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা। খ্রিষ্টীয় নববর্ষ ২০১৯ সবার জীবনে অনাবিল আনন্দ ও কল্যাণ বয়ে আনুক । প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন, সংবিধান ও গণতান্ত্রিক ধারা রক্ষা এবং জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জ্বীবিত করার ক্ষেত্রে ২০১৮ সাল জাতির ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল বছর।

এদিকে নির্বাচন থেকে শুরু করে বিদায়ী বছরে নানা ঘটনা আলোড়িত করেছে ৫৬ হাজার বর্গমাইলকে। এই এক বছরে কেমন ছিল বাংলাদেশ। কেমন ছিল বাংলাদেশের মানুষ? বিশ্লেষকরা বলছেন, বছরজুড়ে বিতর্কিত নির্বাচন আর মামলা-হামলা নিয়ে ভূগতে হয়েছে দেশের মানুষকে।

নতুন বছর আসার ঠিক একদিন আগে ৩০ ডিসেম্বর হয়ে গেল একাদশ জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচন বছরের সবচেয়ে বেশি আলোচনা ছিল একাদশ জাতীয় নির্বাচন। এছাড়াও বছরজুড়ে আলোচনায় ছিল বিএনপি চেয়ারপারসনের খালেদা জিয়ার সাজা, নেপালে ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা, এ বছরই শিক্ষার্থীদের সর্ববৃহৎ দুইটি আন্দোলনের ঘটনা ঘটেছে। একটি কোটা সংস্কার নিয়ে আরেকটি নিরাপদ সড়কের দাবিতে। এ ছাড়া এ বছর বড়পুকুরিয়া থেকে কয়লা ‘উধাও’ ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে স্বর্ণের ওজন কমার মতো অদ্ভুত ঘটনাও ঘটেছে। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন : ডিসেম্বরের ৩০ তারিখ। হয়ে গেল একাদশ জাতীয় নির্বাচন। ডিসেম্বরের ৩১ তারিখ নির্বাচন নিয়ে দেশের একটি প্রথম শ্রেণির দৈনিক লিখেছে ‘এক চেটিয়া ভোটে নৌকার জয়’। তাতে লেখা হয় নিয়ন্ত্রিত মাঠে অনিয়ম ও অসঙ্গতির মাধ্যমে জয় পায় আওয়ামী লীগ। বিরোধী পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অনেক দাবি করা হলেও কোন দাবি মানা হয়নি। সব দাবি উপেক্ষা করে বিতর্কিত এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সিটি কর্পোরেশনসহ প্রতিটি নির্বাচন একচেটিয়া ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

খালেদা জিয়ার মামলা : সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ড হয় এবছরের ৮ ফেব্রুয়ারি। এরপর থেকে সারাবছর আলোচনায় ছিলেন বেগম খালেদা জিয়ার মামলা এবং চিকিৎসা। উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়া না পাওয়া নিয়ে বছর পার হলেও নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি তিনি। এই মামলা নিয়ে পুরো বছরজুড়ে রাজনৈতিক অঙ্গন ছিল উত্তপ্ত।

এছাড়া বছরজুড়ে বিরোধী পক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে গায়েবি আর রাজনৈতিক মামলা ছিলো আলোচনায়। দেশের শীর্ষ রাজনীতিক থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ের লোকজনের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা করা হয়। মামলার আসামী করা হয় লাখ লাখ। এসব মামলার হুলিয়া নিয়ে লাখ লাখ মানুষকে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে।

ভিকারুননিসায় লঙ্কাকাণ্ড : নভেম্বরের ৩০ তারিখ সোমবার। ভিকারুননিসার নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন নিয়ে আসায় হল থেকে বের করে দেয়া হয় অরিত্রি অধিকারীকে। আর কোনো পরীক্ষায় অংশ নিতে না দিয়ে তাকে টিসি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলে অরিত্রির বাবা-মাকে ডেকে তার সামনেই অপমান করা হয় তাদের। নিজের ঘরের ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। অরিত্রির মৃতুর পর শিক্ষক হাসনা হেনা আটক করে পাঠানো হয় কারাগারে। তবে এ ঘটনার পরদিন শিক্ষিকার জামিনের দাবিতে বিক্ষোভ-অনশন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষিকা জামিনে মুক্ত হওয়ার পর কিছুটা শান্ত হয় ভিকারুননিসা। বছরের শেষ দিকে বেশ আলোচিত হয় ভিকারুননিসা শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন।

দেশ কাঁপিয়েছে সকল স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা : ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসের চাপা দিয়ে খানম মিম ও আবদুল করিম নামে দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বদলে যায় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট। ওই ঘটনার প্রতিবাদে সেদিন থেকেই শিক্ষার্থীরা রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরদিন আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ট্রাফিক শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করে শিক্ষার্থীরা। গাড়ি আটকে তাদের কাগজপত্র-লাইসেন্স যাচাই বাছাই করে। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে ভিআইপি-ভিভিআইপিদের গাড়ি, উল্টো পথ থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে বাণিজ্যমন্ত্রীর গাড়িও। তবে তৃতীয় দিনের আন্দোলনকে কলঙ্কিত করে বহিরাগত কিছু শিক্ষার্থীর পুলিশের ওপর হামলা চালায়। ধর্ষণ-চোখ উপড়ে ফেলার মতো গুজব ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষিপ্ত করে তোলার চেষ্টা করা হয়। গুজবে কান দিয়ে রাজধানীর ধানমন্ডি, সাইন্সল্যাব, বসুন্ধরা ও রামপুরা এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও তাদের সহযোগী হেলমেটধারী যুবকদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ৬৫ জনের মতো শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়।

কোটা সংস্কার আন্দোলন: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ৮ এপ্রিল সকাল থেকে শাহবাগের রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দিনভর অবস্থান করে সড়কেই রাত্রি যাপনের পরিকল্পনা করে তারা। তবে রাতে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে ছবির হাটের সামনে টিয়ারসেল ও ফাঁকা গুলী ছোড়ে পুলিশ। এতে করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে শিক্ষার্থীদের। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে ঢাবি এলাকাজুড়ে। ভাঙচুর করা হয় ঢাবি ভিসি মোহাম্মদ আখতারুজ্জামানের বাসভবনে, চলে লুটপাট। সেই রাতে আহত হয় প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।

পরদিন ৯ এপ্রিল দেশব্যাপী শুরু হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। একাত্মতা ঘোষণা করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদেরের সঙ্গে আলোচনার পর আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষার্থীরা। তবে সেদিন সংসদে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কটূক্তি করায় আবারও রাস্তায় নামে শিক্ষার্থীরা। তীব্রতর হয় আন্দোলন। এদিন বিকেলেই সংসদে ‘সব চাকরিতে প্রধানমন্ত্রীর কোটা তুলে নেয়ার’ ঘোষণায় থামে যায় আন্দোলন। পরে মন্ত্রী পরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রস্তাব অনুযায়ী প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে সব ধরনের কোটা বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ভোল্টের সোনায় নয়-ছয় : হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে টাকা চুরির দুই বছর যেতে না যেতেই আবারও প্রশ্নবিদ্ধ হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জুলাই মাসে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের উঠে আসে অদ্ভুত তথ্য। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়- ২০১৫ সালের ২৩ আগস্ট কাস্টম হাউসের গুদামে ১৯ দশমিক ২ ক্যারেট সোনার একটি চাকতি এবং একটি কালো প্রলেপযুক্ত সোনার রিং জমা ছিল। তবে দুই বছর পর চাকতিতে ১১ দশমিক ২ ক্যারেট সোনা ও আংটিতে ৩ দশমিক ৬৩ ক্যারেট পাওয়া যায়। সোনা হেরফেরের অভিযোগ তুলেছে তারা। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাফাই গেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় দাবি করেছে- ৪০ শতাংশ ও ৮০ শতাংশের সমস্যা হয়েছে, এটি ‘ক্লারিক্যাল এরর’। লেখার মধ্যে ইংরেজি বাংলা মিশ্রণ হয়ে গেছে। কিছু ব্যাপার আমরা করি, মান্ধাতা আমলের সোনা মাপার কষ্টিপাথর দিয়ে পরীক্ষা করা হয়, এখন সর্বশেষ কিছু সিস্টেম ইলেকট্রনিক যন্ত্রে সোনার ক্যারেট মাপা হয়।

কয়লা উধাও : জুলাই মাসে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনির কোল ইয়ার্ড থেকে ১ লাখ ৪২ হাজার টন কয়লা উধাও হয়ে যায়। এসব কয়লার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। ১৬ হাজার টাকা দরের উধাও হওয়া এ কয়লার বাজার মূল্য ছিল ২২৭ কোটি টাকা। এ ঘটনায় বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয় কয়লা উত্তোলনের কাজও। কয়লা উধাওয়ের ঘটনা ফাঁস হলে দেশজুড়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শুরু হয় কঠোর সমালোচনা। এ ঘটনায় পেট্রোবাংলার পরিচালক (মাইন অপারেশন) কামরুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত চলাকালে খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টোর) খালেদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একই সঙ্গে খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমদকে অপসারণ ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও কোম্পানি সচিব) আবুল কাশেম প্রধানিয়াকে বদলি করা হয়।

মাদকবিরোধী অভিযান : ২০০৮ সাল থেকে মাদকের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স ঘোষণা করলেও বাংলাদেশের ইতিহাসে মাদকবিরোধী সর্ববৃহৎ অভিযানটি হয়েছিল চলতি বছরের মে মাসে। প্রথমে এক সংবাদ সম্মেলনে সারাদেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। ঘোষণা ছাড়াই পৃথকভাবে অভিযান শুরু করে পুলিশ। মাদক নির্মূলে ঘটে একের পর এক ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা। নিহতের সঠিক পরিসংখ্যান না দেয়া হলেও ছোট-বড় প্রায় ২০০ মাদকব্যবসায়ী মারা যায় অভিযানে। গ্রেফতার করা হয় প্রায় ৪০ হাজার জনকে। জনগণের সমর্থন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাদকবিরোধী অভিযানটি পরিচালনা করলেও টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর একরামুল হকের নিহতের ঘটনা সমালোচিত করে অভিযানকে। একরামকে ‘ধরে নিয়ে ঠান্ডা মাথায় হত্যার’ একটি অডিও রেকর্ড গণমাধ্যমে ফাঁস হলে অনেকেই বন্ধুকযুদ্ধ ও র‌্যাবের জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

বিধ্বস্ত ইউএস বাংলার বিমান : ১২ মার্চ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিএস-২১১ ফ্লাইটটি নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দিকে উড়ে যাচ্ছিল। স্থানীয় ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের আগে রানওয়ে ‘টু-জিরো’ না কি ‘জিরো-টু’ নির্ধারণে পাইলট ও এটিসি টাওয়ারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথাবার্তা হয়। তবে একপর্যায়ে কোনো এক পক্ষের বিভ্রান্তিতে মাটিতে আঁচড়ে পড়ে বিধ্বস্ত হয় ইউএস বাংলার ফ্লাইটটি। ফ্লাইটটিতে ৬৭ যাত্রী ও ৪ জন ক্রু মোট ৭১জন ছিলেন যাদের ৫১ জনই নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার পরপরই নেপাল ইউএস-বাংলার পাইলটকে এবং ইউএস-বাংলা নেপালের এটিসি টাওয়ারের কর্মকর্তাদের ওপর দায় চাপানো শুরু করে। তবে দেশটির সিভিল এভিয়েশন তদন্ত করছে। ২০১৯ সালের মার্চের ১১ তারিখ অর্থাৎ ঠিক এক বছরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের কথা রয়েছে।

http://www.dailysangram.com/post/359298