১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, বুধবার, ১০:২৬

আগামী ৬ মাসে ১২ হাজার কোটি টাকার তেল আমদানির পরিকল্পনা

আগামী বছরের ছয় মাসে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণে ২০১৯ সালের প্রথম ছয় মাসের জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রায় সাড়ে ২১ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দর পদ্ধতিতে ১৪ লাখ ৩৬ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল এবং অবশিষ্ট সাত লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সরকারি চুক্তির আওতায় রাষ্ট্রায়ত্ত ‘ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড’-এর জন্য আমদানি করা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে প্রায় ১৪০ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিক্রয় প্রবণতা ও মজুদ বিবেচনায় ২০১৯ সালে দেশে চার ক্যাটাগরির মোট ৬৪ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সম্ভাব্য প্রাপ্তি বাদে মোট জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে ৫৫ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত সময়ে আমদানি করা হবে প্রায় ২৮ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মোট চাহিদার অর্ধেক জি-টু-জি-এর আওতায় (অর্থাৎ, সরকার টু সরকার) এবং অবশিষ্ট অর্ধেক আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দর পদ্ধতিতে আমদানি করা হবে। সে অনুযায়ী, জানুয়ারি-জুন প্রান্তিকে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দর পদ্ধতিতে চার ক্যাটাগরির মোট ১৪ লাখ ৩৬ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৯৮ কোটি ৪৩ লাখ ডলার।

চার ক্যাটাগরির জ্বালানি তেলের মধ্যে গ্যাস অয়েলের পরিমাণ ১১ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন (৮৮ লাখ ব্যারেল, ব্যারেল প্রতি প্রিমিয়াম ২.৮৬ ডলার), জেট এ-১ ফুয়েল এক লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন (আট লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল, ব্যারেল প্রতি প্রিমিয়াম ৩.৬৬ ডলার), এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল (প্রতি মেট্রিক টনের প্রিমিয়াম ২২.৩০ ডলার) ও ১৬ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন মোগ্যাস (এক লাখ ২৯ হাজার ব্যারেল, ব্যারেল প্রতি প্রিমিয়াম ৪.২১ ডলার) আমদানি করা হবে।
অন্য দিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ‘ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড’-এর জন্য সাত লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে। এর মধ্যে ‘সৌদি আরামকো’ থেকে চার লাখ মেট্রিক টন (২৯ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল) ‘এরাবিয়ান লাইট ক্রুড’ (এএলসি) এবং ‘আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি’ থেকে তিন লাখ মেট্রিক টন (২২ লাখ ৯৫ হাজার ব্যারেল) ‘মারবান’ ক্রয় করা হবে। প্রতি ব্যারেল ৭৮ দশমিক ৩০ ডলার হিসাবে এএলসি আমদানিতে ২৩ কোটি দুই লাখ ডলার এবং প্রতি ব্যারেল ৮২ দশমিক ৬০ ডলার হিসাবে মারবান আমদানিতে ১৮ কোটি ৯৫ লাখ ডলার ব্যয় হবে।
এ বিষয়ে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, তেলের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর জন্য প্রতি ছয় মাস পর পর জ্বালানি তেল আমদানির হিসাব প্রাক্কলন করা হয়। এ জন্য আগামী বছরের ছয় মাসের জন্য ২১ লাখ মেট্রিক টন তেল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর পরবর্তী ছয় মাসের জন্য তেলের চাহিদা পরে নির্ধারণ করা হবে।


http://www.dailynayadiganta.com/last-page/373675