১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, শনিবার, ১০:৩০

সারা দেশে ধরপাকড় অব্যাহত

সারা দেশে ধরপাকড় অব্যাহত রয়েছে। গতকালও বিভিন্ন জেলায় দুই শতাধিক বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জে ১৫১, রাজশাহীতে ৭০, হবিগঞ্জে ৯ ও সিরাজগঞ্জে ২ জন রয়েছে। বিস্তারিত আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্টে-

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, নারায়ণগঞ্জের তিনটি এলকায় শুক্রবার সকাল ও দুপুরে পৃথক অভিযান চালিয়ে ৫ নারীসহ ১৫১ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতদের পৃষ্ঠা ৯ কলাম ১
মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর রোকন ইয়াছিন মাস্টারসহ ছাত্রশিবিরের বেশ কয়েকজন সাবেক নেতা রয়েছেন। পুলিশের দাবি আটককৃতরা নাশকতার পরিকল্পনা করতে ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জড়ো হয়েছিল এবং তাদের কাছ থেকে ১৮টি ককটেলসহ বেশ কিছু জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে আটককৃতদের মধ্যে ফতুল্লার পাগলা হাই স্কুল থেকে জামায়াতের রোকন ইয়াছিন মাস্টারসহ ৪৯ জন ও নগরের মাসদাইর ইসলামীয়া আদর্শ মাদ্রাসা থেকে ৫ নারীসহ ৫৪ জনকে আটক করা হয়। একই সময় সদর থানার আমলাপাড়া এলাকায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩৯ জনকে আটক করে সদর মডেল থানা পুলিশ।
আটককৃতদের মধ্যে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক আশুতোষ ভট্টাচার্য্যসহ আরও ৭ জন মহিলা শিক্ষকও রয়েছেন। এরমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ২৬ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বন্দরের বন্দর গালর্স স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৩২ জনকে আটক বন্দর থানা পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ৫ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়। অন্যদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে ৮ জনকে আটক করা হয়েছে।

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে জানান, নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় জেলা (পূর্ব) জামায়াতের আমীর মকবুল হোসেনকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া জেলা ও নগর পুলিশের বিশেষ অভিযানে মোট ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরমধ্যে জেলা পুলিশের ৩২ জন ও মহানগর পুলিশ ৩৮ জনকে গ্রেপ্তার করে। রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র আব্দুর রাজ্জাক খান জানান, শুক্রবার ভোরে পুঠিয়া থানার পুলিশ উপজেলার জামিরা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে জামায়াত নেতা মকবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। নির্বাচন ঘিরে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত বিভিন্ন থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে আরও ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

এদিকে, মহানগর পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৩৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার ইফতেখায়ের আলম। বিভিন্ন মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে জানান, হবিগঞ্জ জেলা যুবদল নেতা জহিরুল ইসলাম সেলিম ও জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জিকে ঝলকসহ হবিগঞ্জ, লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জের বিএনপি, যুবদল, কৃষকদল ও ছাত্রদলের ৯ নেতাকর্মীকে আটক করেছে হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে পৃথক অভিযানে তাদের আটক করা হয়। জানা যায়, রাত প্রায় ৮ টায় শহরের ফায়ার সার্ভিস রোড এলাকা থেকে আটক করা হয় যুবদল নেতা জহিরুল ইসলাম সেলিমকে। সেলিম সদর উপজেলার গোপায়া ইউনিয়নের দীঘলবাগ গ্রামের মো. ইদু মিয়ার পুত্র।

আটককৃত অন্যান্যরা হলেন, শহরের মোহনপুর এলাকার আতিকুর রহমান সাজন, জালালাবাদ এলাকার মো. মাসুম মিয়া, লাখাই উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ, লাখাই উপজেলা যুবদলের সভাপতি শাহ আলম গোলাপ, লাখাই উপজেলা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফ, বামৈ ইউপি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আউয়াল ভূঁইয়া ও শায়েস্তাগঞ্জ পৌর যুবদল নেতা শাহজাহান মিয়া। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও লাখাই থানা পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বরগুনা প্রতিনিধি জানান, বরগুনা জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মো. তালিমুল ইসলাম পলাশকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া গ্রামের নিজস্ব বাসভবনের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা যায়, তালিমুল ইসলাম পলাশের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। মামলায় পলাশ নিয়মিত আদালতে হাজিরা না দেয়ায় কার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। গ্রেপ্তার অভিযানে নেতৃত্ব দেন বরগুনা সদর থানা পুলিশের এসআই মো. আসাদ। তিনি জানান, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি বিধায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে উপজেলা বিএনপি’র ২ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার শ্রীফলতলা এলাকায় বিএনপি প্রার্থী ড. এমএ মুহিতের বাড়ির পাশ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এরা হলেন, উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন হীরু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল আরিফ।

 

 

http://mzamin.com/article.php?mzamin=149826