১১ ডিসেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার, ১১:৩৪

প্রতীক বরাদ্দ ॥ প্রচারণা শুরু

প্রতীক বরাদ্দের দিনেও হামলা॥ অফিস ভাংচুর-গ্রেফতার
আতঙ্ক নিয়েই প্রচারণায় নামছে
ধানের শীষের প্রার্থী-নেতাকর্মীরা

বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় দেশগুলো। আগামী ৩০ ডিসেম্বর আসন্ন জাতীয় একাদশ জাতীয় নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর প্রাক্কালে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো এবং নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ড এই আহ্বান জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, নাগরিক অধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও দল করার স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য সব অংশগ্রহণকারীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। সকল রাজনৈতিক দলকে সহিংসতা পরিহার এবং তাদের রাজনৈতিক দায়িত্ব পালনের জন্য আহ্বান জানিয়েছে দেশগুলো। এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যেন আইন মেনে চলে সেই বিষয়েও আহ্বান জানানো হয়েছে।
একইসাথে দেশের প্রধান বিরোধী জোট ২৩ দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টও বলেছে, তারা শান্তিতে নির্বাচন করতে চান। জনগণ যাকে ভোট দেবে সেই সরকার গঠন করবে। কিন্তু কার্যত সেই দৃশ্য কোথাও দেখা যাচ্ছেনা। অনেকটা আতংক আর ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যেই আজ মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করবে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীরা। গতকাল সোমবার দেশের অনেক স্থানে ধানের শীষ প্রার্থীদের অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকরা। এছাড়া বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, গুম ও হামলা-মামলা চলছেই। গতকালও শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ অভিযানে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাসা বাড়িতে তল্লাশীর নামে ভাংচুর চালিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের বিভিন্নস্থানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলা-গ্রেফতারকে সাথী করেই প্রচারণা চালাতে হবে। এর ফলে যেকোন সময় পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে বলেও তারা মনে করেন।

সূত্র মতে, আজ মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে জমজমাট নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকেই ২৮ ডিসেম্বর মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত প্রচারণা চালাতে পারবেন। সে হিসেবে এবার প্রার্থীরা ১৯ দিন প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন। কয়েকজন সংসদ সদস্য প্রার্থীর সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে জানা গেছে, প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর তারা প্রতীক ছাপাতে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা সরকারের ১০ বছরের উন্নয়ন সম্বলিত লিফলেট ছাপাতে দিয়েছেন। বিএনপি প্রার্থীরা বিএনপি সরকারের শাসনামল, জিয়াউর রহমানের শাসনামল ও তাদের সময় উন্নয়ন সম্বলিত লিফলেট তৈরি করছেন। এতদিন প্রার্থীরা ঘরোয়া মিটিং করে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন। আজ থেকেই প্রার্থীরা পুরো প্রচার প্রচারণায় নামছেন। এখন থেকে প্রার্থীরা মিছিল, মিটিং ও সমাবেশ সব করতে পারবেন।

সাবেক আইনমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু জানান, প্রতীক বরাদ্দ হয়ে গেছে। এখন আর প্রচার প্রচারণা চালাতে কোনো বাধা নেই। এখন সমাবেশ, মিছিল, সমর্থকদের নিয়ে দল ধরে নিজ নিজ এলাকায় ভোট প্রার্থনা শুরু করবো। আজ থেকে ২৮ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত সমর্থকরা আমার নির্বাচনী এলাকায় দিন-রাত ক্যাম্পেইন করবে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রচারের সময় আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘন ঠেকাতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। পাশাপাশি ভোটের মাঠে রয়েছে ১২২টি নির্বাচনী তদন্ত কমিটি (ইলেক্ট্রোরাল ইনকোয়ারি কমিটি)। এসব কমিটির কাছে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা নির্বাচনী অপরাধ ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ জানাতে পারবেন।

এদিকে এবার ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণায় নেতৃত্ব দেবেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে তিনি এ দায়িত্ব পালন করবেন। বরাবরের মতো এবারও সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে ভোটের প্রচার শুরু করবেন ধানের শীষ মার্কার প্রার্থীরা। প্রচারণা শুরু করার উদ্দেশ্যে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের শীর্ষ নেতাদের মঙ্গলবার অথবা বুধবার সিলেটে যাওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে হযরত শাহজালাল (রহ.), হযরত শাহপরাণ (রহ.) ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর মাজার জিয়ারত শেষে আনুষ্ঠানিক প্রচারে অংশ নেবেন তারা।

দুই মামলায় দণ্ড নিয়ে কারাবন্দি বিএনপির শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়া। দলের আরেক শীর্ষ নেতা তারেক রহমানও একাধিক মামলায় দণ্ডিত হয়ে লন্ডনে অবস্থান করছেন। তাদের অনুপস্থিতিতেই প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এবার ভোট করতে হচ্ছে রাজপথের বিরোধী দল বিএনপিকে। সঙ্গী দুটি বৃহৎ রাজনৈতিক মোর্চা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২৩-দলীয় জোট। দুই জোটের সব দল এবার ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছে। ধানের শীষের নির্বাচনী প্রচারে খালেদা জিয়ার উপস্থিতি বরাবরই আলাদা একটি মাত্রা যোগ করে। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। তিনি কারান্তরীন। ১৯৯১ সাল থেকে বিএনপির প্রতিটি সংসদ নির্বাচনের কলাকৌশল নির্ধারণ ও প্রচারে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। গত দুটি নির্বাচনে তাকে সহায়তা করেছেন তার বড় ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনিও একাধিক মামলায় দ-িত হয়ে বিদেশে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। এমতাস্থায় খালেদা জিয়াকে ছাড়াই দলীয় মনোনয়ন ঠিক করেছে বিএনপি।

খালেদা জিয়ার অবর্তমানে এবার ধানের শীষের প্রচারে নেতৃত্ব দেবেন কে-এটি নিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরে রাজনীতির অলিগলিতে ও চায়ের কাপে ঝড় তুলছে। এ নিয়ে বিএনপি নেতাদেরও কপালে ভাঁজ। কিন্তু এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। বিএনপিকে একটি ভীরু রাজনৈতিক পরিবেশের মধ্য দিয়ে এগোতে হচ্ছে। দুই বৃহৎ রাজনৈতিক জোট এবার বিএনপির নির্বাচনী সঙ্গী। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে রয়েছে ৪টি দল। আর ২০-দলীয় জোটে ২৩ দল। তাদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়েও অনেক মন কষাকষি হয়েছে। তারপরও খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে তার বিকল্প হিসেবে ড. কামাল হোসেনের মতো একজন জাতীয় নেতাকে নির্বাচনী প্রচারের সামনে রাখতে চাইছে দুই জোট।
নির্বাচনের বিষয়ে ২৩ দলীয় জোটের মুখপাত্র লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বীরবিক্রম বলেন, সরকার জনগণকে রক্তপাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা চাই শান্তি কিন্তু সরকার চায় অশান্তি। পধানমন্ত্রীর প্রতি তিনি বলেন, এ দেশের প্রতি দায়িত্ব রয়েছে আপনার। দেশকে ধবংসের দিকে ঠেলে দেবেন না। সুষ্ঠু, অবাধ এবং রক্তপাতহীন নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিন। কেউ চিরদিন বেঁচে থাকবে না, আমাদের সবাইকে একসময় বিদায় নিতে হবে। সেই বিদায় যেন সম্মানজনক হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তারা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট নেতাদের ফোন রিসিভ করেন না অভিযোগ করে তিনি বলেন, প্রশাসন আমাদের কাছে কমিটমেন্ট করেছিল নির্বাচনকালে নিরপেক্ষ থাকবে। কিন্তু এরপর থেকে আমাদের টেলিফোনও রিসিভ করছে না। পুলিশ বাহিনীকে উদ্দেশ করে অলি বলেন, আপনারা আমাদের শত্রু না। সরকারেরও বন্ধু না। আপনারা জনগণের বন্ধু। দেশের মানুষের বন্ধু। সে হিসেবে সবাই যাতে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করুন। আমরা চাচ্ছি সুষ্ঠু নির্বাচন, আমরা চাই শান্তি। আমরা বহুবার প্রেস কনফারেন্স করে বলেছি, আমরা কোনো অশান্তি চাই না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণার এই পর্বে ‘গায়েবী মামলা’য় জর্জরিত বিএনপির মূল চ্যালেঞ্জ হবে রাজপথে টিকে থাকা। তারা বলছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশে দুই লাখ ৪০ হাজার জনের একটি তালিকা হাতে নিয়ে মাঠে নেমেছে পুলিশ। নির্বাচনের আগে এদের আটক করে একটি সাজানো নির্বাচন করাই মূল লক্ষ্য। প্রতিটি কেন্দ্র ধরে ধরে সম্ভব্য হামলারীর নাম ঠিকানা, কোন দলের সমর্থক ও কার জন্য ভোট কেন্দ্রে হামলা করতে পারে, তা উল্লেখ রয়েছে এই তালিকায়। গড়ে দেশের প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের বিপরীতে অন্তত ৬ জন করে নাম রয়েছে। জানা গেছে, আগামী ২৭ ডিসেম্বরের মধ্যে চিরুনী অভিযানের মাধ্যমে এসব তালিকার সবাইকে গ্রেফতারের টার্গেট নেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, মামলার ভবিষ্যতের না তাকিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নামতে শুরু করেছেন বিএনপির প্রার্থীরা। গতকাল দেশের বিভিন্ন আসনে ধানের শীষের প্রার্থীরা প্রচারণা চালিয়েছেন। আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠে নামবেন প্রায় সবাই। নিজ নির্বাচনী এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ে আজ প্রচার শুরু করবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বগুড়াতেও যাবেন তিনি। তিনি বলেছেন, এই নির্বাচনে কোনো সমতল ভুমি নেই। আমাদের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ভৌতিক মামলায় এখনো গ্রেফতার করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করা হচ্ছে। জামিনের জন্য তারা বার বার পিছিয়ে পিছিয়ে দিয়ে এমন একটা অবস্থা তৈরি করেছে যে, আমাদের সব শীর্ষস্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতারা কারাগারে আটক রয়েছেন। সরকার ও নির্বাচন কমিশননের প্রতি আহ্বান থাকবে, সবাই যাতে প্রচারণা চালাতে পারে, কাজ করতে পারে তার পরিবেশ তৈরি করুন।
সূত্র মতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা যে বিরোধী জোটের জন্য মোটেও সুখকর হবেনা সেটি আগে থেকেই বুঝা যাচ্ছিল। প্রতীক বরাদ্দের পর সেটি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গতকাল চাঁদপুর জেলা শাখার সেক্রেটারী মাওলানা বিল্লাল হোসেন মিয়াজীকে পুলিশ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে। এছাড়া ৯ ডিসেম্বর রাতে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরের ২টি ছাপাখানা থেকে ধানের শীষ প্রতীকের ১৮ হাজার পোস্টার ও ৩ হাজার হ্যান্ড বিল ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা লুট করে নিয়ে যায় এবং ছাপাখানার কর্মচারীকে বেদম প্রহার করে। সংগঠনটি বলছে, উপরে উল্লেখিত ঘটনা দু’টির দ্বারা আবারও প্রমাণিত হলো যে, দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ এখনো সৃষ্টি হয়নি। সরকারি দলের সন্ত্রাসী কর্মীরা বিরোধীদলগুলোকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য করার হীন উদ্দেশ্যেই প্রশাসনের সহযোগিতা ফ্যাসিবাদী তান্ডব শুরু করেছে।

জানা গেছে, প্রতীক বরাদ্দের দিন দেশের বেশ কয়েকটি আসনে ধানের শীষ প্রার্থীদের উপর হামলা হয়েছে। জামালপুরের মেলান্দহে বিএনপির নেতাকর্মীদের হামলা চালায় ক্ষমতাসীন আ’লীগ। এই ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। জানা যায়, মেলান্দহ বিএনপির সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল নেতাকর্মীদের নিয়ে হযরত শাহ্কামাল (রহ) এর মাজার শরীফ জিয়ারতে গেলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, আমার প্রার্থীতা চূড়ান্ত হওয়ার পর হযরত শাহ্কামাল (রহ) মাজার শরীফ জিয়ারত করতে যাই। এ সময় পেছন থেকে আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ১০ জনকে আহত করে।

ঝিনাইদহ-২ আসনের ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী আব্দুল মজিদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও ১০ নেতাকর্মীদের পিটিয়ে আহত করা হয়। আহতদের মধ্যে তপু. মোহন ও হিমেল নামে ৩ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী আব্দুল মজিদ জানান, দলীয় প্রার্থিতার অনুমতিপত্র জমা দিয়ে দীর্ঘদিন পর রাতে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দলীয় নেতাকর্মীরা আসেন। এসময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা জয়বাংলা ও নৌকা মার্কার স্লোগান দিয়ে তার কার্যালয়ে হামলা চালায়। হামলায় যুবদল ও ছাত্রদলের প্রায় ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়। এদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা গুরুতর। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক শেখ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এছাড়া সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলা বিএনপি অফিসে ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ হামলার জন্য বিএনপি আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছে। কামারখন্দ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেজাতে রাব্বী উথান অভিযোগ করেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী জামতৈল রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থিত বিএনপি কার্যালয়ে হামলা চালায়। এ সময় তারা অফিসের চেয়ার-টেবিল ভাংচুর করে এবং ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে দেয়। ঘটনার সময় কার্যালয়ের ভিতরে দলের কেউ ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, এ সময় পাশের চায়ের দোকানে বসে থাকা জামতৈল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল লতিফ মুহুরীকে মারপিট করে গুরুতর আহত করে হামলাকারীরা।

 

http://www.dailysangram.com/post/356788