৪ ডিসেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার, ১০:২২

সড়কে মৃত্যুর মিছিল একদিনে নিহত ১৪

প্রতিদিনই সড়ক-মহাসড়কে ঝরছে তাজা প্রাণ। বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। গতকালও দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ
হারিয়েছেন অন্তত ১৪ জন। এর মধ্যে গাজীপুরে ৫, ফেনীর দাগনভূঞায় ৪, নোয়াখালীর সেনবাগে ২ ও পটুয়াখালীর গলাচিপায় ২ জন, এছাড়া রাজধানীর বাড্ডায় এক মোটরসাইকেল আরোহী রয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক মানুষ। বিস্তারিত আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্টে-

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর থেকে জানান,গাজীপুরে বাস-লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত এবং ৭ জন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থানার লক্ষীপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সর্জেন্ট মিজানুর রহমান (৫৫), সিরাজগঞ্জের তারাশ থানার গুলটাবাজার এলাকার মো. নাজিম উদ্দিন (৬০) ও একই এলাকার আব্দুস সামাদ (৬৫), রাতুল (১৮) ও অজ্ঞাত (৩৫)। দুর্ঘটনার ভেঙেচুড়ে যাওয়া লেগুনা ও বাসটি জব্দ করেছে পুলিশ।
হতাহতরা সবাই লেগুনার যাত্রী। আহত অবস্থায় দু’জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার এসআই মো. শহীদুল ইসলাম জানান, গতকাল সকালে গাজীপুর সদরের হালডোবা এলাকায় ঢাকা-কাপাসিয়া সড়কে রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে সদর উপজেলার বাংলাবাজারগামী পোশাক কারখানার শ্রমিকবাহী বাস ও বিপরীতমুখী লেগুনার সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন এবং স্থানীয় একটি হাসপাতাল ও শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ হাসপাতালে নেয়ার পর তিনজন মারা যান। এ দুর্ঘটনায় আরো অন্তত ছয়জন আহত হলে তাদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে ছয়জনকে পাঠানো হয় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

ফেনী প্রতিনিধি জানান, ফেনীর দাগনভূঞার দুধমুখা এলাকায় যাত্রীবাহী বাস ও সিএনজি অটোরিকশা সংঘর্ষে দুই শিশু ও এক নারীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো দুইজন। গতকাল দুপুরে ফেনী-বসুরহাট সড়কের দাগনভূঞার দুধমুখা নামক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দাগনভূঞা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালেহ আহমেদ পাঠান জানান, ফেনী থেকে বসুরহাটগামী ‘বসুরহাট এক্সপ্রেস’ নামের একটি যাত্রীবাহী বাস দাগনভূঞার দুধমুখা এলাকায় পৌঁছলে বিপরীতদিক থেকে আসা একটি সিএনজি অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় চালকসহ অটোরিকশার ছয় যাত্রী গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা আহতদের মধ্যে এক নারীকে উদ্ধার করে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। অপর আহত দুই শিশুসহ পাঁচজনকে উদ্ধার করে ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে নিলে অটোরিকশাচালক ইসমাঈল ও এক শিশুকে মৃত ঘোষণা করে কর্তব্যরত চিকিৎসক।

আহতদের মধ্যে অপর শিশুসহ দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতপালে নেয়ার পথে শিশুটি মারা যায়। গুরুতর আহত অপর একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহত চালক ও এক শিশুর লাশ ফেনী জেলা সদর হাসপালের মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে অটোরিকশাচালক ইসমাইলের বাড়ি নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলা। অপর নিহত ও আহতদের নাম পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ। দুর্ঘটনাকবলিত সিএনজি অটোরিকশা উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ বাসটি আটক করলেও চালক ও সহকারী পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, গলাচিপায় বালি পরিবহনের টমটম উল্টে মো. কাওসার হোসেন (৩৮), মহাসিন (৩৫) নামে দুই শ্রমিক নিহত এবং শাহিন মিয়া (২৫), মো. জলিল হাওলাদার (২৫) নামে দুই শ্রমিক আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল দুপুরে উপজেলা রতনদী তালতলী ইউনিয়নের বড় বাঁধ এলাকায়। গুরুতর আহত দুইজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, গলাচিপা লঞ্চঘাট থেকে কাঁটাখালী মানিক চাঁদ মাদরাসায় বালি দিয়ে ফেরার পথে বড় বাঁধ এলাকায় টমটম উল্টে ঘটনাস্থলে দুই শ্রমিক নিহত ও দুই শ্রমিক আহত হয়।

গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আখতার মোর্শেদ জানান, ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনাকবলিত টমটম জব্দ করা হয়েছে। নিহত শ্রমিকদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সেনবাগ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় চট্রগ্রামগামী শাহী বাসের চাপায় আলেয়া বেগম (২৭) ও শিশু বাচ্চা নামে ২ সিএনজির যাত্রী নিহত হয়েছেন। এসময় আরোও ৩ যাত্রী আহত হয়েছে। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার তিনপুকুরিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। নিহত আলেয়া বেগম একই উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের আলা উদ্দিনের স্ত্রী। আহতদের মধ্যে আলা উদ্দিন ও তাদের কন্যা শিশু (৪) রয়েছে। বাকি আহতদের পরিচয় নাম পরিচয় জানা যায়নি।

 

http://mzamin.com/article.php?mzamin=148011