২৪ নভেম্বর ২০১৮, শনিবার, ১১:৫০

তফসিলের পর আগের মতোই চলছে প্রশাসন

জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও বদলায়নি প্রশাসনযন্ত্র। সবকিছু চলছে আগের মতোই। প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনে সরকারের নেক নজরে থাকা কর্মকর্তারা অধস্তন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত বসছেন। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ফাইলে স্বাক্ষর করছেন। মন্ত্রিসভা বৈঠক, প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির মতো নীতিনির্ধারণী বৈঠক আগের মতোই অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৭০ শতাংশ মন্ত্রী- প্রতিমন্ত্রী সচিবালয়ে অফিস করছেন। তফসিলের পর রুটিন ওয়ার্কের বাইরে আগের মতোই কাজ করছেন তারা।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন।
ঢাকার একটি আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করছেন একজন। ওই মন্ত্রী তফসিল ঘোষণার পর প্রায় প্রতিদিনই তার নির্বাচনী এলাকার সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী এবং নার্সদের সঙ্গে এক মতবিনিময় করেন ওই মন্ত্রী। ওই মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী সমিতির সভাপতি আবু সাঈদ। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কমিশনারসহ আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ময়মনসিংহে বাড়ি টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করছেন একজন। ওই মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তফসিল ঘোষণার পর মন্ত্রণালয়টি বদলায়নি। টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীদের পদত্যাগ নিয়ে ঘটনার সময় দুইদিন মন্ত্রীর স্টাফরা চুপচাপ ছিলেন। এখন আগের মতোই নানা তদবিরে ব্যস্ত তারা।

মূলত দীর্ঘদিন ধরে মন্ত্রীর অসুস্থতার সুযোগ নিচ্ছে তার ব্যক্তিগত স্টাফরা। এ মন্ত্রণালয়ে গরিবদের বরাদ্দের জন্য বিশেষ ফান্ড রয়েছে। ওই ফান্ড এরই মধ্যে খালি হয়ে গেছে। একটি জেলার বাসিন্দাদের নামে ৮০ শতাংশ টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। ওই মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, গরিবদের ফান্ডের অর্থ গরিবদের কাছে যায়নি। অনেকে নামে-বেনামে এখনো ফান্ডের অর্থ তুলে নিচ্ছেন। এদিকে ৮ই নভেম্বর তফসিল ঘোষণার দিনে সচিব পদে পদোন্নতি এবং ভারপ্রাপ্ত সচিব পদে বেশ কয়েক জন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ওই দিন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মো. ফয়জুল্লাহকে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জ্যোতির্ময় দত্তকে ভারপ্রাপ্ত সচিব পদমর্যাদায় বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) কাজী রওশন আক্তারকে বিসিএস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর এবং জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. মিজানুর রহমানকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব নিয়োগ করা হয়। এ ছাড়া বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব মো. মফিজুল ইসলাম বাণিজ্য সচিব পদে নিয়োগ দেয়া হয়। এ ছাড়া স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব, অর্থ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব এবং পরিকল্পনা কমিশনের এক সদস্যকে (ভারপ্রাপ্ত সচিব মর্যাদায়) পদোন্নতি দেয়া হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রশাসনের সব কাজকর্ম আগের মতোই চলছে। তবে সরকারবিরোধী বলে পরিচিত কর্মকর্তাদের নজরে রাখা হচ্ছে।

 

http://mzamin.com/article.php?mzamin=146477