২০ নভেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার, ১১:৩৩

ইভিএম বিতর্কের সুরাহা হচ্ছে না

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ নিয়ে এখনো সুস্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। জাতীয় যুক্তফ্রন্টসহ সব বিরোধী দলের তীব্র আপত্তির মুখে কিভাবে এবং কতটা আসনে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনো সদস্যই এ ব্যাপারে কথা বলতে চাচ্ছেন না। প্রাথমিকভাবে নতুন এই পদ্ধতি দেশের মোট সংসদীয় আসনের এক-তৃতীয়াংশে ব্যবহারের কথা বলা হয়। দেশের সব সিটি করপোরেশনভুক্ত সব আসনের অন্তত একটি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা করা হয়। এই হিসাবে ৮০ থেকে ১০০টি আসনে ইভিএম ব্যবহারের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা হয়। এ জন্য এই প্রকল্পে বরাদ্দকৃত তিন হাজার ৮০০ কোটি টাকার মধ্যে এক হাজার ৯৯০ কোটি টাকা ছাড় করার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু এই বিপুল অর্থ ব্যয়ের পরও ব্যাপক সমালোচনার মুখে এই পদ্ধতি আদৌ ব্যবহার করা যাবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
ইভিএম ব্যবহারে ভোটিং কার্যক্রম সহজ হলেও রাজনৈতিক দল, দেশের সাধারণ মানুষ ও ভোটারদের ধারণা পরিষ্কার না করে নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে এসে তড়িঘড়ি করে এটার প্রয়োগ ঝামেলাই বাড়াবে। নির্বাচন কমিশন নতুন করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। তাদের মতে, বিশেষজ্ঞ প্যানেল তৈরি করে দীর্ঘ সময় নিয়ে আরো আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে প্রদর্শন করা দরকার ছিল, কিন্তু সেটা ইসি করেনি। তাদের মতামতও নেয়া হয়নি। আর এই ইভিএম ব্যবহারকে কেন্দ্র করে আসন্ন নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের বিতর্কের সৃষ্টি হয় তাহলে এর দায়ভার সরকার নেবে না; ইসিকেই নিতে হবে। তাই প্রযুক্তির ব্যবহার সময় নিয়ে করা উচিত বলে তারা মনে করছেন।

ইসিতে নিবন্ধিত ৪০টি দলের মধ্যে সাতটি ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক। এর বাইরে জোটের সদস্য অন্য পাঁচটি দলের নিবন্ধন নেই। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম চালু করার পক্ষে মত দিয়েছে আওয়ামী লীগসহ সাতটি দল। বিপক্ষে মত ১১টি দলের। বাকি ২২টি দলের এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো মত পাওয়া যায়নি। এমনকি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সব দলও ইভিএম প্রশ্নে একমত হয়নি। সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে বেশির ভাগ দলই কোনো অভিমত রাখেনি। বিদ্যমান সীমানা বহাল রাখতে বলেছে আওয়ামী লীগসহ সাতটি দল। ভোটার সংখ্যার ভিত্তিতে সীমানা পরিবর্তন বা ২০০৮ সালের আগের সীমানা পুনর্বহাল চেয়েছে বিএনপিসহ ছয়টি দল। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে নিবন্ধিত দল রয়েছে ৯টি। এ জোটের শরিক ইসলামী ঐক্যজোট, এনপিপিসহ আরো কয়েকটি দল ইসিতে নিবন্ধিত হলেও তাদের মূল অংশ জোট পরিত্যাগ করেছে এবং তাদেরকেই ইসির সংলাপে ডাকা হয়েছে।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব: সাখাওয়াত হোসেনের মতে, ইভিএম ব্যবহারে অযৌক্তিকতা আমি দেখছি না। এতে ইসির ভোটিং কাজে অনেক সুবিধা হবে। কারচুপি কমে যাবে। বুথ দখল হবে না। আমাদেরকে এক সময় প্রযুক্তির দিকে যেতেই হবে। তবে নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে এসে তড়িঘড়ি করে এটা করা হলে বিতর্ক ও ঝামেলাই বাড়বে। এখন বিতর্ক যত কম করা যায় ইসির জন্য তত ভালো।
তিনি বলেন, ইভিএমের ব্যবহার এখন না করে পরে উপনির্বাচনে বা কিছু বুথে করা যেত। তাড়াহুড়া করে এখনই করতে হবে আমি এটার পক্ষে নই।
সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রযুক্তি এক সময় না এক সময়ে আসতে হবে। তবে আমি এবারের ইভিএম দেখেছি, এটাকে যারা হ্যাক করা যাবে বলছেন তারা ঠিক বলছেন না। কারণ এটার সাথে কোনো নেট কানেকশন নেই। যেটায় নেট কানেকশন দিয়ে করা হয় সেটা হলো ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভোট দেয়া। তিনি বলেন, এটাতে কারচুপি করতে হলে অনেক কষ্ট করতে হবে; যা সাধারণ ভোটিংয়ের মতো অতটা সহজ না। ভারতে ইভিএম ব্যবহারে ভোট কারচুপি অনেক কমেছে। সেখানে কয়েকটা ইভিএম ভেঙেছেও। আমাদের এখানে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন এটা ই-ভোটিং।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এটা ভালো। তবে আমি মনে করি এখন ইভিএম ব্যবহার করতে গেলে ঝামেলা বাড়বে। ইসির উচিত নির্বাচনটা সুষ্ঠুভাবে করা। এই ইভিএমের ব্যবহারকে কেন্দ্র করে আসন্ন নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের বিতর্কের সৃষ্টি হয় তাহলে দায়ভার সরকার নেবে না। ইসিকেই নিতে হবে।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. বদিউল আলম মজুমদারের মতে, ভোট গ্রহণের এই মেশিনটা (ইভিএম) নিয়ে বিতর্ক রয়েছে এবং চলছে। নির্বাচনে এটা ব্যবহারের আগে নির্বাচন কমিশনের উচিত ছিল তাদের স্টেকহোল্ডার সব রাজনৈতিক দলের মতামত নেয়া। রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে এটাকে প্রদর্শন করা হয়নি। তাদের মতামতও নেয়া হয়নি। তিনি বলেন, ইসির উচিত ছিল একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল করে তাদের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে ইভিএম তুলে ধরা। ওই প্যানেল তাদের মূল্যায়নটা প্রকাশ করবে। কিন্তু ইসি সেটা না করে এটি ব্যবহারের চিন্তা করছে।
ইভিএমের ব্যবহার একটি ভালো উদ্যোগ উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্বাচন ঘনিয়ে এসেছে। এই মুহূর্তে ইভিএম কেনা এবং এটার ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। ক্রয় প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএমের প্রয়োগ করতে হলে ইসি কর্মকর্তাদের যথেষ্ট প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। পাশাপাশি ভোটসংশ্লিষ্টদেরও প্রশিক্ষণ দিতে হবে। অন্য দিকে, ভোটারদেরকে এটা সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিতে হবে। সেটাতেও যথেষ্ট ঘাটতি আছে। এই উদ্যোগে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হতে পারে।
এবারের নির্বাচনে নানা বিষয়ে সৃষ্ট বিতর্কের শীর্ষে রয়েছে ইভিএম। বহুল আলোচিত এই নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে সরকার পক্ষের অনমনীয় অবস্থান এবং বিরোধী দলগুলো তীব্র বিরোধিতার কারণে ইভিএম ব্যবহারের ইস্যুটি বেশ সংবেদনশীল হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচন কমিশনের একটি সূত্র বলছে, ইভিএম ব্যবহারে সরকারিভাবে যে প্রস্তুতি ও ব্যবস্থা করা হবেÑ সেটাকে সামনে রেখে এই ইস্যুতে সিদ্ধান্ত হতে পারে। এর মধ্যে ইভিএম যেসব কেন্দ্রে ব্যবহার করা হবে সেখানে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার কথা বলা হয়েছে। এই প্রকল্পের দায়িত্বও দেয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার শাহাদাৎ হোসেনকে। দেশে ইভিএমের ব্যবহার শুরু হয় ২০০৭ সালে ঢাকা অফিসার্স ক্লাবের কার্যকরী সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে। এরপর বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অল্পপরিসরে ইভিএম ব্যবহার করা হলেও এখনো জাতীয় নির্বাচনে ব্যবহার করা হয়নি। ২০০৭ সালে বুয়েটের আইআইসিটি বিভাগের তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান ড. এস এম লুৎফর কবির ইভিএম তৈরির প্রকল্প তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে জমা দেন। পাইল্যাব বাংলাদেশ নামে একটি ইভিএম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান প্রকল্প প্রস্তাবনার সাথে জড়িত ছিল। তারা সরকারের কাছে আবেদন করেন যেন এই পদ্ধতিতে দেশের সব নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হয়। কিন্তু তখন ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি। এরপর নির্বাচন কমিশনার ড. এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরীক্ষামূলকভাবে ১৪টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে ইভিএমগুলো নেয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ইভিএমগুলো রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ব্যবহার করতে গেলে বিপত্তি বাঁধে। একটি মেশিনে হঠাৎ ত্রুটি দেখা গেলে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এই ত্রুটির সমাধান বের করতে পারেনি। ফলে প্রায় সাড়ে ১২ শ’ ইভিএম বাতিল ঘোষণা করে।

বর্তমান কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন নতুন করে ভোটগ্রহণ পদ্ধতিটি চালু করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে। তারা বিদেশ থেকে ইভিএম ক্রয় করে এই মেশিনগুলো পূর্বের চেয়ে অধিক কার্যকরী বলে দাবি করে। ফলে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে রংপুর এবং চলতি ২০১৮ সালের মে মাসে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুইটি করে ভোটকেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এই সফলতায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এক তৃতীয়াংশ আসনে ইভিএম চালু করার ঘোষণা দেয় নির্বাচন কমিশন।
কাগজের ব্যালট ব্যবহার কমিয়ে আনার যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচন কমিশন দেড় লাখ ইভিএম ক্রয় করার প্রকল্প গ্রহণ করে। জুলাই ২০১৮ থেকে জুন ২০২৩ সালের মধ্যে চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়। প্রকল্পটিতে ইভিএম কেনায় তিন হাজার ৫১৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা, প্রচারে পাঁচ কোটি টাকা, পরিবহনে সাত কোটি টাকা, মোটরযানে তিন দশমিক তিন কোটি টাকা, কম্পিউটার সফটওয়্যারে ৫০ কোটি টাকা, আসবাবপত্রে ৭৫ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে।
ইভিএম পদ্ধতির বিরুদ্ধে শুরু থেকেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল আন্দোলন করে আসছে। সর্বশেষ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবারের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার জন্য বলেছে। তাদের আশঙ্কা ইভিএমের মাধ্যমে সরকারী দল ভোট কারচুপি করার সুবিধা গ্রহণ করবে।
ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করে একজন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ উল্লেখ করেছেন, আসন্ন নির্বাচনে যেসব ইভিএম ব্যবহৃত হবে তা বাংলাদেশে তৈরি। এই মেশিন তিন ধাপে তৈরি হয়েছে। প্রথম দুই ধাপ সম্পন্ন করেছে বুয়েট আর সর্বশেষ ধাপ সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ)। এই মেশিন কাজ করে হার্ডওয়্যার আর সফটওয়্যার-ফার্মওয়্যার এর মাধ্যমে। আর এই ফার্মওয়্যার দ্বারাই তৈরি হয় আসল ফলাফল। প্রথম দুই ধাপে যা দেখানো হয়েছে বা করা হয়েছে খুব সহজে তৃতীয় ধাপে গিয়ে ফার্মওয়্যারের কোড বদল করে মেশিনকে নিজ ইচ্ছানুযায়ী ম্যানুপুলেট করা সম্ভব।
তিনি নিজের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি নিজেও ইঞ্জিনিয়ার, প্রচুর ফার্মওয়্যার লিখেছি, যা দিয়ে হার্ডওয়্যার ম্যানুপুলেট করেছি, এমনকি মিসাইল পর্যন্ত। এর সব কিছুই রয়েছে কোডের মধ্যে। ফার্মওয়্যার কোড এমনভাবে লেখা যায় যেখানে গ্রাহকের মনের মতো আউটপুট বা রেজাল্ট পাওয়া যায়। কেউ একটি প্রতীকের বাটনে চাপ দিয়ে অন্য প্রতীকের পক্ষে গণনা চাইলে অথবা ৬০ শতাংশ এক প্রতীকের ভোটকে অন্য প্রতীকে পরিবর্তন করতে চাইলে সেটা করতে কোনো সমস্যা নেই। পেপার স্লিপ আর ভোট গণনার মধ্যে ডিফারেন্স চাইলে তাতেও সমস্যা নেই। কোড এমনভাবে লেখা হবে গ্রাহক যা চাইবে মেশিন তাই দেবে।’

তিনি উল্লেখ করেন, আমি কোড লিখে যেসব মেশিন কন্ট্রোল করেছি তার তুলনায় ইভিএম মেশিন একেবারে বাচ্চাদের খেলনা। এটা খুবই সিম্পল মেশিন, এর কোড একদম প্রাইমারি লেভেলের, আর একে যেভাবে খুশি লিখে ম্যানুপুলেট করা সম্ভব। একবার কোড লেখার পর তাকে পরবর্তী ধাপে বদলে দিয়ে ব্যবহারের আগে ফাইনাল মেশিনে সেই কোড আপলোড করে দেয়া কোন ব্যাপারই না। বিএমটিএফ এই মেশিন আন্তর্জাতিক বাজারের চাইতে বেশি দামে বানিয়েছে বলে খবরে প্রকাশ হয়েছে। এখানে প্রশ্ন, আন্তর্জাতিক বাজারে কম দামে মেশিন পাওয়া গেলেও কোন উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের সরকার এই মেশিন দেশের ভেতর বেশি দামে বানিয়েছে? এর সবচেয়ে সম্ভাব্য উত্তর হচ্ছেÑ বাইরের মেশিনের ফার্মওয়্যার বদল করে রেজাল্ট নিজ ইচ্ছানুযায়ী তৈরি করার জন্য ঠিক যে মেশিন কিনবে তার হার্ডওয়্যার আর ফার্মওয়্যারের ডিটেইলস জানা লাগবে, ‘র’ কোড ও তার কম্পাইলার ইত্যাদি সেই মেশিন প্রস্তুতকারী কোম্পানি বাংলাদেশকে দিতে হবে বা বাংলাদেশের ফার্মওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে মেশিনের ভেতরের মাদারবোর্ডের ইলেকট্রিক্যাল ডিজাইনের পুরা ডিটেইলস থাকতে হবে। যা কখনো বাইরের মেশিন প্রস্তুতকারক দেশ বাংলাদেশ সরকারকে দেবে না। কারণ, এটা তাদের ইন্টালেকচ্যুয়াল প্রপার্টি। তাই সেক্ষেত্রে মেশিন ব্যবহারে ভোটের রেজাল্ট নিজ ব্যাংকে তুলতে সবচেয়ে সহজ রাস্তা হচ্ছে নিজেরাই মেশিন তৈরি করা, নিজেরাই কোড লেখা। দু’টি পয়সা বেশি গেলেও এতে করে ইচ্ছানুযায়ী ভোট দেয়া আর রেজাল্ট গণনা সম্ভব। আপনারা উপরে দেখবেন এক আর ভেতরে হবে আরেক।’
ইভিএমের ব্যাপারে এই ধরনের সুনির্দিষ্ট সমালোচনা উপেক্ষা করে এটি বাস্তবে ব্যবহার করা কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে খুব স্বাভাবিকভাবেই সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।


http://www.dailynayadiganta.com/first-page/366115