১৭ নভেম্বর ২০১৮, শনিবার, ১১:০৬

আশুলিয়ায় ৮ টুকরো মানবদেহের খণ্ডিত মাথা উদ্ধার

হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতি, চাকু ও রক্তমাখা প্যান্ট-শার্ট জব্দ

আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকার একটি শাখা সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া মস্তকবিহীন আট টুকরো লাশের পরিচয় পাওয়ার পর এবার খণ্ডিত মাথা (মস্তক) উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতি, চাকু, রক্তমাখা প্যান্ট-শার্ট, বাথরুম থেকে রক্তমাখা কাঁথা, দু’টি মোবাইল সেট, কিছু ব্যবহৃত সিম জব্দ করেছে পুলিশ। তবে হত্যায় জড়িত মূল ঘাতকদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

গত ১২ নভেম্বর সকালে নিশ্চিন্তপুর এলাকার একটি শাখা সড়কের পাশ থেকে মাথাবিহীন পলিথিনে মোড়ানো সাত টুকরো মানবদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের স্ত্রী সম্পা বেগম আশুলিয়া থানায় এসে লাশটি তার স্বামী মেহেদী হাসান টিপুর বলে শনাক্ত করেন। এর আগে আশুলিয়া থানায় ১০ নভেম্বর নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন সম্পা বেগম। সেখানে একটি অচেনা নম্বর থেকে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। পরে পুলিশ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মানিক নামে একজনকে ওই এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নিহত মেহেদী হাসান টিপু (২৫) যশোরের বাঘারপাড়া থানাধীন অন্তরামপুর গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকীর ছেলে। তিনি স্থানীয় হামিম গ্রুপের শ্রমিক। টিপু নিশ্চিন্তপুর এলাকার পারভীন ভিলায় ভাড়া থাকতেন অনন্ত গ্রুপের শ্রমিক স্ত্রী সম্পাকে নিয়ে। নিখোঁজের দিন সন্ধ্যায় মানিক নামে একজন টিপুকে ডেকে নিয়েছিল।

আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) জাবেদ মাসুদ জানান, ৯ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ থাকা টিপুর স্বজনেরা থানায় লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে ছুটে আসেন। গত ১২ নভেম্বর রাতে এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে মানিক নামের একজনকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতকে আদালতে পাঠালে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বর্তমানে সে আশুলিয়া থানায় পুলিশ হেফাজতে রিমান্ডে রয়েছে।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক মনিরুজ্জামান মোল্লা জানান, আটক মানিক মুঠোফোনে গত ৯ নভেম্বর বাসা থেকে মেহেদী হাসানকে ডেকে নিয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অপহরণের রাতেই মেহেদী হাসানকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার সাথে জড়িত বাকি আসামিদের আটকের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরো জানান, মানিকের তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় নিশ্চিন্তপুর মোহাম্মদ আলীর নতুন নির্মিত একটি কলোনির বাবুল নামে এক ভাড়াটিয়ার কক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে হত্যায় ব্যবহৃত একটি চাকু, একটি চাপাতি, ভিকটিম মেহেদীর ২টি মোবাইল, তার খণ্ডিত মাথা, রক্তমাখা প্যান্ট-শার্ট, বাথরুমের ভেতর বালতিতে রাখা রক্তমাখা কাঁথা ও কিছু মোবাইল সিম উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা হত্যাকারীরা পেশাদার খুনি। ঘটনায় বাবুলসহ হত্যায় জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

http://www.dailynayadiganta.com/last-page/365344