১৪ নভেম্বর ২০১৮, বুধবার, ২:৫১

সরকারের সংবিধান লঙ্ঘন

রুহুল আমিন চৌধুরী : ১৯৭১ সালে মাত্র আট মাস বাইশ দিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আসে। আর এর পরের বছর ১৯৭২ সালে মাত্র দশ মাস চব্বিশ দিনে বাংলাদেশের সংবিধান রচিত হয়। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে সংবিধান লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার নজিরবিহীনভাবে সফল(??)। তাদের এই সংবিধান লঙ্ঘনের ধারাবাহিক ক্রম নিয়ে আরেকটি সংবিধান রচনা করা যেতে পারে।
আমাদের বক্ষ্যমাণ প্রবন্ধে বর্তমান সরকারের সেই সংবিধান লঙ্ঘনের প্রতি কিছুটা আলোকপাত করছি।

১৯৭২য়ে বাংলাদেশের মতো একটি নতুন দেশের নবপ্রণীত সংবিধানে তৎকালীন ডান ও বামপন্থীরা খুশি হতে পারেননি।
বামদের প্রতিনিধি সুরঞ্জিতসেনগুপ্ত সেই সংবিধান কমিটির সদস্য হওয়ার পরও সংবিধানে স্বাক্ষর না করা একমাত্র সদস্য। আর ডানপন্থীদের জন্য কষ্টের বিষয় ছিলো সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার অন্তর্ভুক্তি। শেখ মুজিব আমলের মাত্র আড়াই বছরে তাই চার চারবার সংবিধান সংশোধন করা হয়। স্বাধীনতার ৪৬ বছরে আমাদের এই সংবিধান সবশুদ্ধ ষোলবার সংশোধিত হয়েছে। রেকর্ড বটে!
আমরা জানি , সংবিধানের আলোকে প্রতিটি সরকারই শপথ নেয় এবং প্রতিটি সরকারই কিছু না কিছু ক্ষেত্রে সংবিধান লঙ্ঘন করে থাকে। তবে ২০১৪ সালের বিরোধী দলবিহীন বিনা ভোটের নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগ সরকার যে হারে সংবিধান লঙ্ঘন করেছে তা আজকের বিশ্বে বিস্ময়কর ও নজিরবিহীন।
আজকের আলোচনার শিরোনাম
আওয়ামী সরকারের সংবিধান লঙ্ঘন।
আমাদের সংবিধানের চারটি মূলনীতি হলো জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।
এবার আমরা এক এক করে সংবিধানের নীতি এবং তা লঙ্ঘনের ইতিহাসের দিকে একটু তাকাই।
সংবিধানে ১১ নাম্বার অনুচ্ছেদের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার এই মূলনীতিসমূহের অন্যতম। বাস্তবে এই গণতন্ত্রকে পাশ কাটিয়ে বিরোধী দলহীন, ভোটারবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠান করে ৩০০ আসনের ১৫৩ টি আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দি¦তায় আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়। এর মানে প্রথমেই সংবিধানের মূলনীতির অন্যতম গণতন্ত্রকে জলাঞ্জলি দিয়ে সংবিধান লঙ্ঘনের যাত্রা শুরু করে আওয়ামী লীগ। দশম জাতীয় সংসদের প্রায় পুরোটা সময় বিরোধীদের দমনপীড়ন আর গুম খুনের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়।
সংবিধানের তৃতীয় ভাগে রয়েছে মৌলিক অধিকার। অথচ আমরা দেখি, জনগণের মৌলিক অধিকারই সরকার সব থেকে বেশি লঙ্ঘন করেছে।

২৭ নং অনুচ্ছেদ আইনের দৃষ্টিতে সমতা।
সেখানে বলা হয়েছে সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী
আসলেই কি বাস্তবতা তাই ? দেশের সকল সচেতন নাগরিক দেখেছেন কিভাবে বর্তমান সরকার হাজার হাজার মানুষকে ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হত্যা করে আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে সংবিধানের লঙ্ঘন করেছে।
সংবিধানের ২৮ নং অনুচ্ছেদ ধর্ম, প্রভৃতি কারণে বৈষম্য।
২৮ এর (১) কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবে না।
দেশবাসী দেখেছে , পত্র-পত্রিকা সাক্ষী আছে আওয়ামী সরকার গত দশ বছর কিভাবে রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীকে সব কিছু থেকে বঞ্চিত করেছে। কিভাবে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে। জেলজুলুম হত্যা নির্যাতন আর পৈশাচিকতার শ্রেষ্ঠত্ব দিখিয়েছে। যার স্বীকার হয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
আমাদের সংবিধানের ২৯ নং অনুচ্ছেদে আছে সরকারী নিয়োগ-লাভে সুযোগের সমতা।
২৯ এর (১) প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ-লাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকিবে।
(২) কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ-লাভের অযোগ্য হইবেন না কিংবা সেই ক্ষেত্রে তাঁহার প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা যাইবে না।
অথচ বর্তমান নৌ-পরিবহনমন্ত্রী মো. শাজাহান খান বলেছেন, মেধা তালিকাতে থাকলেও জামায়াত-শিবির ও স্বাধীনতা বিরোধীদের চাকরি দেয়া হবে না। (২২ এপ্রিল ২০১৮, সূত্রঃ ইনকিলাব।)
এছাড়া এইচটি ইমামসহ সরকারের একাধিক মন্ত্রী প্রকাশ্যে মিডিয়াতে বলেছেন, জামায়াত শিবিরকে চাকরি দেওয়া হবে না। এটা সরকারের তরফ থেকে প্রকাশ্য সংবিধান লঙ্ঘন হলেও সুশীলওয়ালারা কিন্তু কখনই এই ব্যাপারে কিছু বলেননি।

সংবিধানের ৩১ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে আইনের আশ্রয়-লাভের অধিকার এর কথা।
আইনের আশ্রয়লাভ এবং আইনানুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহারলাভ যে কোন স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষত আইনানুযায়ী ব্যতীত এমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না, যাহাতে কোন ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে।
জনগণ সাক্ষী আছে সরকার কিভাবে বিএনপি ও জামায়াতের উপর মারমুখী ও চড়াও ছিলো। বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম, ইলিয়াস আলী, মীর কাশেম আলীর পুত্র আরমান, গোলাম আযমের পুত্র আব্দুল্লাহিল আমান আযমিকে সরকারের বিশেষ বাহিনী ধরে নিয়ে গেলেও সরকার তা স্বীকার করেনি। তাদের আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার দেয়া হয়নি। এটা সংবিধানের গুরুতর লঙ্ঘন।
সংবিধানে ৩২ নং অনুচ্ছেদে আছে জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতার অধিকার রক্ষণ।
আইনানুযায়ী ব্যতীত জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতা হইতে কোন ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা যাইবে না।
জামায়াতে ইসলামীর প্রতিটি নেতা বর্তমানে আত্মগোপনে আছেন। তাদের ব্যক্তি-স্বাধীনতা থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত করেছে সরকার। সেটাও গুরুতর সংবিধান লঙ্ঘন। এর আগে কখনোই কোন সরকার এভাবে ব্যক্তি-স্বাধীনতা হরণ করেনি।

সংবিধানের ৩৩ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে গ্রেপ্তার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ।
৩৩ এর (১) নং অনুচ্ছেদে বলা হয় গ্রেপ্তারকৃত কোন ব্যক্তিকে যথাসম্ভব শীঘ্র গ্রেপ্তারের কারণ জ্ঞাপন না করিয়া প্রহরায় আটক রাখা যাইবে না এবং উক্ত ব্যক্তিকে তাঁহার মনোনীত আইনজীবীর সহিত পরামর্শের ও তাঁহার দ্বারা আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার হইতে বঞ্চিত করা যাইবে না।
এবং ৩৩ এর (২) নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে গ্রেপ্তারকৃত ও প্রহরায় আটক প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিকটতম ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে (গ্রেপ্তারের চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের স্থান হইতে ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আনয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সময় ব্যতিরেকে) হাজির করা হইবে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ব্যতীত তাঁহাকে তদতিরিক্তকাল প্রহরায় আটক রাখা যাইবে না।
গ্রেফতার করতে হলে নির্দিষ্ট ওয়ারেন্ট লাগলেও সরকার সেই নিয়ম মানেনি। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে অবশ্যই গ্রেফতারের কারণ জানানো , তার আইনজীবী গ্রহণ করার সুযোগ, চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে নিকটস্থ ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে হাজির করার বিধান বারবার লঙ্ঘিত হয়েছে। অনেক আসামীকে গ্রেপ্তারের দশ, পনেরো কিংবা একমাস পর আদালতে হাজির করা হয়েছে। আর অনেক আসামীকে সরকারের লোকজন আটক করলেও তারা তা স্বীকার করেনি যা সংবিধানের গুরুতর লঙ্ঘন।
আমাদের সংবিধানের ৩৫ নং অনুচ্ছেদ বিচার ও দণ্ড সম্পর্কে রক্ষণ।
৩৫ নং অনুচ্ছেদের (১) ধারায় বলা হয়েছে অপরাধের দায়যুক্ত কার্যসংঘটনকালে বলবৎ ছিল, এইরূপ আইন ভঙ্গ করিবার অপরাধ ব্যতীত কোন ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে না এবং অপরাধ-সংঘটনকালে বলবৎ সেই আইনবলে যে দণ্ড দেওয়া যাইতে পারিত, তাঁহাকে তাহার অধিক বা তাহা হইতে ভিন্ন দণ্ড দেওয়া যাইবে না।
অর্থাৎ অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সময় সে অপরাধের জন্য যদি কোন আইন না থাকে তবে, পরবর্তীতে আইন করে পূর্বের অপরাধের বিচার করা যাবে না। ২০১৩ সালে কাদের মোল্লার মামলায় আসামীর কোনরূপ দণ্ড হলে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের বিধান ছিলো না। অথচ সরকার শাহবাগের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংবিধানের ৪৭ক (১) অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করে কাদের মোল্লার বিচার করে নজিরবিহীন ঘটনার জন্ম দিয়েছিলো।

৩৫ নং অনুচ্ছেদের (২) ধারায় বলা হয়েছে এক অপরাধের জন্য কোন ব্যক্তিকে একাধিকবার ফৌজদারীতে সোপর্দ ও দণ্ডিত করা যাইবে না।
এক্ষেত্রে অতিসাম্প্রতিক সময়ে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের উদাহরণ দেখলেই বুঝা যায় সরকার কিভাবে সংবিধান লঙ্ঘনের সহায়ক। টেলিভিশন টকশোতে মইনুল হোসেন একজন সাংবাদিককে চরিত্রহীন বলায় তিনি সংক্ষুব্ধ হয়েছেন এবং মানহানির মামলা করেছেন। ভালো কথা তারপর দেখা গেলো আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ দেশের বিভিন্ন জায়গায় একই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা করেছে এবং বিচারক মামলা আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেছেন। যদিও বিচারক দণ্ড দেননি কিন্তু একাধিক জায়গায় ওয়ারেন্ট ইস্যু করেছেন। এভাবে এক অপরাধে একাধিক মামলা গ্রহণ ও বিচার করা সংবিধানের গুরুতর লঙ্ঘন নয় কি?।
আমাদের সংবিধানের ৩৬ নং অনুচ্ছেদে আছে চলাফেরার স্বাধীনতা।
জামায়াত-শিবিরের নেতারা বাংলাদেশের সর্বত্র স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারেন কি? কোনো এক অলিখিত আদেশে তারা এর যোগ্যতা হারিয়েছেন। এটা কি সংবিধান লঙ্ঘন নয়?
সংবিধানের ৩৭ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে সমাবেশের স্বাধীনতা-এর কথা।
জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হইবার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে।
নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণভাবে গত ১০ বছরে কোথাও কি একবারের জন্যও দাঁড়াতে পেরেছে জামায়াতে ইসলামী?
এটা কি সংবিধান লঙ্ঘন নয়?
সংবিধানের ৩৮ নং অনুচ্ছেদে বলা হিয়েছে সংগঠনের স্বাধীনতা এর কথা।
একথা সবাই জানেন যে, জামায়াতে ইসলামী দেশের সংবিধানসম্মত উন্মুক্ত রাজনৈতিক সংগঠন হওয়া সত্ত্বেও তাদের নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করতে দেওয়া হয়নি। উপরন্তু ইসলামের মূল বিষয়ের সাথে সাংঘর্ষিক একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে আদালত দ্বারা তাদের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। উল্লেখ্য, নিবন্ধন বাতিলের পূর্বে বা পরে কখনোই জামায়াতকে সভা সমাবেশ বা স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেয়া হয়নি।
সংবিধানের ৪৩ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে গৃহ ও যোগাযোগের রক্ষণ-এর কথা।
৪৩ এর (ক) অনুচ্ছেদ বলে নিজ গৃহে প্রবেশ, তল্লাশি ও আটক হইতে স্বীয় গৃহে নিরাপত্তালাভের অধিকার থাকিবে; এবং (খ) চিঠিপত্রের ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার থাকিবে।
বিএনপি ও জামায়াতের অনেক নেতাকেই মিথ্যা ও ভুয়া মামলায় ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়িতে থাকতে দেয়া হচ্ছে না। বিশেষ করে জামায়াতের ঘাঁটি বলে পরিচিত সাতক্ষীরায় বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়ার নজিরও সরকার স্থাপন করেছে। সরকার রাজনীতিবিদের একান্ত ব্যক্তিগত টেলিকথন মিডিয়াতে ফাঁস করে ৪৩ এর খ ধারা লঙ্ঘন করেছে।

সংবিধানের ৯৪ এর (৪) নং ধারায় বলা হয়েছে এই সংবিধানের বিধানাবলী-সাপেক্ষে প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারক বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন।
বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ বিচার ও অন্যান্য রাজনৈতিক বিচারের ক্ষেত্রে কিভাবে নির্লজ্জ সরকারি হস্তক্ষেপ হয়েছে তা সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা বাবুর বইয়ের মাধ্যমে সুস্পষ্ট হয়েছে । এখানেও সরকার বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করে সংবিধানের লঙ্ঘন করেছে।
কার্যোদ্ধারের পর সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে চাপ দিয়ে যেভাবে বিদেশে পাঠানো হলো তা নজিরবিহীন। এভাবে বিচারপতিদের অপসারণের কোন নিয়ম সংবিধানে নেই। এটাও সংবিধানের গুরুতর লঙ্ঘন।

এভাবে একটা দেশের সরকার যখন বারবার সংবিধান লঙ্ঘন করে বিরোধীদের দমনপীড়ন চালায় তখন সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে বিরোধীরা বিকল্প চিন্তা করতে বাধ্য হয়। রাষ্ট্রের মূল স্তম্ভ ধ্বংস করে একটা দেশ সামনে এগিয়ে যেতে পারে না। তাই সরকারকে নমনীয় হয়ে সকলের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে হবে। অন্যথায় অনাকাক্সিক্ষত বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।

 

http://www.dailysangram.com/post/353317