১১ নভেম্বর ২০১৮, রবিবার, ২:০২

বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র নজর রাখছে জাতিসঙ্ঘ

নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে জাতিসঙ্ঘ। অন্য দিকে বাংলাদেশে একটি অবাধ, বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

গতকাল নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের উপমুখপাত্র ফারহান হক বিরোধী দলের প্রতিবাদের মুখে বাংলাদেশে একতরফাভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বাংলাদেশের মাঠপর্যায়ে চলমান ঘটনা সম্পর্কে আমরা সজাগ রয়েছি এবং পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক, বিশ্বাসযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন আমাদের অগ্রাধিকার। আমরা নির্বাচন আয়োজনের ওপর চোখ রাখব এবং দেখব আমাদের অগ্রাধিকারগুলো গুরুত্ব পেল কি না।

আর মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্র বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনে এগিয়ে আসছে। তিনি বলেন, আমরা অবাধ, বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের সহায়ক অব্যাহত আলোচনা ও উন্মুক্ত মতবিনিময়কে উৎসাহিত করি, যাতে বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাবে।

মুখপাত্র বলেন, উন্মুক্ত সংলাপ এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কেন্দ্রবিন্দু। আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও মূল্যবোধকে সমর্থন করি, যা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশেরই নাগরিকদেরই পছন্দের।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা আগামী ২৩ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর এটি মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রথম প্রতিক্রিয়া।

নির্বাচনে ভারতের প্রভাব থাকবে : হাডসন ইনস্টিটিউটের থিংক-ট্যাংক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অপর্না পান্ডে। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারত একটি বড় ফ্যাক্টর। আসন্ন নির্বাচনেও ভারতের প্রভাব থাকবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটে ভারতের অবস্থান, আসামের নাগরিক তালিকার মতো ইস্যুগুলো ভারত সম্পর্কে বাংলাদেশের জনগণের মতামতকে ইতোমধ্যেই প্রভাবিত করেছে। নির্বাচনী প্রচারণাতেও রাজনৈতিক দলগুলো এই ইস্যু ব্যবহার করবে।

অপর্না পান্ডে বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চায় দিল্লি। তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা গুরুত্ব¡পূর্ণ মিত্র। তবে ভারত বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এটি একটি কষ্টসাধ্য কাজ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আবারো ক্ষমতায় গেলে পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে খুব সামান্য পরিবর্তন হবে। তবে বিরোধী জোট ক্ষমতায় এলে কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তনের ব্যাপারে দিল্লিকে প্রস্তুত থাকতে হবে। একই সাথে এটাও মাথায় রাখতে হবে, বাংলাদেশে বিরোধী দল ক্ষমতায় এলে বেইজিং হয়তো এ অঞ্চলে তার উপস্থিতি আরো বাড়ানোর চেষ্টা করবে।

বাংলাদেশ ইস্যুতে কংগ্রেশনাল ব্রিফিং : বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনে রাজনৈতিক চাপ দেশের মানবাধিকারকে কিভাবে প্রভাবিত করছে তা নিয়ে আগামী ১৫ নভেম্বর কংগ্রেশনাল ব্রিফিংয়ের ঘোষণা দিয়েছে টম ল্যানটোস হিউম্যান রাইটস কমিশন (টিএলএইচআরসি)। কমিশন বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ মানবাধিকারের কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের ভয়াবহতায় দেশটি থেকে পালিয়ে আসা সাত লাখ রোহিঙ্গার জন্য সীমান্ত খুলে দেয়ার বাংলাদেশের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। তবে বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক দল ও বাকস্বাধীনতার চর্চাকারীরা সরকারের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। নাগরিক সমাজ রয়েছে ভঙ্গুর অবস্থায়। একই সাথে রয়েছে চরমপন্থা বেড়ে যাওয়ার হুমকি। সংসদ নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে সারা দেশে রাজনৈতিক সহিংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন ব্যাপকভাবে বেড়েছে।

http://www.dailynayadiganta.com/first-page/363755