১০ নভেম্বর ২০১৮, শনিবার, ৪:২৪

এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা পাচ্ছেন ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট এবং ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতা * পূরণ হচ্ছে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি

ভোটের আগে শিক্ষক তুষ্টির বিশেষ বরাদ্দ

 

  মুসতাক আহমদ: ভোটের আগে আন্দোলনের ফল পেতে শুরু করেছেন শিক্ষকরা। সরকারি চাকরিজীবীদের মতোই বছরে ৫ শতাংশ হারে বেতন বাড়বে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের। পাবেন মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বৈশাখী ভাতা। অবসরে যাওয়া শিক্ষকদের জন্যও আছে সুখবর। অবসর বোর্ড এবং কল্যাণ ট্রাস্টের তহবিলে যোগ হচ্ছে বাড়তি টাকা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার রাতে এই ৪ খাতে বরাদ্দের নির্দেশ দেয়ায় শিক্ষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।

একইদিন অর্থ মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত নীতিমালা অনুমোদন করায় ইবতেদায়ি শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবিও পূরণের পথ উন্মুক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে ভোটের আগে বড় কয়েকটি দাবি পূরণের নিশ্চয়তা পেলেন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন যুগান্তরকে বলেন, আগামী বৈশাখ মাসেই শিক্ষকরা এ ভাতা পেয়ে যাবেন। আর নতুন এমপিওতে যুক্ত হবে বার্ষিক বর্ধিত বেতন (ইনক্রিমেন্ট)। এই দুই খাতে টাকা বরাদ্দ রেখেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর অর্থছাড় দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হবে। আর কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতোই স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা। এ কারণে ওইসব স্কুলের মতোই মাদ্রাসাগুলো পরিচালনা, শিক্ষকদের বেতন দেয়া, প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর অর্থ হচ্ছে এ খাতে ব্যয়ের প্রয়োজনীয় টাকা পাওয়া যাবে। নির্দেশনার আলোকে এখন পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করা হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার মোট ৪টি খাতে অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে প্রথমত, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বার্ষিক ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট প্রদানের জন্য থাকছে ৫৩১ কোটি ৮২ লাখ ঊনচল্লিশ হাজার টাকা। দ্বিতীয়ত, বৈশাখী ভাতার জন্য থাকছে প্রায় ১৭৭ কোটি ২৭ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। তৃতীয়, অবসর সুবিধা বোর্ডের অনুকূলে প্রদানের জন্য রয়েছে ৫৩২ কোটি টাকা। একই বোর্ডের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে সিড মানি হিসেবে দেয়া হয় ১০ কোটি টাকা। চতুর্থ, কল্যাণ সুবিধা প্রদানের জন্য দেয়া হয় ২২৭ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ। এ ছাড়া আরও ১০ কোটি টাকা সিড মানি হিসেবে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

জানা গেছে, অর্থ বরাদ্দের এ ঘোষণার সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসেন, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের (স্বাচিপ) সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু ও অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্য সচিব শরীফ আহমেদ সাদী।

বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু বলেন, অবসর বোর্ড এবং কল্যাণ ট্রাস্টে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ বরাদ্দ দেয়ার কারণে পেন্ডিং অন্তত ১৬ হাজার শিক্ষকের দেনা শোধ করা যাবে। এর ফলে আবেদন করে বছরের পর বছর অপেক্ষমাণ অনেক শিক্ষকই অর্থ পাবেন।

জানা গেছে, কল্যাণ ট্রাস্ট নতুন স্কেলে শিক্ষকদের পাওনা পরিশোধ করবে। আর অবসর বোর্ড পুরনো স্কেলে অর্থ পরিশোধের চিন্তাভাবনা করছে। একটি সূত্র জানায়, প্রায় ৪৫ হাজার শিক্ষক অবসর বোর্ডে আবেদন করে রেখেছেন। নতুন স্কেলে আবেদন নিষ্পত্তি করলে প্রায় ৯ হাজার শিক্ষক অর্থ পাবেন। পুরনো স্কেলে পরিশোধ করা হলে প্রায় ১৭ হাজার শিক্ষককে অর্থ দেয়া যাবে। বেশিসংখ্যক আবেদন নিষ্পত্তির জন্য এ পদক্ষেপ। তবে এতে জটিলতা বৃদ্ধির আশঙ্কা আছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে সারা দেশে প্রায় ২৭ হাজার প্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী আছেন প্রায় পাঁচ লাখ। মূল বেতনের ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতা ও ৫ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট দেয়ার ঘোষণায় তারা খুশি। প্রধানমন্ত্রীর ওই বিশেষ বরাদ্দের পরিপ্রেক্ষিতে কাল রোববার জেলায় জেলায় আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ করবে স্বাচিপ।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/109998/%E0%A6%AD%E0%A7%8B%E0%A6%9F%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%86%E0%A6%97%E0%A7%87-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%95-%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B7-%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A6