৫ নভেম্বর ২০১৮, সোমবার, ১২:২৭

সাতক্ষীরায় গায়েবি মামলা থেকে মৃত ব্যক্তিও রেহাই পাননি

সাতক্ষীরার কলারোয়া থানা পুলিশ মৃত ব্যক্তির নামে গায়েবি মামলা করেছে। গত ৩১ অক্টোবর পুলিশের এসআই সুবির ঘোষ বাদি হয়ে কলারোয়া থানায় মামলাটি করেন। মামলায় মোজাম্মেল হককে (৫০) (২৬/১৮ নং মামলা ২৫ নং) এজাহার নামীয় আসামি করা হয়েছে। তিনি কলারোয়া উপজেলার সীমান্ত সোনাবাড়িয়া দক্ষিণ গ্রামের আ: মোতালেব মোল্লার ছেলে। ২০১৪ সালের ১৪ জানুয়ারি তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর পাঁচ বছর পর কলারোয়া থানায় দায়ের করা নাশকতা মামলায় তিনি কিভাবে এজহার নামীয় আসামি হলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ মামলায় পুলিশের অভিযোগ কলারোয়ায় মোজাম্মেল হক পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল ছুড়ে পালিয়ে গেছেন। গত ৩১ অক্টোবর পুলিশের এসআই সুবির কুমার ঘোষের দায়েরকৃত কলারোয়া থানার মামলা নং ২৬-এ এই তথ্য পাওয়া যায়।

জানা গেছে, সোনাবাড়িয়া গ্রামের মৃত মোতালেব মোল্লার ছেলে মোজাম্মেল হকের মৃত্যু হয় ২০১৪ সালের ১৪ জানুয়ারি। মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশরা জমিজমাসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রয়োজনে সার্টিফিকেট নিয়েছেন স্থানীয় ইউপি কার্যালয় থেকে। জমিজমাসংক্রান্ত বিষয়ে ২০১৬ সালের ৫ এপ্রিল সোনাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে গৃহীত ওয়ারিশ-কাম সনদ স্মারক নং-এম/ই/প ১৬৬/১৬ দেখিয়ে মৃত মোজাম্মেল হকের পরিবার বলেছে মৃতের নামে মামলা দিয়ে হয়রানি করা নজিরবিহীন ঘটনা। গত ৩১ অক্টোবর কলারোয়া থানায় দায়েরকৃত মামলায় এসআই সুবির ঘোষ বলেছেন ৩০ অক্টোবর রাত ৯টা ১৫ মিনিটে কলারোয়া বাসস্টান্ডে অবস্থানকালে গোপন সংবাদ পান রামকৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় উগ্রপন্থী জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীরা নাশকতা ঘটানোর জন্য গোপন বৈঠক করছেন। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করে একদল পুলিশ নিয়ে রাত ১০টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গোপন বৈঠকরত জামায়াত-বিএনপির উগ্রপন্থী নেতাকর্মীরা কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়াকালে সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সের সহায়তায় এজাহারে উল্লেখ ১নং হতে ১২নং আসামিকে গ্রেফতার এবং এজাহারে উল্লিখিত অপর আসামিসহ অজ্ঞাত ২৫-৩০ জন পালিয়ে যান। এজাহারভুক্ত আসামিদের নামের তালিকায় ২৫নং-এ মোজাম্মেল হক (৫০), পিতা মৃত আ: মোতালেব মোল্লা, গ্রাম- সোনাবাড়িয়া (দক্ষিণ), উপজেলা/থানা-কলারোয়া, জেলা-সাতক্ষীরার নাম রয়েছে। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন পুলিশের হাত থেকে মৃত ব্যক্তিরাও রেহাই পাচ্ছেন না। এলাকাবাসী প্রশ্ন করেন মৃত মোজাম্মেল কিভাবে কবর থেকে উঠে এসে গোপন বৈঠকে যোগদান করে পুলিশ দেখে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনা পুলিশের কর্মকাণ্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

http://www.dailynayadiganta.com/last-page/362461