১ নভেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৩৭

রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের গলার ফাঁস অ্যাননটেক্স ও ক্রিসেন্ট গ্রুপ

অস্তিত্বই হুমকির মুখে রাষ্ট্রয়ত্ত জনতা ব্যাংকের। আর এই অস্তিত্ব সংকটের কারণ হলো কোনো নিয়োম নীতির তোয়াক্কা না করে দুর্নীতি অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ প্রদান। আর সেই ঋণের টাকা এখন আদায় করতে পারছেনা ব্যাংকটি। ফলে জালিয়াতির মাধ্যমে দেয়া ঋণের টাকাই এখন ব্যাংটিকে ভয়াবহ অবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে। নিয়মবহির্ভুতভাবে মাত্র দুটি কোম্পানিকে ঋণ দিয়েই এখন ধ্বংসের পথে ব্যাংকটি। রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের গলার ফাঁস সেই দুটি কোম্পানি হলো অ্যাননটেক্স ও ক্রিসেন্ট গ্রুপ। কোনো রকম বাছবিচার না করে বিতর্কিত অ্যাননটেক্স গ্রুপকে ঋণ সুবিধা দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক। এ ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে পাঁচ হাজার ৬০০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে অ্যাননটেক্স গ্রুপ। এদিকে ক্রিসেন্ট গ্রুপ জনতা ব্যাংক থেকে সব মিলিয়ে মাত্র পাঁচ বছরেই নিয়ে নিয়েছে ৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। ফলে মাত্র দু’টি গ্রুপের কাছেই ব্যাংকটির পাওনা ১০ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা। অস্তিত্ব বিপণœ হওয়ার শঙ্কা থেকে জনতা ব্যাংক এই ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও খেলাপি করতে পারছে না। ফলে অনিয়ম দলীয় হস্তক্ষেপে লুটপাটের কারণে করুণ পরিণতির দিকে যাচ্ছে এক সময়ের ভালো অবস্থানে থাকা জনতা ব্যাংক।

জানা গেছে, জনতা ব্যাংকের মোট মূলধন ২ হাজার ৯৭৯ কোটি টাকা। মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার সুযোগ আছে। অর্থাৎ এক গ্রাহক ৭৫০ কোটি টাকার বেশি ঋণ পেতে পারেন না। একজন গ্রাহককেই দেয়া হয়েছে মোট মূলধনের প্রায় দ্বিগুণ। ব্যাংক দেখভাল করার দায়িত্ব যাদের সরকারের নিয়োগ দেয়া সেই পরিচালনা পর্ষদই এই বিপজ্জনক কাজটি করেছে। হল-মার্ক ও বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির পর এটিকেই পারস্পরিক যোগসাজশে সাধারণ মানুষের আমানত নিয়ে ভয়ংকর কারসাজির আরেকটি বড় উদাহরণ বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবুল বারকাতের সময় এই অর্থ দেয়া হয়। ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ বছর জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। এ সময় ব্যাংকের পর্ষদ সদস্য ছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলরাম পোদ্দার, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সহসম্পাদক নাগিবুল ইসলাম ওরফে দীপু, টাঙ্গাইলের কালিহাতী আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী যুবলীগ নেতা আবু নাসের প্রমুখ। ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হয় খেয়ালখুশিমতো।

সূত্র জানায়, কোনো রকম বাছবিচার না করে বিতর্কিত অ্যাননটেক্স গ্রুপকে ঋণ সুবিধা দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক এখন নিজেই অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে। গ্রুপটির কর্ণধার মোহাম্মদ ইউনুছ বাদল এই ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে পাঁচ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে এখন তা ফেরত দিচ্ছেন না। অস্তিত্ব বিপণœ হওয়ার শঙ্কা থেকে জনতা ব্যাংক এই ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও খেলাপি করতে পারছে না। অ্যাননটেক্স গ্রুপকে নিয়ে তৈরি বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শন প্রতিবেদনে এই ভয়াবহ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শক দলের সদস্যরা বলেছেন, সার্বিক তথ্য বিশ্লেষণে ইউনুছ বাদলের নেওয়া ঋণের অধিকাংশই গুণগত মানে শ্রেণিকরণযোগ্য। তবে একবারে বিপুল অঙ্কের ঋণখেলাপি করলে ব্যাংকের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। যে কারণে আপাতত বস্তুগত মাপকাঠিতে দুই হাজার ৬৪৩ কোটি টাকার ঋণখেলাপি করতে হবে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত সময়ে জনতা ব্যাংক পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস বিভাগের তৎকালীন যুগ্ম পরিচালক মিজানুর রহমান আকনের নেতৃত্বে পরিদর্শন পরিচালিত হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চাতুরির মাধ্যমে প্রকল্প মূল্যায়ন, এক প্রকল্প থেকে তহবিল অন্য প্রকল্পে স্থানান্তর, প্রকল্পগুলো একই গ্রুপভুক্ত এবং মূল কর্ণধার একজন হলেও নতুন নতুন কোম্পানি সৃষ্টির মাধ্যমে অনেক বেশি ঋণ পুঞ্জীভূত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ব্যাংকটি প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি তদারকি না করায় এবং কিছু প্রকল্পের কাজ দীর্ঘদিনেও শেষ না হওয়ায় তা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

পরিদর্শন প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ইউনুছ বাদলের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে গ্যালাক্সি সোয়েটার্স অ্যান্ড ইয়ার্ন ডাইং, সুপ্রভ কম্পোজিট নিট, সিমরান কম্পোজিট এবং লামিসা স্পিনিংয়ে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ব্যাংকের পাওনা দুই হাজার ২৮১ কোটি টাকা। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকানায় বাদলের বাবা, স্ত্রী, ভাই, ভাবিসহ পরিবারের অন্যদের নাম রয়েছে। যদিও সব প্রতিষ্ঠানের সুবিধাভোগী ইউনুছ বাদল। বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে গত ১৩ সেপ্টেম্বর জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুছ ছালাম আজাদের পাঠানো এক চিঠিতে। এতদিন নামে-বেনামে ইউনুছ বাদলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ২২ প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুবিধাভোগী নিয়ে একধরনের অস্পষ্টতা ছিল।

এদিকে এই গ্রুপটিকে অবৈধভাবে ঋণ সুবিধা দেওয়ায় জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শকরা জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং পরিচালনা পর্ষদকে দায়ী করেছেন। পরিদর্শক দল বলেছে বিভিন্ন সময়ে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং পর্ষদের অনুমোদন ও তদারকির দুর্বলতার কারণে ঋণ বৃদ্ধি পেয়েছে, মূলত দায়-দায়িত্ব তাদের ওপর বর্তায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনে অ্যাননটেক্সের ছয়টি প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল আমদানির জন্য বিভিন্ন সময়ে এলসি খোলা হয়। এসব এলসির বিপরীতে সৃষ্ট দেনা গ্রাহকের পরিশোধ করার কথা। অথচ ব্যাংকের টাকা আদায় না করে গ্রাহকের নামে ‘ফোর্স লোন’ সৃষ্টি করা হয়েছে। এমনকি মঞ্জুরিপত্রের শর্তের আলোকে গ্রাহকের কাছ থেকে এলসি মার্জিনও নেওয়া হয়নি। কাঁচামাল থেকে পণ্য প্রস্তুতের পরও দেনা আদায়ে ব্যবস্থা নেয়নি ব্যাংকটি। এভাবে সৃষ্ট অনেক ফোর্স লোন খেলাপি হলেও তা আমলে না নিয়ে নতুন করে এলসি খোলা হয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে এই প্রবণতা দেখা গেলেও পরবর্তী সময়ে এসব ঋণ আদায়ের উদ্যোগ না নিয়ে পরিচালনা পর্ষদ থেকে বারবার পুনঃতফসিল করে ফোর্স ঋণকে মেয়াদি ঋণে পরিণত করা হয়েছে। বর্তমানে শুধু ফোর্স লোনের বিপরীতে ব্যাংকের পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা। এসব ঋণের অধিকাংশই খেলাপি হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, অ্যাননটেক্সের ঋণ ও ঋণসুবিধার মধ্যে অধিকাংশেরই অনুমোদন মিলেছে অধ্যাপক আবুল বারকাতের চেয়ারম্যান থাকাকালে। ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাঁচ বছর এই ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, ঋণ ও ঋণসুবিধার ক্ষেত্রে উদারতা দেখিয়েছেন বর্তমান এমডি আবদুছ ছালাম আজাদ ও সাবেক এমডি এসএম আমিনুর রহমানও। এক্ষেত্রে ওই সময় ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বেশ কয়েকজন সদস্যেরও বিশেষ ভূমিকা ছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা, পূর্ববর্তী উৎপাদন ও বিক্রয় দক্ষতা বিবেচনা না করে শুধু প্রাক্কলিত আর্থিক বিবরণী ও কাল্পনিক তথ্যের ভিত্তিতে নতুন নতুন প্রকল্পে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে স্বাক্ষরিত এমওইউ অনুযায়ী জনতা ব্যাংক তার মোট মূলধনের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ ফান্ডেড ঋণ দিতে পারে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত চার হাজার ২৩৩ কোটি টাকা মূলধনের বিপরীতে সর্বোচ্চ ৪২৩ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার সুযোগ ছিল। অথচ মোহাম্মদ ইউনুছ বাদলের মালিকানাধীন এননটেক্স গ্রুপকে পাঁচ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ফান্ডেড ছিল চার হাজার ৮০৫ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, ২০০৪ সালে জনতা ব্যাংকের শান্তিনগর শাখা থেকে প্রথম ঋণ নেয় অ্যাননটেক্স গ্রুপের জুভেনিল সোয়েটার। তখন প্রতিষ্ঠানটির ঋণ ছিল এক কোটি টাকার সামান্য বেশি। পরে তৎকালীন ডিএমডি মো. গোলাম সারোয়ারের পরামর্শে ২০০৮ সালে জনতা ভবন করপোরেট শাখায় ঋণটি স্থানান্তর করা হয়। ২০১০ সাল থেকে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান খুলে ঋণসুবিধা নেওয়া শুরু হয়। জনতা ব্যাংক করপোরেট শাখার ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) হিসেবে ২০১১ সালের ১৬ নবেম্বর থেকে ২০১৩ সালের ২৫ আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন আবদুছ ছালাম আজাদ। ঋণের বড় অংশই তার সময়ে সৃষ্ট।
এক গ্রাহককে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে দেশের বৃহত্তম কেলেঙ্কারির পাশাপাশি চাতুর্যের আশ্রয়ও নিয়েছে জনতা ব্যাংক। ঋণ কম দেখাতে ব্যাংক তাদের নিরীক্ষিত বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব প্রতিষ্ঠানকে তিনটি পৃথক গ্রুপ বলে উল্লেখ করেছে। নিয়মনীতি ভেঙে এক গ্রাহককে বেশি ঋণ দেওয়ার তথ্য লুকাতেই এই চাতুরতার আশ্রয় নেয়া হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দেয়া প্রতিবেদনেও ৫ হাজার কোটি টাকার ঋণকে তিনটি পৃথক গ্রুপ হিসেবে দেখিয়েছে জনতা ব্যাংক। যোগসাজসের মাধ্যমে এ অনিয়ম ঘটাতে অভিনব কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানকে দোষারোপ করে বলেন, জনতা ব্যাংক একসময় সেরা ব্যাংক ছিল। কিন্তু আবুল বারকাতই ব্যাংকটি শেষ করে দিয়েছেন।

জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে গত তিন বছর দায়িত্বে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব শেখ মো. ওয়াহিদ-উজ-জামান। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর তাঁর চেয়ারম্যানের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে তারা আরও ঋণ চেয়েছিল, আমি দিইনি। এ কারণে আমি তাদের শত্রুতে পরিণত হয়েছি। আর ঋণের প্রায় সবই আগের চেয়ারম্যানের (আবুল বারকাত) সময় দেয়া। তিনি বলেন, কেন একটি প্রতিষ্ঠানের ঋণকে ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপের নামে দেখানো হলো, তা জানি না। তবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই এটি করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আর এটা এত দিন গোপন করার চেষ্টা হয়েছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আইনে আছে, মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি এক গ্রুপকে দেয়া যাবে না। এর বেশি ঋণ গেলে ব্যাংকের জন্য বড় ঝুঁকি হয়ে যায়। ফলে যা হবার তাই হয়েছে।

এদিকে জনতা ব্যাংকের ছোট খাটো ঋণ জালিয়াতি ঘটনা ফাঁস যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এরপর আবারও জনতা ব্যাংকে ঘটে বড় ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা। এবার ভুঁয়া রফতানি নথিপত্র তৈরি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ তুলে নেয়ার খবর ফাঁস হয়ে যায়। অপকর্মে সহায়তা করার পাশাপাশি ক্রিসেন্ট গ্রুপকে অর্থায়নও করে জনতা ব্যাংক। ক্রিসেন্টের কাছে জনতা ব্যাংকের পাওনা ২ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা। বিদেশে রফতানির ১ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা আটকা রয়েছে। সরকারের নগদ সহায়তা তহবিল থেকে তুলে নিয়েছে ১ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে গ্রুপটি জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে মাত্র পাঁচ বছরেই নিয়ে নিয়েছে ৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা।

ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় জনতা ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুস সালামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সম্প্রতি এ ব্যাপারে জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে চিঠি পাঠিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামতের ভিত্তিতে দেশের প্রচলিত আইন ও বিধিবিধান মেনে তাঁর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান লুনা শামসুদ্দোহা গত ২ আগস্ট ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণ জালিয়াতির বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরেন। ব্যাংকের সাবেক এমডি ও একাধিক ডিএমডির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলে ধরে ব্যবস্থা নেয়ারও অনুরোধ জানান তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতেই অর্থ মন্ত্রণালয় এ চিঠি পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে।

http://www.dailysangram.com/post/351652