ফাইল ছবি
২৯ অক্টোবর ২০১৮, সোমবার, ১০:৩২

সাধারণ মানুষকে শাস্তি দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়

সড়কে নৈরাজ্য ও অপঘাতে মৃত্যু নিত্যদিনের ব্যাপার। সড়কে যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষের দুর্ভাগ্য এখানে যে, তারা ধর্মঘট করতে জানে না, কর্মবিরতিও নয়, নিতান্ত বাধ্য হলে তারা পারে যাত্রাবিরতি করতে। কর্মজীবী মানুষের যাত্রাবিরতি যে কতটা ক্ষতিকর, তা ভুক্তভোগী ছাড়া আর কেউ বুঝবে না।
সম্প্রতি পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ আট দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি কর্মসূচির নামে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। যে কোনো শ্রেণির কোনো প্রশ্নে দাবি থাকতেই পারে।

সরকারের সঙ্গে দেন-দরবারই সহজতর পথ। দাবি আদায়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে শাস্তি দেওয়া মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়। আকস্মিক পরিবহন ধর্মঘট বা কর্মবিরতিতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার নারী ও স্কুল-কলেজ পড়ূয়া ছেলেমেয়ে। চাকরিজীবীদেরও কর্মস্থলে যেতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ব্যবসায়ীদের ক্ষতিও অপূরণীয়।

সড়ক পরিবহন আইন করার আগে সরকার মালিক-শ্রমিক এবং নাগরিক সমাজের সঙ্গে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে আলোচনা করেছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বহুবার দুই ফেডারেশনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেই বিলটি সংসদে তোলেন। তার পরও যদি কোনো পক্ষের আপত্তি থাকে, তাহলে তাদের সরকারের সঙ্গে বসে আলোচনা করাই যুক্তিযুক্ত হতো। কথিত কর্মবিরতিতে সরকার বিব্রত হতে পারে, কিন্তু ক্ষতি সাধারণ মানুষের। নৌপরিবহনমন্ত্রী এই ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি। আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে, ফেডারেশনের ডাকা কর্মবিরতি প্রশ্নে নৌপরিবহনমন্ত্রীর অবস্থান কী তা মানুষ জানে না। যদি এই কর্মবিরতির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন, তাহলে তিনি ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করতে পারেন। তা যদি না করেন তাহলে মন্ত্রিত্ব ছাড়াই হবে তার নৈতিক দায়িত্ব। সংসদে বিলটি উত্থাপনের সময় তিনি এর বিরোধিতা করেননি। সুতরাং দুটি পরস্পরবিরোধী অবস্থানে থাকা নৌমন্ত্রীর জনগণের সঙ্গে পরিহাসের শামিল।

http://samakal.com/bangladesh/article/18101802