২৪ অক্টোবর ২০১৮, বুধবার, ৯:৫৬

ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া চাকরি করছেন ৬ বিদেশি প্রকৌশলী

তদন্ত করবে বিনিয়োগ বোর্ড

ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে চাকরি করছেন বিদেশি প্রকৌশলী। বর্তমানে ৬ জন ইথিওপিয়ার প্রকৌশলী কাজ করছেন বলে সংস্থার প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানা গেছে। সম্প্রতি বিমানবহরে যোগ হওয়া উড়োজাহাজ ড্রিমলাইনারের জন্য তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী যে কোনো বিদেশি নাগরিককে বাংলাদেশে বেতনে কাজ করতে হলে ওয়ার্ক পারমিট নেয়া বাধ্যতামূলক। এটি বিনিয়োগ বোর্ডের সুস্পষ্ট আইন। এ আইন লঙ্ঘন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
জানতে চাইলে বিমান প্রকৌশল শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার সাজ্জাদুর রহিম বলেন, ড্রিমলাইনে যারা কাজ করছেন- তারা বিদেশি হলেও সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য তাদের সেবা ও প্রশিক্ষণ নেয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ শেষে তারা চলে যাবেন। সেজন্য অনুমতির দরকার নেই। আর অপারেশন শাখার সহকারী ম্যানেজার আবদুর রহিম বলেন, ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া কোনো বিদেশি বিমানে বৈধভাবে কাজ করতে পারে না। বর্তমানে বিমানে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে দু’জন বিদেশি পাইলট কাজ করছেন।
বিমান সূত্রে জানা যায়, ড্রিমলাইনারের জন্য বর্তমানে যে ৬ জন প্রকৌশলী নেয়া হয়েছে তারা সবাই ইথিওপিয়া এয়ারলাইন্সের। তাদের জন্য আলাদা আলাদা চুক্তি করা হয়েছে। তাদের বেতন-ভাতাদি সরাসরি পরিশোধ করা হচ্ছে বিমানের নিজস্ব তহবিল থেকে। বিমানের জনসংযোগ শাখার মহাব্যবস্থাপক শাকিল মিরাজ বলেন, তাদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে প্যাকেজ চুক্তির অংশ হিসেবে। তারা ড্রিমলাইনারেরর জন্য তৈরি করা নিজস্ব প্রকৌশল ও পাইলটদের প্রশিক্ষণ দিয়ে চলে যাবেন। তারা বিমানের কর্মচারী নন, বিমান থেকে পে স্লিপ দিয়ে বেতন গ্রহণ করেন না তারা। কাজেই তাদের জন্য কোনো ধরনের ওয়ার্ক পারমিটের দরকার নেই।

বিমানের সাবেক একজন পরিচালক বলেন, প্যাকেজের চুক্তি করা হলেও যদি তারা এই দেশ থেকে টাকা নিয়ে যান, তাহলে তাদের ওয়ার্ক পারমিট নেয়া আইনগতভাবেই বাধ্যতামূলক। বর্তমানে বিমান থেকে তাদের বিপরীতে বেতন-ভাতার টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে ইথিওপিয়া এয়ারলাইন্সের নামে।
বিমানের সহকারী ম্যানেজার আবদুর রহিম বলেন, দু’জন পাইলট বিমানে যোগ দেয়ার আগে থেকেই বিনিয়োগ বোর্ড থেকে ভিসার অনুমতি নেয়া হয়েছে। তিনি নিজে বিমানের পক্ষ হয়ে বিনিয়োগ বোর্ড থেকে ওই দু’জন পাইলটের অনুকূলে ওয়ার্ক পারমিটের কাগজপত্র সংগ্রহ করেছেন। তাদের ৬ মাসের জন্য আনা হয়েছে। এজন্যই তাদের বেলায় হয়তো ওয়ার্ক পারমিট প্রয়োজন পড়বে না।
এ সম্পর্কে বিনিয়োগ বোর্ডের একজন পরিচালক বলেন, যেই চুক্তির মাধ্যমেই করা হোক, বাংলাদেশে কোনো বিদেশি লোক টাকার বিনিময়ে কাজ করলে তার ওয়ার্ক পারমিট লাগবে। এর ব্যত্যয় ঘটানোর সুযোগ নেই। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত বছর মিসর থেকে ড্যাশ-৮ এর জন্য ৩ জন পাইলট ওয়ার্ক পারমিট ছাড়াই কাজ করে। এর আগে বিমানের একজন বিদেশি এমডিও ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া বিপুল অঙ্কের টাকা নিয়ে যান। ওই ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/104153