১৬ অক্টোবর ২০১৮, মঙ্গলবার, ৫:১১

প্রশ্ন ফাঁস, ঢাবি’র ‘ঘ’ ইউনিটের ফল প্রকাশ স্থগিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের অধীনে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের দিনক্ষণ ঠিক করে সোয়া দুই ঘণ্টার মধ্যে তা স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল সকাল ১০টা ৪৯ মিনিটে ফল প্রকাশের ঘোষণা দিয়ে গণমাধ্যমে প্রথম বিজ্ঞপ্তি পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর। এর দুই ঘণ্টা পর দুপুর ১টা ৪ মিনিটে আরেক বিজ্ঞপ্তিতে তা স্থগিতের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

এর আগে গত ১৩ই অক্টোবর শুক্রবার অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে টানা তিনবার ইউনিটটিতে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠেছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রোভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি নিজেদের করা মামলার এজাহারেও স্বীকার করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সাধারণ শিক্ষার্থী, ভর্তিচ্ছু ও প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো ইতিমধ্যে ভর্তি পরীক্ষাটি বাতিলের দাবি তুলে পুনরায় ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার দাবি তুলেছে।
তবে পরীক্ষা বাতিল হবে কিনা এ বিষয়ে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যক্তির বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

গতকাল সকাল ১০টা ৪৯ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষে ‘ঘ’ ইউনিটের ১ম বর্ষ সম্মান শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার ফল মঙ্গলবার দুপুর ১টায় প্রকাশ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রশাসনিক ভবনস্থ কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিসে (কক্ষ নং-২১৪) আনুষ্ঠানিকভাবে এই ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করবেন।’ এর সোয়া দুই ঘণ্টা পর দুপুর ১টা ৪ মিনিটে পাঠানো আরেক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘মাননীয় ভিসির দপ্তরের অ্যাসাইনমেন্ট অফিসারের প্রেরিত ভুল তথ্যের জন্য “আগামীকাল (আজ) ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে” মর্মে আজ সোমবার প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রেরিত হয়েছিল। ভিসি মহোদয়ের আদেশক্রমে এই প্রেস বিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম স্থগিত করা হলো। অনাকাঙ্ক্ষিত এই ভুলের জন্য বিনয়ের সঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করা যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যথাসময়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে।’

এদিকে গত শনিবার প্রশ্নফাঁস ও ডিজিটাল জালিয়াতির অভিযোগে ৬ জনকে আটক করেছে সিআইডি। এ ঘটনায় গত রোববার শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কামরুল আহসান। যেখানে আটক ৬ জনসহ চক্রের অন্যদের আসামি করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন- জাহিদুল ইসলাম (৪৫), ইনসান আলী রকি (১৯), মোস্তাকিম হোসেন (২০), সাদমান সালিদ (২১), তানভির আহমেদ (২১), আবু তালেব (১৯)। প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার করা মামলার এজাহারে প্রশ্নফাঁসের কথা স্বীকার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

যেখানে বলা হয়, ‘সিআইডির সাইবার ক্রাইম টিমের সহায়তায় ১৩ তারিখ রাত সাড়ে বারোটার দিকে তাদেরকে আলামতসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিরা ১২/১০/২০১৮ (পরীক্ষার দিন রাত) ১২টা ০৫ মিনিট থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত প্রশ্নফাঁস করে আসছে। আসামিরা তাদের দখলে থাকা মোবাইল সিমকার্ড, ইন্টারনেট, ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে জালিয়াতির মাধ্যমে বে-আইনিভাবে ডিজিটাল সিস্টেমে প্রবেশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন দপ্তরের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে তা স্থানান্তর করে অবৈধভাবে অর্থ গ্রহণ করে আসছে।’

http://mzamin.com/article.php?mzamin=140452