মেয়রপুত্র আফতাব উদ্দিন বিপ্লব। ছবি: সংগৃহীত
১০ অক্টোবর ২০১৮, বুধবার, ১১:১৪

রাষ্ট্রপতির ‘প্রাণভিক্ষায়’ সেই মেয়রপুত্র কারামুক্ত

হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ড পাওয়া লক্ষ্মীপুর পৌর মেয়র আবু তাহেরের বড় ছেলে আফতাব উদ্দিন বিপ্লব এখন কারামুক্ত।
লক্ষ্মীপুর কারাগার থেকে মঙ্গলবার সকালে তিনি ছাড়া পান। ১০ বছর ফেরারি ও ৭ বছর বন্দিজীবন কাটিয়ে এদিন তিনি বাড়িতে ফিরলেন। রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমতায় (প্রাণভিক্ষা) ফাঁসির দণ্ড থেকে মাফ পেয়েছিলেন বিপ্লব।

কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে বিপ্লব লক্ষ্মীপুর শহরের বাসায় আসেন। সকালে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নাস্তা করেন। ওই সময়ের বেশ কয়েকটি ছবি বিপ্লবের ছোট ভাই সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সভাপতি একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন।
কিছু সময়ের মধ্যে ছবিগুলো ফেসবুকে ভাইরাল হয়। তাহের পরিবার ও বিপ্লব অনুসারীরা ফেসবুকে তাকে অভিনন্দন জানিয়ে ‘মুজিব আদর্শের সৈনিক’, ‘আপসহীন নেতা’ অভিহিত করে মন্তব্য করেন।
বিপ্লবসহ তাহের পরিবার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বলেও মন্তব্য করেন কেউ কেউ। এর আগে ২০১৪ সালে কারাগারে থেকে বিয়ে করে আলোচিত হন বিপ্লব।
লক্ষ্মীপুর কারাগারের জেলার শাহে আলম যুগান্তরকে বলেন, সকাল ৮টা ১০ মিনিটে বিপ্লব কারাগার থেকে ছাড়া পান। তার বিরুদ্ধে সর্বশেষ দুটি মামলার কাগজপত্রও আসায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০০০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও আইনজীবী (সাবেক পিপি) নুরুল ইসলামকে লক্ষ্মীপুর শহরের বাসা থেকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। এটি তখন দেশজুড়ে আলোচিত ঘটনা ছিল। তখন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহেরও ব্যাপক আলোচনায় ছিলেন। ওই সময় তিনি পৌর চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় ২০০৩ সালে তাহেরপুত্র বিপ্লবসহ পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড ও ৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারিক আদালত।
১০ বছরের বেশি সময় পলাতক থেকে বিপ্লব ২০১১ সালের ৪ এপ্রিল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
এরপর আবু তাহের ছেলে বিপ্লবের প্রাণভিক্ষা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৪ জুলাই তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান তার সাজা মওকুফ করেন।
পরের বছর আরও দুটি হত্যা মামলায় (কামাল ও মহসিন হত্যা) বিপ্লবের যাবজ্জীবন সাজা কমিয়ে ১০ বছর করেন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান।
পরে রাজনৈতিক বিবেচনায় ২০১২ সালে ফিরোজ হত্যা মামলা থেকেও বিপ্লবের নাম প্রত্যাহার করা হয়। তার আগে ২০০৯ সালে জাহেদ হত্যা ও এতিমখানায় অগ্নিসংযোগ মামলা থেকে বিপ্লবের নাম বাদ পড়ে।

https://www.jugantor.com/country-news/99199