১০ অক্টোবর ২০১৮, বুধবার, ১১:১১

অভিযান-তল্লাশি ঘরে ঘরে

২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের ঘরে ঘরে চলছে অভিযান। বিশেষ করে ২১ আগস্ট মামলার রায় আজকের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গত দু’রাত রাজধানীসহ সারা দেশে এই অভিযান চলে। গ্রেফতার করা হয় অনেককে। ঘরে ঘরে তল্লাশির কারণে অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার এড়াতে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। এ দিকে, রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

কয়েক দিন ধরেই রাজধানীসহ সারা দেশে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চলছে। ঝালকাঠির এক যুবদল কর্মী গতকাল বলেন, তার বাড়িতে প্রায় প্রতিদিনই পুলিশ যাচ্ছে। যে কারণে তিনি এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। গত ১৫ দিনে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৮টি। এভাবে অনেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধেই মামলা হচ্ছে। যে কারণে নেতাকর্মীরা ভয়ে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। অপর এক নেতা বলেন, এমন কোনো নেতাকর্মী নেই, যার বাড়ি পুলিশ যাচ্ছে না।

রাজধানীতেও চলছে গ্রেফতার ও তল্লাশি অভিযান। এমনকি, সিনিয়র নেতারাও বাদ যাচ্ছেন না এ থেকে। গতকাল সন্ধ্যার পরে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের পল্টন অফিসে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখানে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয় বলে জানা গেছে। কামরাঙ্গিরচরের এক নেতা জানিয়েছেন, গত দু’দিনে তিন দফায় পুলিশ তার বাসায় গেছে। বংশাল এলাকার এক ছাত্রদল নেতা বলেছেন, তার বাসায় পুলিশ কয়েকবার গেছে। এলাকার এমন কোনো নেতাকর্মী নেই, যাদের বাসায় পুলিশ যায়নি। ছাত্রদল নেতা ইসহাক সরকারের বাড়ির আশপাশে সারাক্ষণ পুলিশ থাকছে। খিলগাঁও এলাকার এক নেতা বলেছেন, তার বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুলিশ তার বাড়িতে কয়েক দফা গেছে। তিনি অন্যত্র অবস্থান করায় তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের একাধিক নেতা বলেছেন, এমন কোনো নেতাকর্মীর বাসা-বাড়ি নেই, যেখানে পুলিশ যায়নি। আর যাকে পাচ্ছে তাকেই ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, বাসায় ফোন নম্বর দিয়ে ওই নম্বরে ফোন করতে বলে আসছেন।
এ দিকে, রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল রাজধানীতে বাড়তি নিরাপত্তা দেখা গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। তাতে সাধারণ পথচারীদেরকেও তল্লাশি করতে দেখা গেছে। রাজধানীর রেলস্টেশন, বাসটার্মিনাল, লঞ্চ টার্মিনালে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানিয়েছে।

একাধিক সূত্র বলেছে, ২০ দলীয় জোটের নেতাদের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করাসহ তাদের প্রতি গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। এমনকি, তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপরও নজরদারি চলছে। একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ২১ আগস্টের মামলার রায়কে ঘিরে যাতে কেউ যাতে কোনোরূপ নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আজ বাড়তি পুলিশ মোতায়েনসহ সাদা পোশাকেরও বিপুল পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। আদালত চত্বর ও আশপাশের এলাকাগুলোসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতেও তারা দায়িত্ব পালন করবেন।

 

http://www.dailynayadiganta.com/last-page/355823