ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন -
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, রবিবার, ১০:২৭

সাক্ষাৎকারে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে অসহায় করা হয়েছে আমাদের

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করে বলেছেন, আপনি অপরাধ করেছেন কি করেন নাই সেটা কোনো বিষয় নয়, পুলিশ মনে করলেই হবে আপনি অপরাধ করেছেন। ব্যস, তাহলেই পুলিশ আপনাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যেতে পারবে। এ অবস্থায় একজন সাংবাদিক হিসেবে, মানুষ হিসেবে আমার স্বাধীনতা, নিরাপত্তা কোথায়? এ আইনের মাধ্যমে আমাদের অসহায় করে ফেলা হয়েছে। আমাদের অধিকার, স্বাধীনতার কোনো নিশ্চয়তা রাখা হয়নি। আমি অপরাধ না করলেও শুধু সন্দেহের বশে আমাকে জেলে নিতে পারবে পুলিশ। জেলে রেখে তদন্ত করবে আমি অপরাধ করেছি কি করি নাই। তো তদন্তে যদি প্রমাণিত হয় আমি অপরাধ করিনি, তখন বিনা কারণে আমার গ্রেফতার আর জেল খাটার কী হবে?
নয়া দিগন্তের সাথে গতকাল টেলিফোন সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। সংসদে সদ্য পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমার স্বাধীনতা, আমার মানবাধিকার কোথায়? সংবিধানে তো একজন মানুষ হিসেবে আমার এসব অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। সেসব আর থাকল কোথায়? নতুন আইনের মাধ্যমে সব তো নস্যাৎ করে ফেলা হয়েছে। সত্য-মিথ্যা নির্ণয় করার আগেই আমাকে গ্রেফতার করতে পারবে পুলিশ। এর জবাবদিহিতা কোথায়? আইন সঠিকভাবে প্রয়োগ হবে তার নিশ্চয়তা কোথায়?

রিমান্ড, আসামি গ্রেফতারের পর টাকা-পয়সার লেনদেনসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, কোনো সভ্য দেশে আইনজীবীর উপস্থিতি ছাড়া রিমান্ড চলতে পারে না। আমাকে ধরে নিয়ে পুলিশ চড় থাপ্পড় মারলে আমি তো মান সম্মানের ভয়ে কাউকে তা বলতেও পারব না। এর প্রতিকার কোথায়?
দেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা শেষ হয়ে যাচ্ছি।
দলীয়ভাবে সাংবাদিকদের বিভক্তির বিষয় সমালোচনা করে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, আগে সাংবাদিকদের মধ্যে এসব ছিল না। এখন প্রকাশ্যে অনেক সাংবাদিক দলীয় পরিচয় দিয়ে চলেন, দলীয় পরিচয়ে বিভক্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, গণমাধ্যমকে বলা হয় রাষ্ট্রের ফোর্থ স্টেট বা চতুর্থ স্তম্ভ। সেই ফোর্থ পিলার ভেঙে পড়েছে। আর বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে এর সুযোগ নিচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। স্বাধীন শক্তিশালী গণমাধ্যম বিদ্যমান থাকা দেশের জন্যই কল্যাণকর।

 

http://www.dailynayadiganta.com/first-page/353170