২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, শনিবার, ৯:৩৮

সাক্ষাৎকারে সৈয়দ আনোয়ার হোসেন

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণতন্ত্রের চেতনাবিরোধী

সৈয়দ আনোয়ার হোসেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক ও ডেইলি সানের সাবেক সম্পাদক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেছেন, সংসদে সদ্য পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণতন্ত্রের চেতনাবিরোধী। এ আইন কার্যকর হলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিপন্ন হবে। মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে না। সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা থাকবে না।

গতকাল দৈনিক নয়া দিগন্তকে দেয়া টেলিফোন সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দরকার নেই তা আমি বলছি না। আইনের প্রয়োজন আছে। কিন্তু যে আইন পাস করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সমালোচনা চলছে। পুলিশের হাতে অনেক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতারের যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে তার পরিণতি মারাত্মক এবং ভয়াবহ হবে। তিনি বলেন, পুলিশ একটি প্রশ্নবিদ্ধ প্রতিষ্ঠান। আইনে সরকারের চেয়ে তাদের হাতে ক্ষমতা বেশি দেয়া হয়েছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করে সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, মানুষের তথ্য জানার অধিকার বা রাইট টু ইনফরমেশন অ্যাক্টেরও পরিপন্থী এ আইন। তা ছাড়া বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ ধারায় চিন্তা, বিবেক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে তারও ব্যত্যয় ঘটনো হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারায়।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে একটি আমলাতান্ত্রিক আইন আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, আমি আশা করেছিলাম সংবাদমাধ্যমের লোকজনের সাথে আলোচনা করে সরকার একটি ভারসাম্যপূর্ণ আইন প্রণয়ন করবে। কিন্তু তা হয়নি। তবে সর্বশেষ তথ্যমন্ত্রী সম্পাদক এবং সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনার যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা একটি আশার দিক এবং আশা করছি সরকার আইনের প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়গুলো বিবেচনা করবে।
নির্বাচনের আগে এ ধরনের আইন প্রণয়নের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ভিন্নমত দমন সব সময় বিরোধী দলের লোকজনের হয় তা নয়। সরকারের মধ্যেও কেউ কেউ ভিন্নমত প্রকাশ করতে পারেন। কিন্তু এ আইনের ফলে সার্বিকভাবে মানুষের ভিন্নমত প্রকাশের পথ রুদ্ধ হবে। গণতান্ত্রিক চর্চা ও সাংবাদিকতা বিপন্ন হবে।

http://www.dailynayadiganta.com/first-page/352893