১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বুধবার, ১০:০১

রোহিঙ্গা নিধন স্পষ্ট গণহত্যা

জাতিসঙ্ঘ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের রিপোর্ট

রয়টার্স ও আনাদোলু

রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসার পথে মারা যাওয়া সন্তান কোলে এক রোহিঙ্গা পিতা : ফাইল ফটো -
মিয়ানমারে শান্তির জন্য দেশটির সেনাবাহিনীকে অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাতিসঙ্ঘ গঠিত স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যত দিন আইনের ঊর্ধ্বে থাকবে তত দিন দেশটিতে শান্তি ফিরবে না বলে মন্তব্য করা হয়েছে মিশনের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টে। এতে বলা হয় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত চারটি মানদণ্ডে রোহিঙ্গা নিধনকে সুস্পষ্টভাবে গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।

জাতিসঙ্ঘের মিয়ানমারবিষয়ক স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনী গণহত্যা চালাতে চেয়েছিল কেননা মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গা মুসলমানরা ছিল ‘সুরক্ষিত জনগোষ্ঠী’। কিন্তু তাদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনী হত্যা, শারীরিক অথবা মানসিক নিপীড়নসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত সব ধরনের অপরাধ সংঘটিত করেছে।
জাতিসঙ্ঘ মিশন অবিলম্বে এ বিষয়ে অভিযুক্ত নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা তদন্ত ও বিচারের জন্য একটি উপযুক্ত প্রসিকিউটর কমিটি এবং আইনি আদালত গঠনের আহ্বান জানিয়েছে। অন্টারিও ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির (ওআইডিএ) দেয়া তথ্য মতে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মিয়ানমারের সরকারি বিভিন্ন বাহিনীর হাতে প্রায় ২৪ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম নিহত হয়েছে।

জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘ ১৫ মাসের তদন্ত শেষে তিন সদস্যের এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন ৪৪০ পৃষ্ঠার যে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে রাখাইনসহ মিয়ানমারের তিনটি রাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ভয়ঙ্কর সব বিবরণ উঠে এসেছে।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সদস্যরা জাতিসঙ্ঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেছেন, যার মধ্যে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এবং সিনিয়র পাঁচ জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি সুপারিশ করা হয়েছে। গত আগস্টের শেষে ২০ পৃষ্ঠার এক প্রাথমিক রিপোর্টে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের মূল পর্যবেক্ষণগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরার পাশাপাশি বেশ কিছু বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছিল। তদন্তকারীরা গতকাল মঙ্গলবার জেনেভায় জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে তাদের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট উপস্থাপন করেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যাপ্তির দিক দিয়ে ‘অনন্য’ এই রিপোর্টে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর (তাতমাদো) মানবাধিকার ও আইন লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর স্পষ্ট একটি ‘প্যাটার্ন’ চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই সাথে অপরাধের মাত্রা নিয়ে বিশদ আইনি পর্যালোচনা ও সুপারিশ রয়েছে সেখানে।
এই মিশনের নেতৃত্ব দেন ইন্দোনেশিয়ার সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মারজুকি দারুসমান। সদস্য হিসেবে ছিলেন শ্রীলঙ্কার আইনজীবী নারী অধিকার বিশেষজ্ঞ রাধিকা কুমারস্বামী এবং অস্ট্রেলিয়ার সাবেক মানবাধিকার কমিশনার ও দেশটির আইন সংস্কার কমিশনের সাবেক সদস্য ক্রিস্টোফার ডমিনিক সিডোটি। জেনারেল মারজুকি দারুসমান বলেছেন, ‘তাতমাদো যত দিন আইনের ঊর্ধ্বে থাকবে, তত দিন দেশটিতে শান্তি ফেরানো সম্ভব হবে না। মিয়ানমারের উন্নয়ন এবং একটি আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়ে ওঠার পথে দেশটির সেনাবাহিনীই সবচেয়ে বড় বাধা।’

ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান বলেছেন, মিয়ানমারে শান্তি চাইলে সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংসহ তাতমাদোর শীর্ষ পর্যায়ের সব কর্মকর্তাকে সরিয়ে দিয়ে এই বাহিনীকে এমনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে, যাতে এর পুরো নিয়ন্ত্রণ বেসামরিক প্রশাসনের হাতে থাকে। মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক পরিবেশ চাইলে এর কোনো বিকল্প নেই বলেই জাতিসঙ্ঘের তদন্তকারীরা মনে করছেন।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কিছু স্থাপনায় হামলার অভিযোগে রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে শুরু হয় সেনাবাহিনীর অভিযান। সেই সাথে শুরু হয় বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে রোহিঙ্গাদের ঢল। তাদের কথায় পাওয়া যায় নির্বিচার হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহ বিবরণ। জাতিসঙ্ঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা মিয়ানমারের বাহিনীর ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে অভিহিত করে আসছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মিয়ানমার বলে আসছে, তাদের ওই লড়াই ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে, কোনো জাতিগোষ্ঠীকে নির্মূল করতে নয়।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সরকারের ওই দাবি নাকচ করে দিয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছিল, রাখাইনে যে মাত্রার নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলা হচ্ছে, তার তুলনায় গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়ার পার্থক্যটা খুবই স্পষ্ট। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন বলেছে, রাখাইনে যে ধরনের অপরাধ হয়েছে, আর যেভাবে তা ঘটানো হয়েছে, মাত্রা, ধরন এবং বিস্তৃতির দিক দিয়ে তা ‘গণহত্যার অভিপ্রায়কে’ অন্য কিছু হিসেবে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টার সমতুল্য।

গত বছর গঠিত জাতিসঙ্ঘের এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সদস্যরা বাংলাদেশসহ পাঁচটি দেশে আশ্রয় নিয়ে থাকা ৮৭৫ জন রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকার নিয়ে, নথিপত্র, ভিডিও, ছবি এবং স্যাটেলাইট ইমেজ পর্যালোচনা করে তাদের রিপোর্ট তৈরি করেছেন। তদন্তকারীরা দেখতে পেয়েছেন, রাখাইনে সেনাবাহিনীর নিপীড়নের যে ধরন, তা শান ও কাচিন অঞ্চলে জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর ওপর দমনপীড়নের ধরনের সাথে পুরোপুরি মিলে যায়। নির্যাতিত রোহিঙ্গা আর প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণের ভিত্তিতে তুলাতলি গ্রামে সেনাবাহিনীর অভিযানের লোমহর্ষক বিবরণ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে।
সেখানে দেখানো হয়েছে, পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করা রোহিঙ্গাদের কিভাবে ধাওয়া করে ধরা হচ্ছে, সৈন্যরা প্রথমে তাদের গুলি করছে, তাতেও মৃত্যু না হলে প্রত্যেকের গলা কেটে ফেলা হচ্ছে। তারপর তারা নজর দিচ্ছে নারী ও শিশুদের দিকে।

ওই গ্রামে শিশুদেরও কিভাবে গুলি করে মারা হয়েছে, মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে নদীতে বা আগুনে ছুড়ে ফেলা হয়েছেÑ সেসব ভয়ঙ্কর বিবরণও এসেছে এতে।
এই গণহত্যা শেষে মেয়েদের ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে গ্রামে। পালা করে ধর্ষণ করার পর কাউকে কাউকে হত্যা করা হয়েছে। বুড়ো, শিশু আর নির্যাতিত নারীদের ঘরের ভেতরে আটকে আগুন দেয়া হয়েছে বাড়িতে। রাখাইনের তুলাতলি গ্রামের এই বর্বরতাকে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জঘন্যতম অপরাধের নজির হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে এতে। জাতিসঙ্ঘের এই তদন্তকারী দলের সদস্য রাধিকা কুমারস্বামী বলেন, রাখাইন, শান আর কাচিন রাজ্যে বর্বরতার যে মাত্রা সেনাবাহিনী দেখিয়েছে, তার সাথে তুলনা করার মতো আর কোনো ঘটনা তিনি দেখেননি।
সু চির কঠোর সমালোচনা : কঠোরতম ভাষায় মিয়ানমারের বেসামরিক সরকারের নেত্রী অং সান সু চির সমালোচনা করেছেন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের একজন সদস্য। অস্ট্রেলিয়ার মানবাধিকার আইনজীবী ক্রিস্টোফার ডমিনিক সিডোটি বলেছেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর যে নির্মমতা মিয়ানমারের সেনাবাহিনী চালিয়েছে, তা ঢাকতে গিয়ে নোবেল বিজয়ী সু চি নিজেকে পরিণত করেছে ‘লজ্জা নিবারণের ডুমুরপত্রে’।

ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের ৪০০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট উপস্থাপনের আগে যুক্তরাজ্যের টেলিগ্রাফকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। সিডোটি বলেন, রাখাইনে সহিংসতা থামাতে ব্যর্থতার দায় মিয়ানমারের নেত্রী সু চি এড়াতে পারেন না। সিডোটি বলেন, সু চি প্রথম যে কাজটি করতে পারতেন তা হলো- রাখাইনে গণহারে ধর্ষণের যে বিপুল অভিযোগ এসেছে সেসব ‘ভুয়া’ বলে উড়িয়ে না দিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষে সাফাই গাওয়া বন্ধ করা। ২০১৫ সালের নির্বাচনে ৮০ শতাংশ মানুষের ভোট তিনি পেয়েছেন। এটা তাকে বিপুল নৈতিক সমর্থন ও কর্তৃত্ব দিয়েছে।
সিডোটি বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের সুবিচারের জন্য আইসিসি হতে পারে একটি পথ। এর বাইরে রাখাইনের ঘটনার বিচারের জন্য আলাদাভাবে বিশেষায়িত একটি ফৌজদারি আদালত গঠন করা যেতে পারে। তা ছাড়া যে মাত্রার অপরাধ সেখানে হয়েছে, তাতে যেকোনো দেশ তার সার্বজনীন বিচারিক এখতিয়ার কাজে লাগাতে পারে।

কূটনৈতিক প্রতিবেদক জানান, জেনেভায় জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে গতকাল মিয়ানমার পরিস্থিতির ওপর অনুষ্ঠিত বিতর্কে মিশনের রিপোর্ট সুপারিশসহ আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপন করা হয়। এর পর রিপোর্টের ওপর মানবাধিকার কমিশনের সদস্য রাষ্ট্রগুলো বিতর্কে অংশ নেয়। ব্রিটেন, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তানসহ অধিকাংশ দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) তথ্যানুসন্ধান মিশনের রিপোর্টকে স্বাগত জানিয়ে রাখাইনে নৃশংসতায় জড়িতদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানায়। কিন্তু রাশিয়া সরাসরি মিয়ানমারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে প্রতিবেদনের তথ্যের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তোলে। আর চীন রাখাইন পরিস্থিতিকে জটিল হিসেবে আখ্যায়িত করে বাংলাদেশের সাথে সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারকে উৎসাহিত করে।

বিতর্কে অংশ নিয়ে ওআইসির পক্ষে পাকিস্তানের প্রতিনিধি বলেন, মিশনের রিপোর্ট প্রতিবেদন হৃদয়বিদারক। রাখাইনে ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক প্রচারণা বন্ধ, অপরাধীদের যথাযথ আদালতের মাধ্যমে জবাবদিহিতা নিশ্চিত এবং রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা, নিরাপদ ও মর্যাদার সাথে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে হবে। প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও জাতিসঙ্ঘের সাথে সই করা চুক্তির বাস্তবায়ন মিয়ানমারকে নিশ্চিত করতে হবে।

ইইউ প্রতিনিধি বলেন, মিশন রাখাইনে গণহত্যা এবং কাচিন ও শানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তুলেছে। এখন পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার দায়িত্ব জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের। অপরাধীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে কাউন্সিল একটি স্বাধীন সত্তা (বডি) গঠন করতে পারে। রাখাইন পরিস্থিতি উন্নয়নে ওআইসির সাথে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে ইইউ প্রস্তুত রয়েছে।
ব্রিটেনের প্রতিনিধি বলেন, মিয়ানমারে নৃশংসতার সাথে জড়িতরা বিচার এড়িয়ে যেতে পারে না। মিয়ানমার অভ্যন্তরীণভাবে বিচারের ব্যবস্থা না করলে আন্তর্জাতিকভাবে তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য সহায়তা দিতে জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের ম্যান্ডেট বাড়ানো যেতে পারে।

কানাডার প্রতিনিধি বলেন, রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাত্রা বিশ্ববিবেককে নাড়া দিয়েছে। বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানো প্রয়োজন। তারা দুর্যোগ ও রোগব্যাধির ঝুঁকিতে রয়েছে।
মিয়ানমারের ওপর এখতিয়ার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) রুলিংকে স্বাগত জানায় ফ্রান্স। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করে জার্মানি।
রাখাইন সঙ্কট মোকাবেলায় আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে মালয়েশিয়া।
রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের জন্য আর্থিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে কুয়েত।
সৌদি আরবের প্রতিনিধি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান রিয়াদের অগ্রাধিকারে রয়েছে। রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের নিপীড়ন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। উদ্বাস্তুদের সহায়তায় সৌদি আরব এ পর্যন্ত ৫ কোটি ডলার দিয়েছে। রাখাইন নৃশংসতার বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাপান।

অন্য দিকে তথ্যানুসন্ধান মিশনের প্রতিবেদনকে একপেশে আখ্যায়িত করে মিয়ানমার প্রতিনিধি বলেন, এই প্রতিবেদন মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য এবং সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের পথে বাধা। এনজিও এবং মানবাধিকার সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা এ প্রতিবেদন বিভ্রান্তিকর। এটি শান্তিপ্রতিষ্ঠায় মিয়ানমার সরকারের প্রচেষ্টাকে খাটো করেছে। তিনি বলেন, উদ্বাস্তু প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর চাপ দেয়ার প্রয়োজন নেই। প্রত্যাবাসন চুক্তি বাস্তবায়নে জাতিসঙ্ঘ মাঠপর্যায়ে কাজ করছে।


http://www.dailynayadiganta.com/first-page/350346