১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:২২

ভারতীয় পণ্য পরিবহনে মন্ত্রিসভার সায়

চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর

চট্টগ্রাম এবং মংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য সে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পরিবহনের জন্য একটি চুক্তির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলমান ‘সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সুদীর্ঘ করার উদ্দেশ্যে’ ‘এগ্রিমেন্ট অন দ্য ইউজ অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড মংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস টু অ্যান্ড ফর্ম ইন্ডিয়া বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড ইন্ডিয়া’ শীর্ষক চুক্তির খসড়ায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তেজগাঁও কার্যালয়ে গতকাল সোমবার শীর্ষক চুক্তির মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে চুক্তির খসড়াটি অনুমোদনের পর সচিবালয়ে ফিরে সাংবাদিকদের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ও মংলা পোর্টে যোগাযোগের জন্য যে কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক তৈরি করা হচ্ছে, তার চুক্তি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এখানে প্রভিশন রাখা হয়েছে নেপাল ও ভুটানও ইচ্ছা প্রকাশ করলে এতে যুক্ত হতে পারবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশের যান ব্যবহার হবে। এটি ট্রানজিট ঠিক না, কারণ আমাদের পরিবহন ব্যবহার করতে হচ্ছে। আমাদের আইন অনুযায়ী শুল্ক ও ট্যাক্স তাদের দিতে হবে। প্রস্তাবিত চুক্তি অনুযায়ী মালবাহী কার্গো শনাক্ত করতে ‘ট্র্যাকিং সিস্টেম’ ব্যবহার করা হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব চুক্তির শর্তাবলির বিষয়ে বলেন, পণ্যসামগ্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে শুধু বাংলাদেশের যান ব্যবহার করা হবে। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিয়মাবলি (গ্যাট) এবং দেশের নিয়ম মেনে চলতে হবে, শুল্ক বিভাগ ডিউটি ও ট্যাক্সের সমপরিমাণ বন্ড গ্রহণ করবে। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে মালামাল পরিবহনের জন্য গ্যাট নীতিমালা অনুসারে শুল্ক/কর ছাড়া চার্জ-ফি ও পরিবহন খরচ আদায় করা হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশের স্থলবন্দর ব্যবহার করায় স্থল বন্দরের দক্ষতা বাড়াতে মাশুল আদায় করা হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের সক্ষমতার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। প্রস্তাবিত চুক্তিতে কয়েকটি রুটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছেÑ চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর থেকে আগরতলা ভায়া আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া), চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর থেকে ডাউকি ভায়া তামাবিল (সিলেট), চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর থেকে সুতারকান্দি ভায়া শেওলা (সিলেট) এবং চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর থেকে বিবিরবাজার ভায়া শ্রীমন্তপুর (কুমিল্লা)। চুক্তিটি পাঁচ বছরের জন্য হবে এবং যেকোনো পক্ষ প্রয়োজনে যেকোনো সময় চুক্তি স্থগিত রাখতে পারবেন।
শফিউল আলম বলেন, চুক্তিটি পাঁচ বছরের জন্য সম্পাদিত হবে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে আরো পাঁচ বছর বলবৎ থাকবে। তবে ছয় মাসের নোটিশে যেকোনো পক্ষ চুক্তিটি বাতিল করতে পারবে। জরুরি প্রয়োজনে বা রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে যেকোনো পক্ষ চুক্তির বাস্তবায়ন সাময়িকভাবে স্থগিত করতে পারবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, চুক্তি মোতাবেক নৌসচিবদের নেতৃত্বে গঠিত ইন্টার গভর্নমেন্ট কমিটির মাধ্যমে উদ্ভূত সমস্যা নিরসন করা হবে এবং উভয় দেশের কর্মকর্তা সমন্বয়ে কাস্টমস অ্যান্ড পোর্ট সাব গ্রুপ গঠন করা হবে।

চীনের সাথে অংশীদারিত্বে কোম্পানি করার প্রস্তাব অনুমোদন : মন্ত্রিসভার বৈঠকে সরকারি মালিকানাধীন ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এবং চীনের হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি চায়না ৪৯ ও ৫১ অনুপাতের অংশীদারিত্বে একটি কোম্পানি করার প্রস্তাবও অনুমোদন দেয়া হয়।
শফিউল আলম বলেন, এই কোম্পানির নাম দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড। তারা স্মার্ট মিটার থেকে শুরু করে সব ধরনের ইলেকট্রিক্যাল সরঞ্জাম উৎপাদন করতে পারবে। এটির অনুমোদিত পুঁজি হবে ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত পুঁজি হবে ২৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১৪ কোটি ৫৮ লাখ দেবে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি এবং ১৪ কোটি এক লাখ দেবে হেক্সিং। কোম্পানির বার্ষিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা হবে পাঁচ লাখ সিঙ্গেল ফেইজ স্মার্ট পেমেন্ট মিটার।


http://www.dailynayadiganta.com/first-page/350033