১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, শুক্রবার, ১০:৩৯

ভাঙনরে কান্না

উত্তাল পদ্মা। ভাঙছে নদীর পাড়। নদীর ¯্রাতে ও র্ঘূণি ক্রমইে র্সবগ্রাসী হয়ে উঠছ। ভাঙছে দালান-বাড়-িসড়ক-হাট-বাজার-স্কুল। ভাঙছে মানুষরে মন। চোখরে সামনে সবকছিু বলিীন হয়ে যাচ্ছে নদীর্গভ। ভাঙনরে কবলে পড়ে র্সবস্ব হারয়িে মানুষ ছুটছে অজানা গন্তব্য।
হাজার হাজার গৃহহীন মানুষরে মাথা গােঁজার মতো ঠাঁই র্পযন্ত নইে। খোলা আকাশরে নচিে কোনমতে বঁেচে আছে তারা। খাদ্য নইে, পানি নইে, ওষুধ নইে। চলছে হাহাকার। অথচ দখোর যনে কউে নইে। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দওে পদ্মার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করছে।ে র্সবস্ব হারয়িে পথে বসছেে শত শত পরবিার। অন্যদকি, তস্তিার পানি বড়েে যাওয়ায় ডুবে যাচ্ছে চরাঞ্চল। ভাঙছে তস্তিা পাড়রে গ্রাম। হুমকীর মুখে পড়ছেে গ্রাম, শক্ষিা প্রতষ্ঠিান, মসজদি ও ক্লনিকি। পানি উন্নয়ন র্বোডরে হসিাবে গত সাত বছরে শরীয়তপুররে নড়য়িা উপজলোর প্রায় সোয়া ১৩ র্বগকলিোমটিার এলাকা নদীতে তলয়িে গছে। এর মধ্যে ২০১১-১২ থকেে ২০১৪-১৫ সময়কাল র্পযন্ত নড়য়িাতে প্রতবিছর গড়ে আধা র্বগকলিোমটিাররে বশেি এলাকা ভাঙনরে শকিার হয়। এরপর থকেে ভাঙন বাড়ছে তো বাড়ছইে। এ বছর জুলাই থকেে ভঙেছেে প্রায় ২ র্বগকলিোমটিার। এখনও সইে ভাঙন অব্যাহত আছ।ে
রাজবাড়ী জলোর গোয়ালন্দ উপজলোর দৌলতদয়িা ফরেঘিাট থকেে পাংশা উপজলোর সনেগ্রাম র্পযন্ত ৮৫ কলিোমটিার এলাকায় রয়ছেে নদীপথ। এই নদী পথে প্রতদিনি নতুন নতুন এলাকা ভাঙ্গনরে কবলে পরে র্সবস্ব হারয়িে পথে বসছে মানুষ। এলাকার মানুষরে কানে এখন নত্যি বাজছে ভাঙ্গনরে সুর। ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করলওে রাজবাড়ী শহররে আশপাশে কয়কেটি এলাকা ছাড়া ভাঙ্গনরোধে কোন ব্যবস্থা নয়েনি পানি উন্নয়ন র্বোড।

রংপুররে পীরগাছায় তস্তিা নদীর পানি বৃদ্ধি ও গত বুধবার রাত থকেে হঠাৎ পানি কমে যাওয়ায় তীব্র নদী ভাঙ্গন দখো দয়িছে।ে তস্তিা নদীর ভাঙনে ৪টি গ্রাম নদী র্গভে বলিনিসহ প্রায় পাঁচটি গ্রাম, দুটি শক্ষিা প্রতষ্ঠিান, মসজদি এবং একটি ক্লনিকি হুমকরি মুখে পড়ছে।ে
শরীয়তপুররে নড়য়িায় গত বুধবার থকেে পুরনো এলাকায় নতুন করে পদ্মার তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়ছে।ে তবে নড়য়িা উপজলোর মূলফৎগঞ্জে ভাঙ্গনরে যে তীব্রতা ছলি তা কছিুটা কমছে।ে নড়য়িা পৌরসভার বাঁশতলা নামক এলাকায় ভাঙ্গনরে তীব্রতা বড়েছে।ে বুধবার সকাল থকেে সন্ধ্যা র্পযন্ত বাঁশতলা ও সাধুরবাজারসহ অন্যান্য এলাকায় কমপক্ষে ৩০ টি কাঁচা-পাকা বসতঘর, ৫ দোকান ও ব্যবসা প্রতষ্ঠিান, ফসলি জমি ও রাস্তা পদ্মার্গভে বলিীন হয়ে গছে।ে মৌসুমী ব্যবসায়ীদরে ভীড় লক্ষ করা গছেে ভাঙ্গন কবলতি এলাকায়।

স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার থকেে এসব এলাকায় প্রায় ৩০টি কাঁচা-পাকা বসতঘর, দোকানপাট, ব্যবসা প্রতষ্ঠিান নদী র্গভে বলিীন হয়ে যাওয়ায় নতুন করে ভাঙ্গন আতংকে দশিহোরা এ অঞ্চলরে মানুষ। এছাড়াও ফসলি জম,ি পানরে বরজ, কলা বাগানসহ রাস্তাঘাট নদী র্গভে বলিীন হয়ে গছে।ে
ইতোমধ্যে নড়য়িা উপজলোর মূলফৎগঞ্জ বাজার, বাঁশতলা বাজার ও সাধুরবাজাররে প্রায় ৫শ’ ব্যবসা প্রতষ্ঠিানসহ ৮ শতাধকি স্থাপনা বলিীন হয়ছে।ে মারাত্মক ভাঙ্গনরে ঝুঁকতিে আছে মূলফৎগঞ্জ বাজাররে অবশষ্টি সহ¯্রাধকি ব্যবসা প্রতষ্ঠিান।
বসেরকারি হসিাব মত,ে এ বছর এসব এলাকায় ভাঙ্গনে কমপক্ষে ৫ হাজার পরবিার গৃহহীন হয়ে পড়ছে।ে এর মধ্যে অনকেইে খোলা আকাশরে নচিে মানবতের জীবন যাপন করছ।ে ভাঙ্গনরে খবর ছড়য়িে পড়ায় প্রতদিনি পদ্মার তীরে ভীড় করছে হাজারও উৎসুক জনতা। অল্প মূল্যে ঘর-বাড়,ি গাছপালা ক্রয় করছে সুযোগ সন্ধানীরা।

বুধবার বাঁশতলা এলাকার মালয়শেয়িা প্রবাসী সোহলে ঢালীর ২টি পাঁকা ভবন নদীতে বলিনি হয়ে গছে।ে
বসতবাড়ি ভাঙ্গনরে ঝুঁকতিে থাকা বাঁশতলা এলাকার জাকরি হোসনে বলনে, টাকার অভাবে গত ১ সপ্তাহ ধরে নজিরে বসতঘর ভঙ্গেে অন্যত্র সরাতে পারছি না। যে কোন মুর্হুতে বসতঘরখানওি নদী র্গভে বলিীন হয়ে যাব।ে একই পরস্থিতিতিে থাকা আলী আকবর বলনে, আমি ঘরবাড়ি নদী র্গভে হারয়িে এখন নদীর পাড়ইে কোন রকম ছাবড়া করে দনি কাটাচ্ছ।ি র্অধাহার-েঅনাহারে থাকতে হচ্ছে আমাদরে।

চরজুজরিা, মুলফৎগঞ্জ ও নড়য়িায় ভাঙ্গন কবলতি এলাকা ঘুরে ক্ষতগ্রিস্তদরে সঙ্গে আলাপ করে জানা গছে,ে নড়য়িা উপজলোর মুক্তাররে চর, কদোরপুর ইউনয়িন ও নড়য়িা পৌরসভায় মাত্র ১ দনিে পদ্মানদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে সাধুর বাজাররে হযরত বলোল (রাঃ) জামে মসজদি, বাঁশতলা এলাকায় নজরুল ইসলাম নজু ঢালী, কাদরে ঢালী, মো: ফরিোজ, গনি বপোরী, সোবাহান মাল, সাগর দওেয়ান, জমসি খান, রফকি ফালী, জামাল বপোরীসহ ৩০টি বসতঘর নদী র্গভে হারয়িে গছে।ে গনি বপোরীর পানরে বরজ, ফরিোজ ময়িার একটি কলা বাগানসহ কয়কে একর ফসলি জমি নদী র্গভে বলিীন হয়ে গছে।ে গত দু’ মাসে পদ্মা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে নড়য়িা উপজলোর দওেয়ান ক্লনিকি, রওসনারা সপংি মল, হলেথ কয়োর ক্লনিকি, গাজী কালুর ভবন, নড়য়িা উপজলো স্ব্যাস্থ্য কমপ্লক্সে নতুন ভবন ও ব্যবসা প্রতষ্ঠিানসহ সহ¯্রাধকি স্থাপনা বলিীন হয়ছে।ে ওয়াপদা বাজার ও সাধুর বাজাররে কমপক্ষে ২শ’ ব্যবসা প্রতষ্ঠিান নদী র্গভে বলিীন হয়ে গছে।ে এদকিে ৫০শয্যা বশিষ্টি নড়য়িা উপজলো স্বাস্থ্য কমপ্লক্সেরে মূল ভবন (নতুন) নদী র্গভে বলিীন হওয়ার পর ওই হাসপাতালরে আওতাধীন আরো ১২ টি ভবন যে কোন মুর্হুতে নদী র্গভে বলিীন হয়ে যাব।ে নড়য়িা উপজলোবাসীর স্বাস্থ্য সবোর জন্য একমাত্র ভরসা সরকারি এ হাসপাতালরে মূল ভবন নদীতে বলিীন হওয়ায় সরকারি স্বাস্থ্য সবো নয়িে চন্তিতি হয়ে পড়ছেনে উপজলোবাসী।

অন্যদকি,ে রংপুররে পীরগাছায় গত তনি দনি ধরে তস্তিা নদীর পানি বৃদ্ধি ও বুধবার রাত থকেে হঠাৎ পানি কমে যাওয়ায় তীব্র নদী ভাঙ্গন দখো দয়িছে।ে তস্তিা নদীর ভাঙনে ৪টি গ্রাম নদী র্গভে বলিনিসহ প্রায় পাঁচটি গ্রাম, দুটি শক্ষিা প্রতষ্ঠিান, মসজদি এবং একটি ক্লনিকি হুমকরি মুখে পড়ছে।ে গতকাল বৃহস্পতবিার সরজেমনিে ওই ভাঙন কবলতি এলাকায় গয়িে দখো যায়, ফসলী জমসিহ বসতভটিা ভাঙনরে কবলে পড়ছে।ে বারবার নদী ভাঙনে নঃিস্ব পরবিারগুলো এখন আশ্রয় হারয়িে অন্যরে ভটিায় মানবতের জীবন-যাপন করছ।ে স্থানীয়ভাবে কাজর্কম না থাকায় দুই বলো খাবার জোটাতওে পারছে না তারা। উপজলোর ছাওলা ইউনয়িনরে তস্তিা নদীর পাড়ে অবস্থতি গাবুড়ার চর,শবিদরে চর,কশিামত ছাওলা,চর শবিদবেসহ ৬টি গ্রাম গত দুই দনিে নদী র্গভে বলিনি হওয়ার পথ।ে এলাকাবাসীর অভযিোগে জানা যায়, পানি উন্নয়ন র্বোড র্কতৃপক্ষরে স্বচ্ছোচারতিা, অনয়িম, র্দুনীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে এ ভাঙনরে শকিার হতে হচ্ছে প্রতি বছর নদী পাড়রে লোকজনদরে। তারা জানান, ছাওলার ১০নং বোল্ডাররে পাড় থকেে আরও ৩ কলিোমটিার বোল্ডার দয়িে বাধঁ নর্মিাণ করে নদী শাসন করলে এ গ্রামগুলো রক্ষা হতো। র্কতৃপক্ষ অপরকিল্পতিভাবে ১নং ও ২নং বড়েি বাধঁ নর্মিাণ করলওে নদী ভাঙনরে হাত থকেে গ্রামগুলো রক্ষা পাচ্ছনো।

তস্তিা নদীর ভাঙনরে শকিার আহম্মদ আলী জানান, প্রতি বছর নদী ভাঙনরে ফলে পীরগাছা উপজলোর ছাওলা ইউনয়িন মানচত্রি থকেে ছোট হয়ে আসছ।ে এ অঞ্চলে গত ৫ বছরে প্রায় ১৫ হাজার হক্টের ফসলি জমসিহ প্রায় ৩ হাজার পরবিাররে বসতভটিা নদী র্গভে বলিীন হয়ে গছে।ে
এদকি,ে গোয়ালন্দ ( রাজবাড়ী) উপজলো সংবাদদাতা জানান, রাজবাড়ীর কালুখালী উপজলোয় পদ্মার ভাঙন কবলতি এলাকা ঘুরে দখো যায়, পদ্মার তীব্র স্্রোতে চোখরে নমিশিে হারয়িে যাচ্ছে বসতবাড়।ি মানুষ ভটিমোটি হারয়িে যতটুকু আসবাবপত্র বাচয়িে পারছে ঘোড়ার গাড়ি অথবা মহশিরে গাড়তিে করে অজানার উদ্দশ্যেে পারি জমাচ্ছ।ে স্থানীয়দরে সাথে কথা বলে জানা যায়, সাম্প্রতকিকালে অপরকিল্পতিভাবে নদী খননরে কারনে নদীর গতপিথ পরর্বিতন হওয়ায় এই ভাঙ্গনরে সৃষ্টি হয়ছে।ে
স্থানীয়দরে সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, রতনদয়িা ইউনয়িনরে লস্করদয়িা-নারায়নপুর, আলোকদয়িা, চররাজপুর, হরনিবাড়য়িা, ভবানীপুর, লস্করদয়িা, সাদারচর এবং কালকিাপুর ইউনয়িনরে নারানদয়িা গ্রামে পদ্মার ভাঙন ভয়ঙ্কর রূপ নয়িছে।ে এ ছাড়াও গত বছর ভাঙনে কাশমে মাতুব্বররে পাড়া, মুসা মোল্লার পাড়া, আরশদে তালুকদাররে পাড়া, শুকুর ব্যাপারীর পাড়া, মালকে মাতুব্বররে পাড়া, রোকন মাতুব্বররে পাড়া, করমি মাতুব্বররে পাড়া, নয়ন শখেরে পাড়া, ওহাব সরদাররে পাড়া, ইসলাম হাওলাদাররে পাড়া, ওমর বাজাইর্যাসর পাড়া, তারা ব্যাপারীর পাড়া, ওয়াজদে সরদাররে পাড়া বলিীন হয়ে গছে।ে
রতনদয়িা ইউনয়িনরে লস্করদয়িা গ্রামরে বাসন্দিা আকবর শখে বলনে, পদ্মার করালগ্রাসে আমার বসতভটিা আগে আরো দুইবার ভঙেছে।ে সবশষে গতকাল আবারো বাড়ি ভাঙতে হলো। জমজিরিাত সবকছিু ফলেে চলে যাচ্ছ।ি এখন পররে জমতিে কোনোভাবে মাথা গােঁজার ব্যবস্থা করতে হব।ে আপাতত সংসার চালাতে রাস্তার ওপর একটি ছোট চায়রে দোকান তরৈি করছে।ি সইে দোকানরে আয় দয়িইে সংসার চলছে কোনমত।ে
কালুখালী উপজলোর রতনদয়িা ইউনয়িন পরষিদরে চয়োরম্যান মহেদেী হাসনিা পারভীন বলনে, আমি দুই একদনি পরপরই নদী ভাঙ্গন এলাকা পরর্দিশন কর।ি মানুষরে মুখরে দকিে তাকানো যায় না। এক সময় যারা খয়েে পরে ভালো ছলি তারা আজ পথরে ভখিার।ি এই মানুষগুলোর জন্য কছিু করা দরকার।

কালুখালী উপজলো নর্বিাহী র্কমর্কতা (ইউএনও) মোহাম্মদ তোফায়লে আহমদে বলনে, রতনদয়িা ইউনয়িনরে হরনিবাড়য়িার চরে সনোনবিাস হওয়ার কথা ছলিো, ২০১৬ সালে সনোবাহনিীর মহড়ায় প্রসেডিন্টে এসছেলিনে। ওই সময় নর্মিতি প্রসেডিন্টেরে বশ্রিামাগার ও সনোবাহনিীর ব্যারাক গত বছর নদীর্গভে বলিীন হয়ে গছে।ে এ বছর শত শত বঘিা ফসলী জমি ও ঘরবাড়ি নদীর্গভে চলে গছে।ে আমরা ভাঙন ঠকোনোর জন্য পানি উন্নয়ন র্বোড ও র্উদ্ধতন র্কতৃপক্ষকে লখিতিভাবে জানয়িছে।ি
অন্যদকি,ে কুড়গ্রিামে ব্রহ্মপুত্র ও তস্তিার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়ছে।ে উজানরে ঢল ও বৃষ্টরি কারণে এ পানি বৃদ্ধতিে নদী তীরর্বতী শতাধকি চর প্লবতি হয়ছে।ে পানি প্রবশে করতে শুরু করছেে নম্নিাঞ্চলরে ঘরবাড়তিওে। তলয়িে যাচ্ছে এসব এলাকার রোপা আমন ক্ষতে। এতে আমন আবাদে এবার ক্ষতরি আশঙ্কা করছনে সংশ্লষ্টি কৃষকরা।

https://www.dailyinqilab.com/article/153296