১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, শনিবার, ১০:৫৮

নড়িয়ায় হাহাকার

ধনী-গরিব এক করে দিলো পদ্মা

৭ হাজার পরিবার সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা
ভাঙনের ঢেউ লেগেছে মাদারীপুরের শিবচরেও
ঢাকা-পিরোজপুর মহাসড়কের একাংশ মধুমতীর গর্ভে

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দেওয়ান পরিবার পদ্মার ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারিয়ে সাধারণ মানুষের কাতারে দাঁড়িয়েছে। দুই মাসের ব্যবধানে জমিদার দেওয়ান পরিবার এখন মাথাগোঁজার ঠাই খুঁজছে। এই পরিবারের পূর্ব পুরুষ বৃটিশ আমলে এমএলএ ছিল। সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় দেওয়ান পরিবার কেদারপুর ইউনিয়নসহ নড়িয়া উপজেলায় নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল। আজ তারা ভিটামাটি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারিয়ে পথে নেমেছে। মূলফৎগঞ্জ বাজার ও কেদারপুর ইউনিয়নে দেওয়ান পরিবার বাদ দিয়ে চিন্তা করাই ছিল দুস্কর। বাজারে স্বনামধন্য দেওয়ান ক্লিনিকসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বেশির ভাগই ছিল দেওয়ানদের দখলে। শত শত বিঘা জমি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ঘরবাড়ি, বাজার সবই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

ঐতিহ্যবাহী এই পরিবারের সদস্য নুর হোসেন দেওয়ান বলেন, আমার ৩ তলা বিশিষ্ট বসত বাড়ি এক মাস পূর্বেই নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। সেই থেকে একে একে দেওয়ান পরিবারের সকল বসত বাড়ি, জমিজমা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। আজ আমাদের কিছুই নাই। আমরা জমিদার থেকে কাঙ্গাল হয়ে গেছি।
কেদারপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ঈমাম হোসেন দেওয়ান বলেন, এলাকায় মহাদূযোর্গ চলছে। আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমরা এখন ভ‚মিহীনদের কাতারে চলে এসেছি। শুধু দেওয়ান পরিবার নয়, নড়িয়া উপজেলার ৭ হাজার পরিবার সর্বস্ব হারিয়ে এখন নিঃস্ব। ধনী-গরীব সবাই মিলেই খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। সর্বহারা মানুষের হাহাকারে নড়িয়ার আকাশ-বাতাশ ক্রমেই ভারি হয়ে উঠছে।
অন্যদিকে, উত্তাল পদ্মার ভাঙনের ঢেউ গিয়ে লেগেছে মাদারীপুরের শিবচরেও। পদ্মার কড়াল গ্রাসে শিবচরের ইউনিয়ন পরিষদ, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,হাট-বাজার, ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্তত ৬শ ঘর বাড়ি এরই মধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। পদ্মার পাশাপাশি আড়িয়াল খাঁ নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদারীপুর শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। হুমকীর মুখে পড়েছে শিবচরে প্রস্তাবিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জন্য প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা স্থানগুলোতেও। জানা গেছে, জাপানি সংস্থা নিপ্পন কোই স্থানগুলোর সম্ভাব্যতা নিয়ে এরইমধ্যে বিমান মন্ত্রণালয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, পদ্মার আগ্রাসী রুপ বিমানবন্দরের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত স্থানগুলোকেও হুমকীর মুখে ফেলেছে।
এদিকে, মুন্সিগঞ্জেও পদ্মার পানি ক্রমে বাড়ছে। ভাঙনের কবলে পড়েছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, কুড়িগ্রাম ও রংপুরের তিস্তার নদীর চরাঞ্চলসহ দেশের বেশ কিছু এলাকা। এছাড়া লক্ষীপুরের কমলনগর উপজেলার চরফলকন, চর কালকিনি, চর সাহেবের হাট ও চর পাটওয়ারীর হাট এ চারটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় মেঘনা নদীর ভাঙ্গন চলছে।
শরীয়তপুর নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ঈমাম হোসেন দেওয়ান বলেন, ১৯৯৬ সাল থেকে পদ্মার ভাঙ্গন শুরু হয়। ২০০৯ সালে আবার ভাঙ্গন শুরু হলে আমরা এলাকায় ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করি। প্রধানমন্ত্রী পদ্মার দক্ষিন তীর রক্ষাঁবাধ নির্মাণ ও চ্যানেল কাটার জন্য ১ হাজার ৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। পরিতাপের বিষয় সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রী আমাদের বিষয়টায় কোন গুরুত্বই দেয়নি। আমাদের এমপি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবহেলা ছিল। এ পর্যন্ত ৪ থেকে ৫ হাজার পরিবার পদ্মায় বিলিন হয়ে গেছে। ৪শত বছরের পুরাতন মূলফৎগঞ্জ বাজার যে বড় বড় বিল্ডিংগুলো দেখেছেন তা আমাদের ছিল। বাজারে আমাদের ৩ থেকে ৪শত দোকান ছিল। তা আজ নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। আমার চাচার প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী মুলফৎগঞ্জ হাসপাতালের একটা অংশ ভেঙ্গে গেছে। অন্যান্য সকল বিল্ডিংএ ফাটল ধরেছে। শেষ পর্যন্ত আমাদের চিকিৎসা সেবার জায়গাও থাকল না। আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক শামীম তার মায়েন নামে করা ফাউন্ডেশন থেকে কিছু সহায়তা দিয়েছে। এ ছাড়া সরকারী তেমন সহায়তা পায়নি ভাঙ্গন কবলিত এলাকাবাসী।

ধনী-গরিব এক করে দিলো পদ্মা
স্থানীয়রা জানায়, আগ্রাসী পদ্মার ভাঙনে নড়িয়ায় এখন ধনী-গরিব ভেদাভেদ নেই। যাদের একসময় বিলাসবহুল বাড়ি ছিল, তারা এখন ভূমিহীনদের কাতারে। ভিটা হারিয়ে বর্তমানে কেউ স্বজনের বাড়িতে, কেউ অন্যের জমিতে, আবার কোনো কোনো পরিবারের দিন কাটছে রাস্তার পাশে খুপরিতে। সর্বনাশা পদ্মার ভাঙন থেকে নড়িয়া পৌর এলাকা, মোক্তারেরচর ও কেদারপুর ইউনিয়নের কেউই রেহাই পায়নি। গত তিন মাসে এসব এলাকার পাঁচ হাজারেরও বেশি পরিবার গৃহহীন হয়েছে। গত দুই দিনে শরীয়তপুরের নড়িয়ার মুলফত্গঞ্জ বাজার ও বাঁশতলা বাজার এলাকায় ১৫টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ ৩০টি বসতবাড়ি বিলীন হয়েছে। এ ছাড়া পানের বরজ, কলাবাগানসহ কয়েক একর ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে।

এদিকে, পদ্মার রাজবাড়ী পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ছয় সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। ঘূর্ণমান স্রোতের কারণে ৮৫ কিলোমিটার নদীতীরবর্তী এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। তিন দফায় রাজবাড়ী শহরসংলগ্ন গোদারবাজার ঘাট এলাকায় প্রায় সাড়ে ৩০০ মিটার নদীতীর রক্ষা বাঁধের সিসি বক ধসে গেছে। ওই ধসের কারণে শহর রক্ষা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে।
মধুমতী নদীর ভাঙন থামছে না
এদিকে, চিতলমারীতে মধুমতী নদীর ভাঙন থামছে না। ভাঙন এখন তীব্র আকার ধারণ করেছে। একের পর এক ভাঙনের কবলে পড়ে বাড়িঘর, স্থানীয় বাজারের দোকানপাট ও ফসলি জমিসহ গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। তিন দিনের ভাঙনে মধুমতীসংলগ্ন শৈলদাহ বাজারের বেশ কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর নদীর পেটে চলে গেছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সকালে শৈলদাহ গ্রামে ঢাকা-পিরোজপুর সড়কের একাংশ মধুমতী গিলে ফেলেছে। নদীভাঙনের কবলে পড়ে গতকাল সকাল থেকে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

মাদারীপুরের শিবচরেও ভাঙন
অন্যদিকে, চলতি বছর পদ্মা নদীতে ২ দফা পানি বাড়ার সাথে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার ৪ ইউনিয়ন নিয়ে মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ভয়াবহ ভাঙ্গন আক্রান্ত হয় চরজানাজাত,বন্দরখোলা ও কাঠালবাড়ি ইউনিয়ন। গত ৩/৪ দিনে শতাধিক ঘর বাড়িসহ গত ৩ সপ্তাহে ৪টি বিদ্যালয় ভবন,৬ শতাধিক ঘরবাড়িসহ চরজানাজাত ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,কমিউনিটি ক্লিনিক,খাসেরহাটের অর্ধশত দোকান বিলীন হয়। চরাঞ্চলের চরজানাজাত ইউনিয়নের মাধ্যমিক স্কুল চরজানাজাত ইলিয়াছ আহম্মেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়, আঃ মালেক তালুকদার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মজিদ সরকার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বন্দরখোলার ৭২ নং নারিকেল বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীতে বিলীন হয়। ভাঙ্গনের তীব্রতায় অনেক স্কুল ঘর বাড়ি সরিয়ে নেয়ারও সময় পায়নি কর্র্তৃপক্ষ। স্কুলগুলো অন্যত্র কোনমতে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে। এরআগে গত বছর একটি মাদ্রাসা ও ২টি প্রাথমিক স্কুল ভবন নদীতে বিলীন হয়। ২০১৬ সালে ৩০ নং পূব খাসচর বন্দরখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবন বিলীন হয়। ২০১৫ সালে একই ইউনিয়নের ১টি ৩ তলা ভবন , ২টি দ্বিতল ভবনের প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৫টি বিদ্যালয় নদী গর্ভে বিলীন হয়। গত ১০ বছরে এ উপজেলায় ১৭ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় সাড়ে ৬ হাজার পরিবার নদী ভাঙ্গনে আক্রান্ত হয়ে নিঃস্ব হয়। একসাথে স্কুল ও বসতভিটা হারিয়ে অনেক শিশু কিশোর শিক্ষা থেকে ঝড়ে পড়ছে।

চরজানাজাত ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আঃ মালেক তালুকদার বলেন, দেশের অন্যান্য চরের চাইতে আমাদের সংসদ সদস্যর নিরলস পরিশ্রমে আমাদের চরগুলো অনেক আধুনিক ছিল। বড় বড় ভবনের স্কুল,পাকা রাস্তা,ইউনিয়ন পরিষদ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সবই ছিল। কিন্তু প্রতি বছরের ভাঙ্গনে আমরা এখন নিঃস্ব। এ বছরই ৪টি স্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, হাট বাজারসহ শত শত ঘর বাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। আমরা ভাঙ্গন প্রতিরোধ চাই। ভাঙ্গন আক্রান্ত ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলতান মাহবুব বলেন, পদ্মার বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল হলেও শিবচরের চরগুলো ছিল আধুনিক । প্রতিটি স্কুলেই ছিল ভবন। কিন্তু এ বছরই আমার স্কুলসহ ৪টি স্কুল ভবন নদীতে চলে গেছে। এতে স্বাভাবিক ভাবেই শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে। চরাঞ্চল রক্ষায় স্থায়ী বাধ দরকার।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আহমেদ বলেন, পদ্মা ও আড়িয়াল খা তীরবর্ত্তী শিবচরের ৮টি ইউনিয়ন। চলতি বছর পদ্মা নদী ভাঙ্গন আক্রান্ত হয়েছে ৩টি ইউনিয়ন। এ পর্যন্ত ৪টি স্কুল,ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,হাট বাজার, পাকা রাস্তাসহ ৬-৭শতাধিক ঘরবাড়ি আক্রান্ত হয়েছে। গত ১০ বছরে১৭ টি স্কুল নদীতে বিলীন হয়েছে।

লক্ষীপুরে মেঘনা নদীর ভাঙ্গন
লক্ষীপুর থেকে মো.কাউছার জানান, কমলনগর উপজেলার চরফলকন, চর কালকিনি চর সাহেবের হাট ও চর পাটওয়ারীর হাট এ চারটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিধিন মেঘনা নদীর ভাঙ্গন চলছে। ঘর বাড়ি হারিয়ে শত শত পরিবার একেবারে নি:শ্ব হয়ে যাচ্ছে। মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধে গত এক বছরে ৮ বার ধস নামে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। এরআগে ১৫ জুলাই ভোররাতে ওই বাঁধের দক্ষিণাংশের প্রায় দুইশ’ মিটারে ধস নামে। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু না হওয়ায় বাঁধের দুই পাশের এলাকায় অব্যাহতভাবে ভাঙছে। আশপাশের এলাকায় ভাঙনের কারণে বাঁধ ধসে পড়েছে। গত বর্ষা মৌসুমেও ওই বাঁধে পাঁচ বার ধস নামে। অনিয়মের মধ্য দিয়ে নিন্মমানের কাজ করায় বার-বার বাঁধে ধস নামছে বলে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন থেকে অভিযোগ করে আসছে। হুমকির মুখে রয়েছে পুরো বাঁধ। বাঁধে ধস দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে কমলনগর উপজেলার দু-লক্ষাধিক মানুষ। গত কয়েকদিনের তীব্র স্রোতের নদীর তীর এলাকার ঘর বাড়ি প্রতিদিন ভেঙ্গে পড়ছে।
লক্ষীপুর পানি উন্নয়ন র্বোড ও স্থানীয় এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে কমলনগর উপজেলার মাতাব্বরহাট এলাকায় এক কিলোমিটার বাধঁ নির্মাণে ব্যায় হয় ৪৮ কোটি ১১ লাখ টাকা। উক্ত কাজ পায় ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্ক লিমিটেড (ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান)। কিন্তু ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি না করে ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংকে দিয়ে তখন কাজ শুরু করেন। শুরুতে নিম্মমানের বালু ও জিও ব্যাগ দিয়ে কাজ শুরু করায় স্থানীয়দের চাপের মুখে পড়ে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনসহ নানান কর্মসুচি পালন করেন স্থানীয়রা।
তীব্র স্রোতে এক কিলোমিটার নির্মাণাধীন বাঁধের দু’পাশে ব্লক সরে ধসে পড়ছে। এতে করে জোয়ারের পানি ডুকে পড়েছে কিছু এলাকায়। এছাড়া ব্লক থেকে ব্লকের দূরত্ব বাড়ায় বাঁধের বেশ কিছু অংশ ফাঁকা হয়ে গেছে। ধস ঠেকাতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জিও ব্যাগ (বালু ভর্তি বিশেষ ব্যাগ) ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু করলে কোনভাবেই রক্ষা করা যাচ্ছেনা বাঁধ। এলাকাবাসীর দাবী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ায় অনিয়মের কারনেই বার বার বাাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে। জরুরী ভিত্তিতে আরো ৮ কিলোমিটার কাজ রামগতি আলেকজান্ডরের মত সেনাবাহিনী দিয়ে করলেই জেলার মানচিত্র থেকে কমলনগর উপজেলা রক্ষা পাবে।
লক্ষীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা মো.মুসা ভাঙ্গনের কথা স্বীকার করে জানন, আমরা প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মন্ত্রনালয়ে পাঠিয়েছি। অনুমোধন পেলে কাজ শুরু করবো।

https://www.dailyinqilab.com/article/153490