১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, শনিবার, ১০:৫৪

৫১ বছরে পদ্মায় বিলীন হয়েছে ৬৬ হাজার হেক্টর জমি

১৯৬৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৫১ বছরে ৬৬ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমি পদ্মা নদীতে বিলীন হয়েছে। মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির অধস্তন সংস্থা ‘নাসা আর্থ অবজারভেটরি’ স্যাটেলাইট থেকে ভূ-পৃষ্ঠের ওপর নজরদারি করে। এ পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে গত আগস্টে তারা ‘দ্য শেইপ অব ইরোসন’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে সংস্থাটি বলেছে, গত ৫১ বছরে পদ্মায় বিলীন হওয়া মোট জমি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহর শিকাগোর সমান। পদ্মার উপকূলে এ তীব্র ভাঙনের পেছনে প্রধানত দুইটি কারণ রয়েছে। একটি হলো, এটি প্রাকৃতিক ও মুক্ত পানি প্রবাহবিশিষ্ট নদী। বিভিন্ন সময়ে তীরবর্তী ভবনগুলো রক্ষা করতে বালুর বস্তা ফেলা ব্যতীত যার তীর সুরক্ষার তেমন ব্যবস্থা নেই।
দ্বিতীয়ত, নদীর তীরে বড় বালুচর রয়েছে যা দ্রুতই ধসে যেতে পারে।

নাসার বিজ্ঞানীরা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পদ্মা নদীর প্রস্থ, গভীরতা, গঠন ও সামগ্রিক আকারের পার্থক্য পর্যবেক্ষণ করেন। প্রতিবেদেন নাসার বিজ্ঞানীরা স্যাটেলাইটে ধারণকৃত সাম্প্রতিক ছবির সঙ্গে ১৯৮৮ সালে ধারণকৃত ছবির তুলনা করেছেন। প্রত্যেকটি ছবিতে নদীর পৃথক পৃৃথক ভূতাত্ত্বিক অবস্থা পাওয়া যায়। সাম্প্রতিক ছবিগুলো এ বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের শুষ্ক মৌসুমে ধারণ করা হয়। এসব ছবি বিশ্লেষণ করে নাসার গবেষকরা বলছেন, গত তিন দশকে পদ্মা নদী তুলনামূলক সংকীর্ণ ও সোজাসুজি বিস্তার লাভ করেছে। তবে, সম্প্রতি তা সাপের মতো এঁকেবেঁকে বিস্তৃত হচ্ছে। এছাড়া, পদ্মায় সবচেয়ে বেশি ভাঙন হয়েছে হরিরামপুর উপজেলার উপকূল অঞ্চলে।


এদিকে, পদ্মা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের ফলে নদী ভাঙন আরো হুমকির সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে নাসা। সংস্থাটির গবেষকরা বলছেন, পদ্মা সেতু নদী ভাঙনকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। তবে, কয়েকজন গবেষক এর বিপরীত কথাও বলেছেন। তাদের মতে, পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে ভূ-খণ্ড স্থির হতে পারে। সেতুর নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার পর নদী ভাঙন আরো হ্রাস পেতে পারে। তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মোটের ওপর নদী ভাঙনের পরিমাণ কমে এসেছে বলে জানিয়েছে নাসা।

 

http://mzamin.com/article.php?mzamin=135645