১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৫৯

গুলশান লেক উন্নয়নে বড় দুর্নীতির আশঙ্কা

৪শ’ কোটি টাকার প্রকল্প এখন ৫ হাজার কোটি

গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকার অনওয়ে ট্রাফিক সিস্টেমের নামে প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো অনুচিত হবে- ইকবাল হাবিব * ইতিমধ্যে প্রথম ধাপে লেক খনন ও উন্নয়ন কাজে ২৬০ কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে, কিন্তু এলাকাবাসীর কাছে কোনো উন্নয়নই দৃশ্যমান নয়
যানজট নিরসনের নামে গুলশান-বনানী-বারিধারা লেকের উন্নয়ন প্রকল্প ব্যয় ৪১৪ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে প্রায় ৫ হাজার (৪ হাজার ৮৮৬ কোটি) টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা ছাড়াই বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্টাডি রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রকল্পের বিশাল এ আকার বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এ অবস্থায় শুরুতেই জনমনে নানা প্রশ্ন ও সন্দেহ ঘুরপাক খাচ্ছে। কেননা, পর্যবেক্ষক মহলের মতে রাজউকের প্রকল্পের ইতিহাস হচ্ছে, ধাপে ধাপে সময় ও ব্যয় বৃদ্ধি।
এ সুযোগে অনিয়ম-দুর্নীতি জেঁকে বসে। শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, প্রাপ্ত সেবা সুযোগ-সুবিধার চেয়ে অর্থ খরচ হয়েছে অঢেল।
এক পরিসংখ্যান থেকে দেখা গেছে, হাতিরঝিল প্রকল্পে পাঁচ দফায় সভায় বাড়িয়েও রাজউক এখনও কাজ শেষ করতে পারেনি। এ প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হয়েছে, ৭৬৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। ১ হাজার ৪৭৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকার প্রকল্পের আকার এখন ২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা।
কুড়িল-পূর্বাচল ৩০০ ফুট সড়কসংলগ্ন দু’পাশের ১০০ ফুট খাল উন্নয়ন প্রকল্প কাজের শুরুতেই প্রকল্প ব্যয় ৫ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৯৫ সালে।
২ যুগ অতিবাহিত হলেও এখনও প্রকল্পের অর্ধেক কাজও শেষ হয়নি। শুরুতে এ প্রকল্পের ব্যয় ৩ হাজার ৩১১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা থাকলেও তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৭৮২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। রাজউকের অন্যান্য প্রকল্পগুলোরও একই চিত্র।
এ কারণে গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধিতে জনগণের উপকারের চেয়ে দুর্নীতিবাজদের পকেট ভারি হওয়ার আশঙ্কা অমূলক নয়। তারা এও মনে করেন, এখন প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার কথা বলা হলেও দেখা যাবে ধাপে ধাপে বেড়ে তা ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
এজন্য রাজউকের এ ঢাউশ প্রকল্পের সঙ্গে বিশ্লেষকদের অনেকে একমত পোষণ করেননি। যদিও পাল্টা যুক্তি আছে রাজউক ও বুয়েটের দায়িত্বশীল মহলের।
এ প্রসঙ্গে স্থপতি ও নগর বিশেষজ্ঞ ইকবাল হাবিব যুগান্তরকে বলেন, ‘গুলশান লেক উন্নয়নের প্রথম পর্যায়ের প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে আমি যুক্ত ছিলাম। পরে যখন দেখা গেল লেকের উন্নয়নে আরও কিছু সংস্কার করা দরকার। তখন প্রকল্প সংশোধনের চিন্তা করা হয়। এরপর রাজউক বুয়েটকে কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ করে। পরে এ সংক্রান্ত মূল স্টাডি বুয়েট করেছে।’
তিনি বলেন, ‘বুয়েট গুলশান-বনানী-বারিধারা লেককে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় অনওয়ে ট্রাফিক সিস্টেমের আওতায় আনতে পরামর্শ দিয়েছে। আর সে কারণে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে ৪ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে এ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে। আমি মনে করি, গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকায় অনওয়ে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট বাস্তবায়ন করা যৌক্তিক হবে না। কিন্তু বুয়েট ও রাজউক কেন জানি, প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে।’
এ প্রসঙ্গে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাছের খান যুগান্তরকে বলেন, ‘গুলশান লেকের উন্নয়নের নামে প্রকল্প ব্যয় কয়েকগুণ বাড়ানো হচ্ছে বলে শুনেছি। এক্ষেত্রে বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের স্টাডি রিপোর্টের ভিত্তিতে এ প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। সেটা অনুমোদন পর্যায়ে চলে গেছে বলে শুনেছি। এক্ষেত্রে আমার অভিমত, যে প্রক্রিয়ায় গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে, সেটা সঠিক পদ্ধতি নয়। একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েই এতবড় কাজ করানো কোনোভাবেই যৌক্তিক হতে পারে না। রাজউকের উচিত ছিল, এ ব্যাপারে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার আয়োজন করা। এর ফলে ভালো-মন্দ বিবেচনা করে গ্রহণযোগ্য পরামর্শের আলোকে প্রকল্প গ্রহণ করা সম্ভব হতো।’

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, এখন পর্যন্ত রাজউক ২৬০ কোটি টাকার লেক খনন ও উন্নয়ন কাজে খরচ করেছে। অথচ গুলশান-বনানী-বারিধারা লেকের কোনো উন্নয়নই দৃশ্যমান নয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়ক-ফুটপাত উন্নয়ন ও লেক খননের নামে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও প্রকৌশলীরা যোগসাজশ করে সব নয়ছয় করছেন। খনন কাজ না করেও বিল উঠিয়ে নিচ্ছেন। এসব কাজের কোনো হিসাব রাখছে না সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টি তদন্তের দাবি রাখে।
গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক খনন, উন্নয়ন, সংস্কার, আধুনিকায়ন এবং অভিজাত এসব এলাকার যানজট নিরসনকল্পে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু করেছে রাজউক। আর এ প্রকল্পটি অভিজাত তিন এলাকার লেককে কেন্দ্র করে বাস্তবায়িত হবে।
২০১০ সালে গৃহীত ৪১৪ কোটি টাকার প্রকল্পে লেক খনন ও ওয়াকওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাবনায় এর সঙ্গে গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট যুক্ত করে যানজট নিরসনের প্রস্তাবনা রয়েছে।
এক্ষেত্রে লেকগুলো কার্যকর প্রবাহমান করতে ৮০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে গুলশান-বনানী ও বারিধারা লেকের ২২২ একর আয়তন বেড়ে দাঁড়াবে ৩০০ একর, যা হাতিরঝিল প্রকল্পের সমপরিমাণ হবে।

এ প্রকল্প প্রসঙ্গে রাজউক ও বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের দাবি, জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে সরকারকে এমন প্রকল্প বাস্তবায়নের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। প্রথমে এটা নিয়ে নাগরিক সমাজের নানা রকম অভিমত থাকলেও বাস্তবায়ন পর্যায়ে সেটা থাকবে না। আর এখান থেকে দীর্ঘমেয়াদে জনগণ অনেক বেশি উপকৃত হবেন।
রাজউকের প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, বুয়েটের স্টাডি রিপোর্টে গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকার যানজট নিরসন করতে অনওয়ে ট্রাফিক সিস্টেম করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বনানী ১১ নম্বর সড়কে ছোট আকৃতির দুটি ফ্লাইওভার এবং শুটিং ক্লাব থেকে হাতিরঝিল-তেজগাঁও-নিকেতন তিন এলাকাকে সংযোগ করে আরও একটি ফ্লাইওভার নির্মাণের প্রস্তাবনা রয়েছে।

এ তিন ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য হবে ৫ দশমিক ৩৮ কিলোমিটার। গুলশান-১ নম্বরের ইন্টার চেঞ্জিং সরিয়ে নেয়া হবে বাড্ডা গুদারাঘাট এলাকায়। সেখানকার লেক সড়ক উঠিয়ে বড় আকৃতির ব্রিজ করা হবে। আর ব্রিজের উপরে দ্বিতল কাঠামো তৈরি করে সেখানে করা হবে ইন্টার চেঞ্জিং।
অন্যদিকে কুড়িল ব্র্যাক সেন্টারসংলগ্ন এলাকায় আরেকটি ইন্টার চেঞ্জিং করা হবে। আর প্রকল্প এলাকায় সাড়ে ১৫ কিলোমিটার নতুন সড়ক, ১৪ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে, ১৯ দশমিক ১৭ কিলোমিটার লেক পাড়, সাড়ে ১০ কিলোমিটার স্ট্রম ড্রেনেজ নির্মাণ এবং ৯টি ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।
আর এ প্রকল্প এলাকায় চারটি বোট (নৌ ঘাট) স্টেশন করা হবে। এফডিসিসহ হাতিরঝিলের বোর্ড স্টেশন থেকে ওয়াটার ট্যাক্সিতে এসব স্টেশনে যাতায়াত করা যাবে।

এ প্রসঙ্গে বুয়েটের অধ্যাপক ও লেকপ্রকল্পের কনসালট্যান্ট ড. মো. মিজানুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদনের জন্য একনেকে প্রেরণ করেছিল রাজউক। সেখান থেকে বুয়েটকে দিয়ে সার্ভে করার নির্দেশনা দেয়া হয়। এরপর রাজউক বুয়েটের কাছে আসে। পরে আমরা পরিবহন, পরিবেশ, স্ট্রাকচারাল বিশেষজ্ঞরা মিলে গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক প্রকল্পের ওপর দীর্ঘ সময় নিয়ে কাজ করে এ সুপারিশ করেছি। একনেক থেকে হাতিরঝিলের আদলে ট্রাফিক সিস্টেমকে প্রাধান্য দিয়ে সুপারিশ করতে বলা হয়েছিল। আমরা ট্রাফিক সিস্টেমকে প্রাধান্য দিয়ে এ সার্ভে করেছি। পুরো গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকার ট্রাফিক সিস্টেমকে অনওয়ে করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এ সুপারিশের ভিত্তিতে প্রকল্প ব্যয় বেড়েছে। এটা নিয়ে অনেকে সমালোচনা করছেন, সেটাও শুনছি। কিন্তু, আমরা যে কাজগুলো করে থাকি, জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে করি। আগে যে পরিকল্পনা নিয়ে লেকের উন্নয়ন করা হচ্ছিল, তাতে লেকের আধুনিকায়নের পাশাপাশি ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হতো। আর এখন লেকের আধুনিকায়নের পাশাপাশি পুরো গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকার ট্রাফিক সমস্যার সমাধান হবে। এটা অনেক বড় উন্নয়ন হবে, যার সুবিধা পাবেন পুরো রাজধানীবাসী।
এ প্রসঙ্গে রাজউকের লেক উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী আমিনুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, গুলশান-বনানী-বারিধারা লেকের টেকসই দখলমুক্ত করতে চায় রাজউক। সে কারণেই রাজউক বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে স্টাডি করে প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে একদিকে লেক বাঁচবে, অন্যদিকে গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকার যানজটও নিরসন হবে। যা ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে বড় ভূমিকা রাখবে। এক প্রশ্নের উত্তরে এ প্রকৌশলী বলেন, লেক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ নিখুঁতভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের অর্থ লুটপাট হচ্ছে না। আর ঠিকাদারকে কাজ ফাঁকিতে সহযোগিতা করার তো কোনো প্রশ্নই আসে না।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, গুলশান-বনানী-বারিধারা লেকের বর্তমান ২২২ একর জায়গা প্রায় এক যুগ ধরে দখলের অপচেষ্টা করেছে প্রভাবশালীরা। অনেকে লেক দখল করে বহুতল ভবনও নির্মাণ করেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা রাজউক উচ্ছেদ করেছে, আবার দখল হয়েছে।
বলা চলে, দখল-উচ্ছেদ খেলা চলছে। তবুও প্রতিনিয়ত দখলের পরিমাণই বেড়েছে। শহরের মাঝখানের লেককে বাঁচাতে রাজউক নানামুখী পদক্ষেপ নিলেও লেক বাঁচাতে ব্যর্থ হয়েছে। ঢাকা ওয়াসাকে দিয়ে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে দূষণ বন্ধ করতে ড্রেনেজ সিস্টেম প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও সে উদ্যোগে তেমন কোনো সাফল্য পায়নি।
এখনও গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকার মানুষের পয়ঃবর্জ্য ড্রেনের মাধ্যেমে লেকের পানিতে পড়ছে। এতে করে দূষিত হচ্ছে গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক ও হাতিরঝিল।
গুলশান-বনানী-বারিধারা লেকের টেকসই দখলমুক্ত করতে ২০১০ সালের ৬ জুলাই একনেকে লেক উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করে। শুরুতে প্রকল্পের মেয়াদকাল নির্ধারণ করা হয় ২০১০ সালের জুলাই থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত।

পরে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে জুন ২০১৯ করা হয়েছে। চলমান প্রকল্পের আকার ৪১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩১৪ কোটি টাকা জমি অধিগ্রহণ ব্যয় রাখা হয়। দু’দফা প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও প্রকল্প ব্যয় বাড়েনি।
শুরুতে লেক প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্দেশ্য ছিল লেক দখল ও দূষণ মুক্ত করা, লেকের পানির ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা, প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে নগরীর নান্দনিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা, পরিবেশ উন্নয়ন ও চিত্ত বিনোদনের সুযোগ বৃদ্ধি করা।
নতুন প্রকল্পে এসব উদ্দেশ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নতি বা অনওয়ে ট্রাফিক সিস্টেমের আওতায় এনে গুলশান-বনানী ও বারিধারার যানজট নিরসন করা।
প্রস্তাবিত নতুন প্রকল্পে ৮০ একর জমি অধিগ্রহণ করতে চায় রাজউক। এসব জমির প্রতি শতাংশের অধিগ্রহণ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ লাখ টাকা। ল্যান্ড একুইজিশন কেস (এলএ) ১৬/১০/১১ এবং ল্যান্ড একুইজিশন কেস (এলএ) ১/১৬/১৭ এর আওতায় এসব জমি অধিগ্রহণ করা হবে।
এ প্রকল্পের আওতায় জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণ পাবেন দেড়গুণ। এ এলএ কেসের পরে অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ তিনগুণ করা হয়েছে। আর অধিগ্রহণকৃত জমির মধ্যে ৪৩ একর জমি বিটিসিএলের। আর ৩৭ একর জমি ব্যক্তি মালিকানাধীন। সরকারি জমি স্থানান্তরিত হবে। তবে ওই জমির কোনো মূল্য পরিশোধ করতে হবে না।

সংশোধিত প্রকল্পে প্রস্তাবিত সময়কাল প্রস্তাব করা হয়েছে ২০২২ সাল। প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা। অন্যান্য ব্যয় ২ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকা। এর আগে গত বছরের মার্চে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকার সংশোধিত লেক উন্নয়ন প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করে রাজউক।
সে সময় একনেক বুয়েটকে দিয়ে প্রকল্পটি ভালো করে যাচাই-বাছাই করতে নির্দেশনা দেয়। এরপর রাজউক লেক প্রকল্পের উন্নয়ন কাজের জন্য বুয়েটকে নিযুক্ত করে। বুয়েটের বিশেষজ্ঞরা এখানে ট্রাফিক সিস্টেমকে প্রাধান্য দিয়ে প্রকল্প তৈরি করেছে। বুয়েটের বিশেজ্ঞ দলে ১০ জন বিশেষজ্ঞ এ প্রকল্পের সুপারিশ প্রণয়নে স্টাডি করে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/89793