৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, সোমবার, ২:১০

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১০

সড়কে ঝরছে প্রাণ। একের পর এক দুর্ঘটনায় দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। কোনো প্রকারেই বন্ধ করা যাচ্ছে না সড়ক দুর্ঘটনা। গতকালও রংপুর, চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জে প্রাণ হারিয়েছেন ১০ জন। এর মধ্যে রংপুরেই ৭ জন।

আমাদের স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে জানান, রংপুরে অটোরিকশাকে ওভারটেক করতে গিয়ে দুটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে চার মহিলা, এক শিশুসহ সাত জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- আব্দুর রহমান (৬০), রোকসানা বেগম (১৮), আজমুন বেগম (৪৫), নুরবানু (৩৫), শিশু শাহীন (১০) ও সুমি বেগম (২৫)। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪০ জন। আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট মো. রশিদুল মান্নাফ কবিরকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অপর দু’সদস্য হলেন- বিআরটিএ কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা ১২টায় বগুড়া থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড়গামী বিআরটিসি বাস (বগুড়া-ব-১১-০০২৬) রংপুর নগরীর সিও বাজার এলাকায় একটি অটোরিকশাকে ওভারটেক করতে গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী গেটলক পরিবহনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিকট শব্দে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসী গিয়ে আহত ও নিহতদের উদ্ধার করেন। স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এলাকা ঘিরে রেখে পরিস্থিতি শান্ত করে।

রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি আবদুল মজিদ জানান, দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে স্পটেই চার জন মারা যায়। এ ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো দুই জন মারা যায়। দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি আটক রয়েছে। যে চালকের কারণে এ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটেছে তাকে আমরা আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করবো।

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানান, ঘুমিয়ে ছিলেন গেটম্যান। খোলা পেয়ে লেভেল ক্রসিংয়ে উঠে যায় বাস। এ সময় চলন্ত ট্রেন এসে পেছনে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে দুমড়ে-মুচড়ে যায় বাসটি। নিহত হয় বাসের দুই যাত্রী। শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বারৈয়ারহাটে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের লেভেল ক্রসিংয়ে ঘটে এ ঘটনা। এতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বন্ধ থাকে চট্টগ্রামের সঙ্গে সব ট্রেন চলাচল। ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টায় ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে শুরু হয় ট্রেন চলাচল।

মিরসরাই উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা রবিউল আলম দুর্ঘটনার বিষয়ে বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা খাগড়াছড়িগামী এস আলম পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটির পেছনে ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় এ ঘটনা ঘটে।

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, সিদ্ধিরগঞ্জে বাসচাপায় এক নারী নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম মিনু আক্তার (৫৫)। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সকাল ৭টায় নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-চিটাগাং রোড সড়কে সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকায়। পরে পুলিশ সকাল সাড়ে ৭টায় নিহত ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। নিহত মিনু আক্তার মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার উত্তর কামারগাঁও গ্রামের আব্দুস সামাদের স্ত্রী।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক রাসেল আহমেদ জানান, সকাল ৭টায় সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় আদমজী ইপিজেডের শ্রমিক পরিবহনের একটি বাস মিনুকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এ সময় শ্রমিক পরিবহনের ওই বাসটি দ্রুত শিমরাইলের দিকে চলে যায়। তিনি আরো জানান, গাড়িটি আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। ওই গাড়িটির নাম্বারও আমাদের হাতে এসেছে। তবে, নাম্বারটি এখনই প্রকাশ করা যাবে না। গাড়িটি আটকের প্রক্রিয়া চলছে।

http://mzamin.com/article.php?mzamin=133612