২০ আগস্ট ২০১৮, সোমবার, ১০:৫৮

অরক্ষিত সড়ক মহাসড়ক

অরক্ষিত সড়ক মহাসড়ক। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ঈদযাত্রা। অনেকেই বলেছেন, মহাসড়ক দিয়ে যেতে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি স্থানে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা মানুষের মধ্যে এ আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

ঝিনাইদহে গত শনিবার রাতে ডাকাতদের হাতে নিহত হন এক সেনাকর্মকর্তা। সাইফুল ইসলাম (৩২) নামে ওই সেনাকর্মকর্তা টাঙ্গাইলের ঘাটাইল সেনানিবাসের মেডিক্যাল কোরে চাকরি করতেন। শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের হাওনঘাটায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতের ছোট ভাই নৌবাহিনীর সদস্য মনিরুল ইসলাম জানান, শনিবার রাতে তারা বদরগঞ্জ বাজার থেকে সাইফুলের শ্বশুর ছামছুল ইসলামকে সাথে নিয়ে তিনজন এক মোটরসাইকেলে নিজ গ্রামে ফিরছিলেন। তারা বাড়ির কাছাকাছি হাওনঘাটা মাঠের মধ্যে পৌঁছলে ১০-১২ জনের একদল ডাকাত জাম গাছ কেটে সড়কে ফেলে গতি রোধ করে। এ সময় ডাকাতদলের সাথে সাইফুলের বাদানুবাদের একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করে তাকে।

ঢাকা সিলেট মহাসড়কের বেশ কিছু স্থান রয়েছে চরম ঝুঁকিপূর্ণ। আশুগঞ্জের বাহাদুর তালশহর সড়ক, বেড়তলা সড়কসহ বেশকিছু স্পটে প্রায়ই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি বেড়তল এলাকায় একটি মাছ বোঝাই ট্রাক লুটে নেয় দুর্বৃত্তরা। সেখানে ছুরিকাঘাতে নিহত হয় রফিকুল ইসলাম নামে এক মাছব্যবসায়ী। রাতের গাড়িগুলো ওই সব এলাকায় ঢুকতেই যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়কের গোয়াইনঘাট উপজেলার সালুটিকরের দামড়ি হাওর এলাকা এখন এক আতঙ্কের নাম।

বি.বাড়িয়ার সরাইল এলাকায় সন্ধ্যা হলেই সড়কগুলোতে নেমে আসে ডাকাত আতঙ্ক। স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই এলাকা দিয়ে রাতে মানুষ পথ চলতে ভয় পান। মুন্সীগঞ্জের বেশ কিছু সড়ক রয়েছে যেখানে সন্ধ্যার পর নেমে আসে ভুতুড়ে পরিবেশ। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, অনেক সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও আতঙ্কে থাকেন।
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাসিন্দারা বলেছেন, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা এলাকা একটি আতঙ্কের নাম। এ এলাকায় প্রায়ই ডাকাতির ঘটনা ঘটছে নৈশকোচগুলোতে। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাতে যতটা গুরুত্বের সাথে হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা পুলিশের দায়িত্ব পালন করার কথা ততটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না তারা।

পরিবহন শ্রমিক নেতা আলী রেজা নয়া দিগন্তকে বলেছেন, যাদের দায়িত্ব যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের নিরাপত্তা দেয়ার তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। তিনি বলেন, মহাসড়কে যানবাহনে ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও হাইওয়ে পুলিশকে যথাসময়ে পাওয়া যায় না। অন্য এক পরিবহন নেতা বলেন, কারা রাস্তায় ডাকাতি করে তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অজানা থাকার কথা নয়। কিন্তু ওই সব দুর্বৃত্ত গ্রেফতার হয় না। ফলে দিন দিন মহাসড়কে দুর্বৃত্তরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে। একাধিক পরিবহন মালিক শ্রমিক বলেছেন, ঈদ সামনে রেখে সড়ক মহাসড়কে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে দুর্বৃত্তরা। আগে থেকেই ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি মিডিয়া মো: সোহেল রানা গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ ও আরামদায়ক করতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

http://www.dailynayadiganta.com/first-page/342832