১৩ আগস্ট ২০১৮, সোমবার, ১০:১২

ফেরি চলাচল ব্যাহত, শত শত যানবাহন আটকা

ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীরা

পদ্মার কোথাও নাব্য সংকট আবার কোথায় প্রবল স্রোতে ফেরি চলাচল মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। ফলে পারাপার হতে না পেরে নদীর উভয় পাড়ে শত শত যানবাহন আটকা পড়েছে। প্রবল স্রোতের কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে যানবাহন পারাপার বিঘ্নিত হওয়ায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীরা। ঢাকা-মাওয়া-খুলনা মহাসড়কের শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌ রুটে নাব্য সংকটে ফেরি চলাচল মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে।
প্রবল স্রোতের কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে ফেরি চলাচলে অনেক বেশি সময় লাগছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে আধা ঘণ্টা বেশি লাগছে। এ কারণে ফেরির ট্রিপ সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এছাড়া মাওয়া রুটে নাব্য সংকট থাকায় সেখানকার অনেক পণ্যবাহী ট্রাক পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুট ব্যবহার করছে। এতে এ রুটে যানবাহনের চাপ আরও বেড়েছে। পাটুরিয়া ঘাটে পারের অপেক্ষায় আটকে আছে ৩৫০টি বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। ফেরি কর্তৃপক্ষ যাত্রী ভোগান্তির বিষয় বিবেচনা করে যাত্রীবাহী বাস ও ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করছেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) পাটুরিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মহিউদ্দিন রাসেল জানান, প্রবল স্রোত এবং মাওয়া রুটের যানবাহনগুলো এ রুট ব্যবহার করায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এ কারণে পরিস্থিতি সামাল দিতে বেগ পেতে হচ্ছে। তিনি জানান, ১৮টি ফেরির মধ্যে ১৭টি পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে চলাচল করছে। মেরামত শেষে অন্য ফেরিটিও সোমবার নাগাদ ট্রিপে যাবে বলে তিনি জানান।
ফেরি সেক্টরের মেরিন বিভাগের ব্যবস্থাপক আবদুস সাত্তার জানান, মাঝ পদ্মা ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় প্রবল স্রোত বইছে। অধিকাংশ ফেরি পুরাতন হওয়ায় এ স্রোতের বিপরীতে চলতে হিমশিম খাচ্ছে। পাটুরিয়া ঘাটে দায়িত্বরত মানিকগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (টিআই) রাসেল জানান, সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত যানবাহনের চাপ ছিল। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী যানবাহন পার করায় কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।
দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম প্রবেশদ্বার বলে পরিচিত ঢাকা-মাওয়া-খুলনা মহাসড়কের শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌ রুটে নাব্য সংকট থাকায় দফায় দফায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। মাত্র ছয়টি ফেরি দিয়ে রুটটি চালু রাখা হয়েছে। এতে উভয় পাড়ে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে পাঁচ শতাধিক যানবাহন। বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, শনিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টা থেকে এ রুটে ফেরি সার্ভিস বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর রাত ১২টা থেকে ফেরি চলাচল শুরু হয়। কম ফেরি চলাচলের সুযোগে টাকার বিনিময়ে বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের ম্যানেজার আবদুল আলিম ইচ্ছেমাফিক যানবাহন পারাপার করছেন বলে অভিযোগ করেন একাধিক চালক। তারা বলেন, কয়েকদিন ধরে ঘাটে থাকলেও ভারি যানবাহন লোড দেয়া যাবে না বলে তাদের ট্রাক ও জরুরি সার্ভিসের গাড়িগুলো ফেরিতে উঠতে দেয়া হচ্ছে না। অথচ ১নং ঘাট দিয়ে ১০ চাকার সবচেয়ে বড় গাড়িও লোড দেয়া হচ্ছে। তার কথায় রাজি না হলে গাড়ি লোড দেয়া হচ্ছে না। এ ব্যাপারে জানতে ম্যানেজার আবদুল আলিমের মোবাইল ফোনে বারবার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি ।
বিআইডব্লিউটিসির এজিএম শাহ খালেদ নেওয়াজ জানান, বেশ কিছু দিন ধরে লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের মুখে একটি ডুবোচর সৃষ্টি হয়েছে। উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানির সঙ্গে ক্রমাগত পলি পড়ে ডুবোচরটি দিন দিন বড় হচ্ছে। চ্যানেলের মুখে ডুবোচরের কারণে দুর্ঘটনা হচ্ছে। ডুবোচরে আটকে ফেরির প্রপেলারসহ ইঞ্জিনের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ড্রেজার লাগিয়ে পলি অপসারণ করলেও মূলত কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/80070/