ভারতীয় ডিজিটাল জুয়ায় সিলেটের সর্বনাশ।
২ জুলাই ২০১৮, সোমবার, ১০:৫১

ভারতীয় ডিজিটাল জুয়ায় সিলেটের সর্বনাশ

শিলং তীরের নামে কয়েক বছর ধরে শত শত কোটি টাকা পাচার হচ্ছে * এক বছর ধরে ওয়েবসাইট বন্ধের প্রস্তাব পড়ে আছে বিটিআরসিতে * জুয়া আইনের সংশোধন চায় পুলিশ


‘শিলং তীর’ নামে ভারতীয় ডিজিটাল জুয়ার মাধ্যমে প্রতি বছর শত শত কোটি টাকা ভারতে পাচার হয়ে যাচ্ছে। কয়েক বছর ধরে ভারতের শিলংয়ে এই অনলাইন লটারি চলছে। এটি স্থানীয়ভাবে ‘ভারতীয় তীর খেলা’ বা ‘ডিজিটাল লটারি’ হিসেবে পরিচিত। লটারিতে অংশ নেয়া টাকার ৮০ গুণ টাকা পাওয়ার প্রলোভনে সর্বস্ব হারাচ্ছে নিু আয়ের মানুষ। নম্বরভিত্তিক এই প্রতারণার ফাঁদে পা দিচ্ছে সিলেটসহ আশপাশের উপজেলার শত শত মানুষ। দফায় দফায় অভিযান পরিচালনা করেও স্থানীয় পুলিশ এই তীর খেলার লাগাম টেনে ধরতে পারছে না। বরং গত কয়েক বছরে বেড়েছে ডিজিলাট জুয়াড়িদের এজেন্টদের সংখ্যা। অবশ্য অভিযোগ রয়েছে, কতিপয় অসাধু পুলিশ সদস্যের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে অনেকটা প্রকাশ্যেই চলছে সমাজ ও পরিবার ধ্বংসকারী এ জুয়া খেলা। শুধু তাই নয়, ডিজিটাল এ জুয়ায় হেরে যাওয়ায় দেশের বিপুল অঙ্কের টাকা ভারতে চলে যাচ্ছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ডিজিটাল এই লটারি খেলায় কেউ যদি ১ হাজার টাকা বাজি ধরে বিজয়ী হন তাহলে তিনি পাবেন ৮০ হাজার টাকা। এভাবে সর্বনিম্ন ১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বাজি ধরা যায়। লটারিতে একটি নম্বরকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এজেন্টদের মাধ্যমে শূন্য থেকে ৯৯ পর্যন্ত যে কোনো সংখ্যা কিনে নেয়া যায়। সিলেট শহরের তালতলায় নন্দিতা সিনেমা হলের নিচে সরেজমিন জুয়ার আসর পরিচালনাকারী একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে প্রতিবেদকের কথা হয়। এ সময় মামুন নামে একজন এজেন্ট যুগান্তরকে বলেন, তারা শিলংয়ের জুয়াড়িদের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন। সিলেটের যারা লটারিতে অংশ নেন তাদের পছন্দের নম্বরটি অনলাইনে বুকিং দেয়া হয়। প্রতিদিন বিকাল সোয়া ৪টা ও সাড়ে ৫টায় দুবার ড্র হয়। ফলাফল দেয়া হয় অনলাইনে। লটারি বিজয়ী তার বাজির টাকার ৭০ গুণ বেশি পাবেন, এমন প্রচার চালানো হয়। প্রতিদিন শত শত মানুষ অংশ নিলেও দুই থেকে তিনজনকে বিজয়ী করা হয়। বিজয়ীদের টাকার পরিমাণ কম হলে তাৎক্ষণিক পরিশোধ করা হয়। বেশি হলে ভারত থেকে এনে দেয়ার কথা বলা হয়। ভারত থেকে টাকা এনে পরিশোধ করা হয়েছে এমন নজির আছে কিনা জানতে চাইলে এই এজেন্ট বলেন, তা আমি জানি না। এ ক্ষেত্রে সময় নেয়া হয় তিন থেকে সাত দিন। জুয়ার টাকা ভারত ও বাংলাদেশে হুন্ডি ও সীমান্তের চোরাইপথে লেনদেন হয়। টাকা লেনদেনের বিষয়টি পুলিশ জানে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাস্তবে জুয়ায় জেতার পর মোটা অঙ্কের কোনো টাকা ভারত থেকে এনে পরিশোধ করার নজির নেই।
জানতে চাইলে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া যুগান্তরকে বলেন, ডিজিটাল এই জুয়া বন্ধে স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের মাধ্যমে বিটিআরসিতে দাফতরিক পত্র দেয়া হয়। তাতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে গড়ে ওঠা জুয়াড়িদের কয়েকটি ওয়েবসাইট নিষ্ক্রিয় করার প্রস্তাব পাঠানো হয়। এক বছর ধরেও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ওয়েবসাইট বন্ধ করা না হলে এই জুয়াড়িদের অংশগ্রহণ ঠেকানো সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে জুয়াড়িদের অন্তত শতাধিক সহযোগীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু দুর্বল আইনের কারণে এরা জামিনে বের হয়ে এসে আবারও শুরু করে। এই জুয়া বন্ধে তিনি সিলেটের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা চেয়েছেন।

এক বছর ধরে কেন ভারতীয় জুয়াড়িদের ওয়েবসাইট বন্ধ করা হয়নি জানতে চাইলে (বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) বিদায়ী চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ যুগান্তরকে বলেন, ‘স্যাটেলাইট স্থাপন নিয়ে ব্যস্ততা থাকায় আসলে কাঙ্ক্ষিত অনেক কাজই করা সম্ভব হয়নি। তবে এ বিষয়ে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হলে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবেন।’
যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহিরুল হক বলেন, ডিজিটাল জুয়ার ওয়েবসাইট বন্ধ করার কোনো আবেদন সম্পর্কে আমি এখনও অবহিত নই। এ ব্যাপারে খোঁজ নিতে হবে।’ বিটিআরসির মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন খান বলেন, ‘আবেদন এসে থাকলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিষয়টি চেয়ারম্যান স্যারের নজরে দেয়া হবে।’
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, সিলেটের সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং। অনলাইনের মাধ্যমে শিলং থেকে এই জুয়া খেলাটি পরিচালিত হওয়ায় ‘শিলং তীর’ নামে পরিচিতি পায়। মূলত এটি কৌশলগত জুয়া। টাকা হাতিয়ে নেয়ার বড় ফাঁদ এটি। এই জুয়ার আসর থেকে যাতে কেউ মুখ ফিরিয়ে না নেয় সেজন্য প্রতিদিনই কয়েকজনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। একপর্যায়ে শিলং তীরের পাশাপাশি ভারতীয় জুয়াড়িরা আরও কয়েকটি ওয়বসাইট খুলে ছড়িয়ে দেয়। বর্তমানে ডিজিটাল এই জুয়ার ১০টি ওয়েবসাইট সক্রিয় রয়েছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই জুয়া ভারতের সীমানা পেরিয়ে সিলেট শহরসহ আশপাশের উপজেলাগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। শুধু সিলেট শহরেই অন্তত শতাধিক স্থানে রয়েছে জুয়াড়িদের এজেন্ট। এরা নিু আয়ের মানুষকে প্রলুব্ধ করে সর্বনাশ করছে। এক থেকে নিরানব্বই পর্যন্ত যে কোনো একটি নম্বর কিনে জুয়ায় অংশ নিচ্ছে শ্রমজীবী মানুষ। ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাদের কাছে কুপন বিক্রি করে সহায়তা দিচ্ছে এজেন্টরা। অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের মাধ্যমেও এই খেলায় অংশ নেয়ার সুযোগ থাকায় জুয়াড়িদের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। তীর খেলার খপ্পরে পড়ে শিক্ষার্থী ও যুব সমাজও এ খেলায় জড়িয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। এই ভারতীয় তীর (জুয়া) খেলা মহামারী আকার ধারণ করেছে হাটবাজার থেকে শুরু করে দিরাই উপজেলার মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। এজেন্টরা অনলাইনের মাধ্যমে এ খেলার সঙ্গে সাধারণ জনগণকে যুক্ত করে। মূলত এর আড়ালে হুন্ডির মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের টাকা বাংলাদেশ থেকে ভারতে স্থানান্তর করা হয়।
সরেজমিন তথ্যানুসন্ধানে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে এই জুয়া খেলার ভারতীয় ওয়েবসাইটগুলো বন্ধের ব্যাপারে দাফতরিক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। ২০১৬ সালের ৫ অক্টোবর সিলেটের তৎকালীন উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি, ডিবি ও প্রসিকিউশন) সারোয়ার মুর্শেদ শামীম পুলিশ কমিশনারের কাছে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠান। এতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘সিলেট মহানগরসহ সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোতে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে www.teercounter.com ব্যবহার করে ভারতীয় শিলং তীর নামে অবৈধ লটারি বা জুয়ার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। ভারতের মেঘালয় প্রদেশের শিলংয়ে এই জুয়ার কেন্দ্রবিন্দু। একপর্যায়ে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে এর বিস্তার ঘটতে থাকে। বর্তমানে সীমান্ত এলাকাসহ সিলেট মহানগরের সর্বত্র এই জুয়ার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেশের সীমান্তবর্তী ও শিলং এলাকার কিছু লোক এই অবৈধ জুয়ার আসর চালিয়ে যাচ্ছে।’ পুলিশের অভিযানে আটক হওয়া জুয়াড়িদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্রতিদিন বিকাল ৪টা এবং সোয়া ৫টায় ওয়েবসাইটে শিলং তীর লটারির ফলাফল ঘোষণা করা হয়। আয়োজকরা সিলেট মহানগরীসহ সীমান্তবর্তী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এজেন্ট নিয়োগ করে। এজেন্টরাই লটারিতে আগ্রহী অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে। ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফলাফল এজেন্টরা প্রদর্শন করে এবং বিজয়ীদের পুরস্কার দেয়া হয়।’ প্রতিবেদনে কিভাবে এই লটারিতে অংশ নেয়া হয়, তারও একটি নমুনা উল্লেখ করে দেয়া হয়। এতে বলা হয়, ‘লটারি নামক এই জুয়ায় শূন্য থেকে ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯ সংখ্যাগুলো থেকে দুটি সংখ্যা পছন্দ করতে হয়। যেমন- ০১, ২২, ৭৫ ইত্যাদি। ওয়েবসাইটে সংখ্যাটি উঠলে আয়োজক বিজয়ীকে ৭০ গুণ বেশি টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।

অবৈধ এই লটারির নেশায় পড়ে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছে। এভাবে প্রতিদিন অবৈধ এই চক্রটি দরিদ্র ও শ্রমজীবী মানুষের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ চক্রের কয়েকজনকে গ্রেফতার করে জুয়া আইনে মামলা দেয়া হয়।’ জুয়া আইনের দুর্বলতার কথা প্রকাশ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘১৮৬৭ সালের বঙ্গীয় প্রকাশ্য জুয়া আইনের ৩/৪ ধারায় মামলায় আদালতে পাঠানো হলে জুয়াড়িরা জামিনে বের হয়ে আবারও জুয়ার আসরে বসে। প্রচলিত জুয়া আইনের ধারায় শাস্তির পরিমাণ একেবারেই সীমিত হওয়ায় আইন প্রয়োগ করে এই জুয়া বন্ধ করা কঠিন। অভিযানে স্থানীয় কিছু এজেন্টকে গ্রেফতার করা হলেও নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ওয়েবসাইটে যারা লটারির ফলাফল পরিচালনা করছে তাদের শনাক্ত করা কিংবা আইনের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না।’ মহানগর পুলিশের মাসিক অপরাধ সভার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অবৈধ জুয়া খেলা বন্ধে ইন্টারনেটভিত্তিক ওয়েবসাইটগুলো বন্ধ করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিষয়ে মতামত তুলে ধরেছেন। ওয়েবসাইটগুলো বন্ধ করা হলে শিলং তীর নামে যে জুয়া খেলা চলছে তা রোধ করা সম্ভব।’
সারোয়ার মুর্শেদ শামীম স্বাক্ষরিত ওই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের পক্ষে তৎকালীন উপপুলিশ কমিশনার (সদর) রেজাউল করিম ২০১৬ সালের ১৬ অক্টোবর পুলিশ সদর দফতরে এ বিষয়ে পত্র দেন। পরবর্তীকালে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বিটিআরসিকে দাফতরিক পত্র দেয় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স।

এদিকে তীর খেলার ওয়েবসাইট বন্ধ করার বিষয়ে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহেদ মোস্তফা নিজেও বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) চেয়ারম্যানের কাছে দাফতরিক পত্র পাঠান। গত বছরের ৩১ অক্টোবর স্বাক্ষরিত ওই পত্রে ইউএনও ১০টি ওয়েবসাইটের নাম উল্লেখ করে সেগুলো জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ করার অনুরোধ করেন।
বিটিআরসি চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো শাহেদ মোস্তফার পত্রে বলা হয়, শিলং তীর নামে জুয়া খেলা সমাজের বিভিন্ন বয়স ও পেশার মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। পাশাপাশি সামাজিক অবক্ষয় দেখা দিয়েছে। মানুষ সর্বস্বান্ত হচ্ছে। পরিস্থিতি ভয়াবহতার বিষয়টি উল্লেখ করে বলা যায়, অনেকেই তাদের সহায়-সম্বল (চালিত সিএনজি, জমি) বিক্রি করে এ খেলায় অংশগ্রহণ করছে। তীর খেলাটি মোবাইল অ্যাপস ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে খেলা হওয়ার কারণে শুধু মোবাইল কোর্ট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। পাশাপাশি বিভিন্ন সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে প্রচার করা হচ্ছে। পুলিশের প্রতিবেদনে www.teercounter.com নামে একটি ওয়েবসাইটের কথা উল্লেখ করা হলেও ইউএনও শাহেদ মোস্তফা ১০টি ওয়েবসাইটের তথ্য দেন। সেগুলো হচ্ছে- www.teercounter.com, nightteer.com, assamteer.com, teerresults.com, teercountermorning.com, teerlettery.com, teernews.com, teertoday.com, meghalayateer.com এবং teerofshilong.com ।
গোয়েন্দাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী সিলেট শহরের অন্তত শতাধিক স্থানে রয়েছে ডিজিটাল জুয়াড়িদের এজেন্ট। এর মধ্যে কাজির বাজারের মাছ বাজার ও কাঁঠাল হাটের পেছনে, তালতলায় আনা ম্যানশন ও নন্দিতা সিনেমা হল, সুরমা মার্কেটের অন্তত ৮টি স্থানে, সোবানীঘাটে তুহিন মেটালসের পেছনে এবং ময়না মিয়ার কলোনি, ঘাসিটুলায় লতিফ সাহেবের মাজার ও ফকির মিয়ার কলোনি, বেতের বাজার মোকামবাড়ি পয়েন্ট এলাকায়, ধোপাদিঘির পাড় আসাদ ডেন্টালের পেছনে, লামাবাজার সৈনিক ক্লাব, কুয়ারপাড়, ছড়ারপাড়, পশ্চিম শেখঘাট, রিকাবীবাজার নূর হোসেন চালায় এবং মেডিকেল রোডে।

যুগান্তরের পক্ষ থেকে সরেজমিন নগরীর তালতলায় নন্দিতা সিনেমা হল ও সুরমা মার্কেট এলাকায় গিয়ে গোয়েন্দাদের দেয়া তথ্য যাচাই করা হয়। সেখানে গিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে এজেন্টদের কার্যক্রম চালাতে দেখা যায়। প্রতিবেদক নিজেই নন্দিতা সিনেমা হলের নিচতলার কয়েকজন এজেন্টের কাছ থেকে একশ’ টাকায় ১০টি নম্বর নিতে সক্ষম হন। ১৮ জুন ড্র হওয়ার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই এই কুপন নেয়া হয়। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় প্রকাশ্যেই চলছে এই ডিজিটাল জুয়ার কার্যক্রম।
সিলেট কোতোয়ালি জোনের এসি গোলাম দস্তগীর যুগান্তরকে বলেন, তালতলাসহ নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। কিন্তু জামিন নিয়ে আবারও ফিরে আসে। ঈদের পরও আকস্মিক অভিযানে তালতলা এলাকা থেকে জুয়াড়িদের ৫ এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

 

ভারতীয় ডিজিটাল জুয়ায় সিলেটের সর্বনাশ