৩ মার্চ ২০১৮, শনিবার, ৯:৩০

আবারো বাড়ছে চাল ও পেঁয়াজের দাম

আবারো বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজ ও চালের দাম। পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা। আর চালের দাম কেজি প্রতি ৩ টাকা বেড়েছে। দাম বৃদ্ধির তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে চিনি। কেজিতে বেড়েছে ২ টাকা। সবজির মধ্যে লেবু ও শশার দাম এখনো বেশি। এছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক রয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বাজারে দেখা গেছে, দেশী পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৫ থেকে ৭ টাকা। রাজধানীর বাজারে দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি। আর আমদানী করা পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এদিকে সব ধরনের চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে। কেজি প্রতি ৩ টাকা বেড়েছে সরু চালে। আর নতুন করে দাম বৃদ্ধির তালিকায় যুক্ত হয়েছে চিনি। প্রতি কেজি চিনিতে ২ টাকা বেড়ে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চাল ব্যবসায়ীরা জানান, সব ধরনের চালের কেজিতে দাম বেড়েছে ৩ থেকে ৪ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিতে সর্বোচ্চ দেড় টাকা। তবে সরু চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩ টাকা পর্যন্ত। একইভাবে বেড়েছে খুচরা পর্যায়েও। ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত থেকে চাল আমদানিতে আগের চেয়ে টনপ্রতি ১ হাজার ৬৪০ থেকে দুই হাজার ৪৬০ টাকা বেশি ব্যয় হচ্ছে। বাড়তি মূল্যে আমদানি করা এ চাল স্থানীয় বাজারেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া দেশে মজুদ ধানের সংকট রয়েছে। তাই চালের দাম কমতে এবার বোরো মৌসুম পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান তারা। রাজধানীর পাইকারি বাজারে দেখা গেছে, পাইকারিতে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৫৮ থেকে ৫৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চারদিন আগেও একই চাল বিক্রি হয়েছিল ৫৬ থেকে ৫৭ টাকায়। নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৫৯ টাকায়। বিআর আঠাশ বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৪২ টাকা কেজি। মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৩৮ টাকায়।

এদিকে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) দৈনিক বাজার দরের তালিকায় চালের দাম বৃদ্ধির চিত্র দেখা গেছে। এতে দেখা গেছে, সরু চাল বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, যা এক মাস আগে ৫৮ থেকে ৬৮ টাকা ছিল। মাসের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ৩.১৭ শতাংশ। অন্যদিকে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৭ টাকা কেজি, যা এক মাস আগে ছিল ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা। সেক্ষেত্রে মাসের ব্যবধানে মোটা চালের দাম বেড়েছে ১.১১ শতাংশ। এ ছাড়া গত এক বছরে সরু চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ১৪ টাকা। মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১৫ ও নাজিরশাইল ১৫-১৬ টাকা। অন্যদিকে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ঢাকার বাজারে মোটা চালের পাইকারি মূল্য প্রতি কেজি ৪০-৪১ টাকা। আর মোটা চালের খুচরা মূল্য প্রতি কেজি ৪২-৪৫ টাকা।

এদিকে কাঁচাবাজারে দেখা যায়, কাঁচামরিচের পাশাপাশি বেগুন, শিম, গাজর, ফুলকপি, পাতাকপি, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, করলা, মটরশুটি, লাল শাক, পালন শাক, লাউ শাকসহ অন্যান্য সবজি গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে। দাম অপরিবর্তীত রয়েছে ডিম, বয়লার মুরগি, গরু ও খাসির গোশতের।
সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, এখন টমেটোর ভরা মৌসুম। আড়তেও পর্যাপ্ত টমেটো পাওয়া যাচ্ছে, কোনো সঙ্কট নেই। তাই দাম কম। পাকা টমেটো মানভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও ১০ টাকা কেজিতেও পাওয়া যাচ্ছে।

এদিকে বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, ফুলকপি আকারভেদে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, শসা প্রতিকেজি ৪০-৫০ টাকা, পেপে ২৫ টাকা, সিম ৪০ টাকা, বেগুন (কালো) ৪০, বেগুন (সাদা) ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা এবং মটরশুটি ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
কাঁচমরিচ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। আদা ও রসুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকেকে ১১০ টাকা কেজি।

মাছের বাজারে দেখা যায়, প্রতি কেজি রুই মাছ ২৩০-২৮০, কাতল ২২০-২৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০ থেকে ১৫০, সিলভারকার্প ১৫০, তেলাপিয়া ১৮০, শিং ও মাগুর মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা দরে। প্রতি কেজি টেংরা বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, বাটা মাছ কেজিপ্রতি ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা। এছাড়া সাগরের মাছের মধ্যে ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম সাইজের প্রতি কেজি ইলিশ ৮০০ টাকা, কোরাল প্রতি কেজি ৪০০-৫০০, রূপচান্দা আকারভেদে ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে গরুর গোশত ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, খাসি ৭০০-৭৫০, ব্রয়লার মুরগি ১৪০ টাকা, দেশি মুরগি ২৫০-৩০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

http://www.dailysangram.com/post/321095