৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শনিবার, ৯:৫৬

নিরাপত্তা পরিষদের রাখাইন সফরে মিয়ানমারের ‘না’

নিরাপত্তা পরিষদকে ফেব্রুয়ারিতে রাখাইন সফরে যেতে নিষেধ করেছে মিয়ানমার। জাতিসঙ্ঘের রাখাইন পরিদর্শনের প্রস্তাব পুরোপুরি নাকচ না করলেও নেইপিডো বলছে, এখন সফরের ‘উপযুক্ত সময়’ নয়। জাতিসঙ্ঘে নিযুক্ত কুয়েতি রাষ্ট্রদূত মানসুর আয়াদ আল ওতাইবিকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স এ কথা জানিয়েছে। কুয়েতের নেতৃত্বেই সফরটির উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।

২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও ধারাবাহিক সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেখানকার সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সাথে নিয়ে তারা রোহিঙ্গাদের ওপর খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এর পর থেকে সমালোচনার ঝড় ওঠে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সাংবাদিকদের রাখাইনে প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করে মিয়ানমার। গত বছর নভেম্বরেই ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ রাখাইন পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মিয়ানমার সরকারকে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছিল। নিরাপত্তা পরিষদ থেকে এক বিবৃতিতে সে সময় মিয়ানমার সরকারকে সাংবাদিকদের নিরাপদে প্রবেশের অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানানো হয়। বাংলা ট্রিবিউন।

আল ওতাইবি জানিয়েছেন, কুয়েত নিরাপত্তা পরিষদের নেতৃত্ব দানকারী দেশ থাকাকালে ফেব্রুয়ারিতেই মিয়ানমারে নিরাপত্তা পরিষদের একটি সফর আয়োজনের পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। এবার তিনি জানালেন, সফরটি ফেব্রুয়ারিতে হবে না। মিয়ানমার প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেনি। তারা বলছে, এখন সফরের উপযুক্ত সময় না। নিরাপত্তা পরিষদের অন্যান্য সদস্যরা হয়তো মার্চ বা এপ্রিলে এই সফরের উদ্যোগ নিতে পারেন।
২৫ আগস্টের উত্তেজনার পর থেকেই রাখাইনে প্রবেশাধিকার নেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও সংবাদমাধ্যমের। সে কারণে সেখানকার চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য জানা সম্ভব হচ্ছে না। তবে গত বছরেই বিবিসিসহ বেশ কিছু সাংবাদিককে সাথে করে ওই এলাকা ঘুরে দেখিয়েছে মিয়ানমারের সরকারি কর্মকর্তারা। বিবিসির দক্ষিণ এশিয়ার সংবাদদাতা জোনাথন হেড সে সময় জানিয়েছেন, তিনি নিজেই রাখাইনের বৌদ্ধদের রোহিঙ্গাদের গ্রামে আগুন লাগিয়ে দিতে দেখেছেন। সেখানে সেনাবাহিনী মিয়ানমারের সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী উপস্থিত ছিল। অ্যামনেস্টিসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা শুরু থেকেই সত্য অনুসন্ধানে জাতিসঙ্ঘের অনুসন্ধানকারীদের ওই এলাকায় প্রবেশের অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তবে মিয়ানমার এতে রাজি হয়নি।
কুয়েতি দূত জানান, রাখাইনে একটি কূটনৈতিক প্রতিনিধিদলের সফর আয়োজনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে মিয়ানমার। নেইপিডো বলছে, রাখাইনে এখন উত্তেজনা চলছে। তাদের এসব কারণ দেখিয়েই আপাতত সফরে আসতে মানা করা হয়েছে।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/290642