১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ১০:০০

বিদ্যুৎকেন্দ্রের আগাম প্রকল্পে ২১১ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি

জমি অধিগ্রহণ ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার পরামর্শ ; অনুমোদন ছাড়াই পরামর্শক নিয়োগ ও অর্থ ব্যয়

জমি অধিগ্রহণ ও সম্ভাব্যতা সমীা নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের আগাম প্রকল্পে ব্যয় বাড়ল প্রায় ২১১ কোটি টাকা। পাশাপাশি প্রকল্পের বাস্তবায়নকালও বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে। কক্সবাজারের মহেশখালীতে প্রস্তাবিত বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ৭ শ’ মেগাওয়াট আলট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য এই আগাম প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের বেশির ভাগ খরচই সরকারের বলে প্রস্তাবনা থেকে জানা গেছে। পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পে প্রকৃত চাহিদার ভিত্তিতে জমি অধিগ্রহণ ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার পরামর্শ দিয়েছে। অনুমোদন ছাড়াই পরামর্শক নিয়োগ ও তাদের পেছনে অর্থ ব্যয় করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর যৌথ উদ্যোগে কক্সবাজারের মহেশখালীতে আলট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগ। এ আগাম প্রকল্পটি ২০১৬ সালের মার্চে একনেক থেকে অনুমোদন দেয়া হয়। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ছিল ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পের আওতায় প্রথমে এক হাজার ৩৩৪.৪৯ একর জমি অধিগ্রহণ, উন্নয়ন ও সম্ভাব্যতা যাচাই কাজের জন্য ব্যয় ধরা হয় ৮১৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। প্রকল্পের দুই বছর পার করে এখন বেশ কিছু অঙ্গের সংযোজন করে ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে ২১০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। ফলে এ প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়াবে এক হাজার ২৬ কোটি ২১ লাখ টাকা। আর মেয়াদকাল এক বছর বাড়িয়ে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হচ্ছে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা থেকে জানা গেছে, মূল ডিপিপিতে জমি অধিগ্রহণের জন্য পাঁচ শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। এখন আরো ৯৪.৭৫ একর জমি বেশি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে এখানে ব্যয় বাড়ছে ৫৩ কোটি ৬ লাখ টাকা। লাইভলিহুড অ্যান্ড ইনকাম লস রেস্টোরেশন অ্যান্ড কম্পেনসেশন প্ল্যান খাতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এই ব্যয় এখন ১৩৬ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বাড়িয়ে ২শ’ ৯৩ কোটি টাকা করা হচ্ছে। পূর্ত কাজের ব্যয় ৪৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা থেকে ৬৬ কোটি ০৩ লাখ টাকা করা হচ্ছে। নির্মাণকালীন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সাবস্টেশন ও লাইন নির্মাণের ব্যয় আগে যুক্ত ছিল না। এখন এখানে ১৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা যুক্ত করা হলো। ভূমি উন্নয়ন ব্যয় ৫৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা থেকে ১২৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের কাছে সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হলে তাদের মতামত হলো, গত দুই বছরে প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৫৩.৪৮ শতাংশ বা ৪৩৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা। প্রকল্পের দুই বছর পর এসে কেন এত পরিমাণ বাড়তি জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে? প্রকল্পের প্রকৃত চাহিদার ভিত্তিতে জমি অধিগ্রহণ ন্যূনতম পর্যায়ে রাখা উচিত। এখানে অ্যাপ্রোচ রোডের জন্য ১২৬ জন-মাস পরামর্শ ব্যাপারে কমিশন আপত্তি জানিয়েছে। বলা হয়েছে, অনুমোদন ছাড়াই গত এপ্রিল থেকে পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অক্টোবর পর্যন্ত তাদের পেছনে ২৬ লাখ ৬১ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এখানে কমিশনের নীতিগত সম্মতি নেয়া হয়নি। পরিপত্র অনুযায়ী ঘটনা-উত্তর অনুমোদনের কোনো সুযোগ নেই। তাই ডিপিপি থেকে এটাকে বাদ দেয়ার জন্য পরিকল্পনা কমিশন থেকে বলা হয়েছে।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/290043