৩১ জানুয়ারি ২০১৮, বুধবার, ১:০২

ফাও-এর রিপোর্ট

খাদ্য ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

রাখাইন সহিংসতায় বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা স্থানান্তরিত হওয়ায় খাদ্য সংকটের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সংগঠন ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন অব দ্য ইউনাইটেড ন্যাশনস (ফাও) এর প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। ‘দ্য গ্লোবাল আর্লি ওয়ার্নিং-আর্লি অ্যাকশন’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে খাদ্য সংকটের ঝুঁকিতে থাকা অঞ্চলগুলো চিহ্নিত করে সেখানকার পরিস্থিতির বিষয়ে জাতিসংঘকে সতর্ক করেছে সংগঠনটি। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাখাইন সহিংসতায় সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হওয়ার ফলে এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরের ৭৭ শতাংশ পরিবার তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছে। ক্ষুধা নিবারণের জন্য এদের ৯০ শতাংশকেই নির্ভর করতে হয় কমদামি অস্বাস্থ্যকর খাবারের ওপর।
পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে ৬৯ শতাংশ পরিবার দৈনিক খাবারের পরিমাণ কমাতে বাধ্য হয়। আর অর্ধাহারে থাকেন ৬৮ শতাংশ পরিবারের প্রাপ্ত বয়স্ক সদস্যরা। শরণার্থী শিবিরে পরিষ্কার পানিরও স্বল্পতা রয়েছে। এছাড়া, কক্সবাজার শরণার্থী শিবিরের ৬০ শতাংশ খাবার পানিই বিশুদ্ধ নয় বলে জানিয়েছে ফাও। গত বছরের ২৫শে আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৩৬ হাজারেরও বেশি মানুষ। আর এতে মৃত্যুবরণ করেছে ১০ জন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে শরণার্থী শিবিরে পানিবাহিত এসব রোগ দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। এতে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে, বিপুল সংখ্যক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে স্থানীয় অধিবাসীরাও অভাব অনটনের মুখে পড়েছেন। অপরিকল্পিত বসতি ও নির্বিচারে বৃক্ষনিধনের কারণে পরিবেশের ওপরও ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। পরিস্থিতির উন্নয়নে শরণার্থী শিবিরের মধ্যেই পরিকল্পিত বনায়নের পরামর্শ দিয়েছে সংগঠনটি। পাশাপাশি শরণার্থীদের ঝুঁকিমুক্ত খাবারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ফাও। অন্যদিকে, রাখাইন সহিংসতায় সম্ভাব্য খাদ্য সংকটের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) প্রধান ফ্রান্সিস মাওয়ানজা। তিনি বলেন, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) মোট ব্যয়ের ৮০ শতাংশই দেয়া হচ্ছে সংঘাতপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে। যদি কয়েকটি দেশে আমাদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকে, তাহলে সেখানে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে জানান তিনি। ফ্রান্সিস বলেন, ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গড়ার জন্য সংঘাত বন্ধ করা প্রয়োজন।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=102908