২৯ জানুয়ারি ২০১৮, সোমবার, ৯:৫২

পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে

দেখা অদেখা

সালাহউদ্দিন বাবর

বাংলাদেশের মানুষের রাজনীতিতে আগ্রহ যথেষ্ট। অন্য আলাপের চেয়ে রাজনীতি নিয়ে আলাপ করতে তারা বেশি পছন্দ করেন। ভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও তা আর বেশিদূর অগ্রসর হয় না, তাতে চলে আসে রাজনীতি। এই রাজনৈতিক সচেতনতার জন্য এ দেশের মানুষ কোনো ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় ভুল করেননি। তারা যথাসময়ে যথাযথ সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন। জনগণের এই রাজনীতিপ্রীতির সুযোগ অবশ্য নিয়ে থাকে ক্ষেত্রবিশেষে সুযোগসন্ধানীরা। তাই দেশে নামমাত্র রাজনৈতিক দলের সংখ্যা বহু। এখন আর নতুন দলের প্রয়োজন নেই। নির্বাচন কমিশনের দফতরে ৪০টি দলের নিবন্ধন রয়েছে। নিবন্ধন ছাড়াও আরো কিছু দল রয়েছে। সম্প্রতি আরো ৭৬টি নতুন দল কমিশনের কাছে নিবন্ধন চেয়ে আবেদন করেছে। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মূল স্রোতের দলের সংখ্যা ২০-এর অধিক নয়। আর এই ২০-এর মধ্যে নীতি ও আদর্শের দিক থেকে মৌলিক পার্থক্য হবে সাত-আটটির মতো। ভুঁইফোঁড় রাজনৈতিক দলের আধিক্যের কারণ হচ্ছে দলে পদ পাওয়া আর সমাজে নিজেদের ‘গুরুত্ব’ বৃদ্ধি করা। এসব দলের সাংগঠনিক কোনো কাঠামোই নেই। দল গঠনের কিছু পরেই দেখা দেয় কোন্দলজনিত দ্বিধাবিভক্তি। মূল স্রোতের দলগুলো ছাড়া আর কারো কোনো মৌলিক রাজনীতিও নেই। তাদের সংসদে কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। বিভিন্ন নির্বাচনের সময় এলে দু-একটি পদে তারা প্রার্থী দিয়ে থাকেন। এর বাড়তি একটা কাজ তারা করেন, সেটা হলো সংবাদমাধ্যমে প্রেস রিলিজ পাঠিয়ে, তা প্রকাশের জন্য কাকুতি মিনতি করা। প্রকৃতপক্ষে তারা রাজনীতির নামে অপরাজনীতি করছেন। তাই রাজনীতিতে নতুন দল গঠনের তেমন প্রয়োজন নেই। সেইসাথে রাজনীতিতে প্রয়োজন বিশুদ্ধতা। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জনগণ আশা করেÑ ক্ষমতায় যাওয়ার আগে যে ওয়াদা জনগণের কাছে তারা করেন, তা যথাযথভাবে পালন করা; ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য মানুষকে আকাশকুসুম স্বপ্ন না দেখানো; বাস্তব ভিত্তিক কথা বলা এবং সে অনুসারে কাজ করা।
রাজনৈতিক দলগুলোর একেকটি প্রতিষ্ঠান ও ইনস্টিটিউশন হিসেবে গড়ে ওঠা উচিত। এতে দলগুলোই উপকৃত হবে এবং তারা ভালো রাজনীতি জাতিকে উপহার দিতে পারবে। আমাদের রাজনীতি এবং রাজনৈতিক সংগঠনের যে সঙ্কট, তা জাতীয় রাজনীতিকে অসুস্থ করে রেখেছে। নিছক ক্ষমতার জন্যই যেন রাজনীতি; তাই মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও গণতন্ত্রের প্রতি কোনো অঙ্গীকার নেই। এর ফলে রাষ্ট্রীয়পর্যায়ে অনিয়ম দুরাচার দুর্নীতি প্রভৃতি স্থান করে নিয়েছে। ক্ষমতার মোহ গণতন্ত্রকে নিরুদ্দেশ করে দিয়েছে। দেশের মালিক জনগণ হলেও রাষ্ট্রাচারে তাদের কোনো ভূমিকা রাখার সুযোগ এখন আর লক্ষ করা যায় না। ভোট ছাড়াই দল বিজয়ী হয় এবং সরকার গঠিত হয়। এতে গণতন্ত্র জবরদস্তির কাছে হচ্ছে পরাজিত।

অনেক রাজনৈতিক সংগঠন রয়েছে যারা জনগণের প্রতি আস্থা রাখতে সাহস পায় না। এদের প্রতি জনগণের আকর্ষণ কম। এসব দলের নীতি, আদর্শ ও কর্মকাণ্ডও খুব একটা জনাশ্রয়ী নয়। সে জন্য এসব দল কখনো কোনোক্রমে ক্ষমতায় গেলে আর ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। মেয়াদ শেষে নির্বাচনের মুখোমুখি হতে তাদের অনীহা। সে কারণেই নির্বাচনী প্রক্রিয়া অবাধ নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে তাদের যত ওজর আপত্তি। এখন দেশে এমন একটা অবস্থা। বহু দল আগামী নির্বাচন প্রশ্নহীন করতে দলীয় সরকারের বাইরে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ কর্তৃপক্ষের অধীনে নির্বাচনের দাবি করছে। সেই নিরপেক্ষ কর্তৃপক্ষের স্বরূপ কী হবে তার একটা রূপরেখা তৈরির উদ্যোগও বিএনপি নিয়েছে। এটা প্রকাশ করা হবে। নিরপেক্ষ কর্তৃপক্ষের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি আওয়ামী লীগ মানতে চাচ্ছে না। দলটি তাদের সরকারের অধীনে নির্বাচন করার ব্যাপারে কোনো ছাড় দিতে নারাজ। এর আগে ২০১৪ সালে যে সাধারণ নির্বাচন আওয়ামী লীগের অধীনে হয়েছে, তা আসলে নির্বাচনের নামে প্রহসন ছিল। অথচ যখন গণতন্ত্রের কথা আসে, তখন সবাই ‘চ্যাম্পিয়’ন হতে চেষ্টা করে। ভালো রাজনীতির অনুপস্থিতির কারণেই ভালো নির্বাচন হচ্ছে না। গণতন্ত্রকে অর্থবহ করে তোলার জন্য রাজনীতিতে নীতি আদর্শের অনুসারী হতে হবে। আর সেই নীতি আদর্শের অনুশীলন করতে হবে।

এ বছর তথা ২০১৮ সালের শেষপ্রান্তে গিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন হবে বলে নির্ধারিত রয়েছে। এ নির্বাচন নিয়ে এখন আলোচনার মধ্যে একটি বিষয় প্রাধান্য পাচ্ছেÑ ভালোমানের একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের নিশ্চয়তা। অতীতে ২০১৪ সালসহ অধিকাংশ সময় জনগণের আশা অনুযায়ী, সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। এর ফলে দেশে দীর্ঘ মেয়াদি রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে। আসন্ন নির্বাচন অতীতের মতো হবে নাÑএটাই সবার আশা। এই আশা পূরণের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। সম্প্রতি রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ভালো হয়েছে। এ জন্য তারা প্রশংসাও কুড়িয়েছেন। কিন্তু এখন তাদের সমালোচনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ওপর ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন, নির্বাচন কমিশনের গাফিলতির কারণেই যথাসময়ে তথা ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হতে পারছে না। নির্বাচনী তফসিলে ত্রুটি থাকার কারণেই আদালত থেকে স্থগিতাদেশ এসেছে। এখন এ নির্বাচন সাধারণ নির্বাচনের সামান্য আগে হওয়ার কথা। কিন্তু সংসদ নির্বাচন একটি বিরাট ব্যাপার। সিটির নির্বাচন হওয়ার সামান্য পরে কমিশনের পক্ষে জাতীয় নির্বাচন করা আদৌ সম্ভব হবে কি না। সে ক্ষেত্রে উত্তর সিটির নির্বাচন আরো পিছিয়ে যেতে পারে। এত দীর্ঘ সময় উত্তর সিটির মেয়রের পদটি শূন্য থাকবে কিভাবে? উল্লেখ্য, গত বছর ৩০ নভেম্বর ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুতে পদটি শূন্য হয়। আরো ছয় মাস রাজধানীর এই সিটি করপোরেশন মেয়র ছাড়া কিভাবে চলবে, সরকার কী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, এটা দেখার বিষয়। সংবিধান কিন্তু স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কোনো পদে অনির্বাচিত ব্যক্তির থাকাকে অনুমোদন করে না।
ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ ছাত্রসংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যে অগ্নিমূর্তি ধারণ করে ভিন্ন মতাবলম্বী ছাত্রদের ওপর চড়াও হচ্ছে, তাতে এসব প্রতিষ্ঠানে চরম ভীতিকর অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রশ্নও সৃষ্টি হয়েছেÑ সরকার সমর্থক ছাত্রদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকায় কেন নামানো হচ্ছে? তাহলে কি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না? নাকি শিক্ষাঙ্গনে ভিন্ন মতাবলম্বীদের সহ্য করা হবে না? দেশের প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভিন্ন সংগঠনের অস্তিত্ব বলতে গেলে এখন আর লক্ষ করা যায় না। অন্যদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে সরকারি ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের এই তৎপরতা শুধু শিক্ষাঙ্গনের জন্য শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণ নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও এর অশুভ প্রভাব পড়বে। আরো অবাক হওয়ার বিষয়, সরকারি দলের নেতারা তাদের অনুগত ছাত্রদের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকাকে সমর্থন করেছেন। অথচ সরকার সমর্থক ছাত্রদের এই অপতৎপরতা রোধ করার ক্ষেত্রে মূল সংগঠনের নেতাদের উচিত ছিল তাদের অনুসারী ছাত্রদের অবিলম্বে নিবৃত্ত করা। এ বছরটি জাতীয় নির্বাচনের বছর।

এ সময় যাতে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত থাকে, নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ কোনোভাবে নষ্ট না হয়, তার জন্য সবার ভূমিকা রাখা উচিত। ক্ষমতাসীনদের এ নিয়ে বেশি সতর্ক থাকার কথা থাকলেও তা কিন্তু লক্ষ করা যাচ্ছে না। শুধু ছাত্রদের বিষয়ই নয়, অন্যান্য ব্যাপারেও সরকারি দলের নেতারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তির্যক ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়ে আসছেন। রাজনীতিতে বক্তব্য ও পাল্টা বক্তব্য অবশ্যই থাকবে। কিন্তু তারও একটা সীমা থাকা উচিত। লক্ষ করা গেছে, এমন সীমারেখা অতিক্রম করেই ক্ষমতাসীনেরা কথা বলে থাকেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্ক প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবেÑ এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এখন পরস্পরের সম্পর্ক বৈরিতাপূর্ণ। এর ফলে কোনো জাতীয় সঙ্কটে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রত্যাশিত ঐকমত্য সৃষ্টি হয় না, যা দেখে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হতে পারে। যেমন এখন একটি ইস্যুতে সংলাপ করে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হওয়া ছিল জরুরি। তা হলো, নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করার জন্য নির্বাচন সহায়ক সরকার গঠন এবং তার অধীনে নির্বাচন করা। কিন্তু এ প্রশ্নে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে। অথচ প্রশ্নটি যখন অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন করার, তখন এ ক্ষেত্রে কারো দ্বিমত থাকা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। জনগণ দেশের মালিক, তাদের মতামত নেয়ার ক্ষেত্রে কোনো স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার বিপক্ষে অবস্থান নেয়া সঠিক নয়। গণফোরাম প্রধান ড. কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্য রচনার কথা বলছেন। তার এই বক্তব্য অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু তার ঐক্যের প্রয়াস কাদের নিয়ে এবং কোন ইস্যুতে, তা তিনি প্রকাশ করেননি। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ধোঁয়াশা থাকলে ঐক্যের প্রক্রিয়া এগোবে না। এখন তার যারা সহযোগী তারা মধ্য বামপন্থী। আর কারা এই ঐক্যের মিছিলে থাকবেন সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে এটা ঠিক, বৃহৎ দুই দল এই ঐক্য প্রক্রিয়ায় শরিক না হলে ছোট ছোট কয়েকটি দলের ঐক্য কোনো ফলদায়ক হবে না।
দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এখন মোটামুটি। এটা আরো স্থিতিশীল এবং স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য সরকারকে ভূমিকা রাখতে হবে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, দমনপীড়ন করে পরিস্থিতি কৃত্রিমভাবে ‘স্বাভাবিক’ দেখাতে হবে। শান্তিভঙ্গের কোনো কারণ ঘটলে সরকার সমঝোতায় গিয়ে তা স্বাভাবিক করা উচিত। খবর প্রকাশিত হয়েছে, ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আনীত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় হবে। এই মামলা ফখরুদ্দীন-মইনউদ্দিন সরকারের আমলে দায়ের করা হয়েছিল।
আওয়ামী লীগ সরকারের অনেকের বিরুদ্ধে এমন মামলা করা হলেও পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হলে নিজেদের বিরুদ্ধে আনীত সব মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। বিদ্বেষপূর্ণ এমন সব মামলার যেগুলো বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে বহাল ছিল, সেগুলো সরকার প্রত্যাহার না করে চালিয়ে যাচ্ছে। সে যা-ই হোক, মামলার শুনানিকালে যেসব বক্তব্য পেশ করা হয়েছে, তাতে মনে হয়েছেÑ মামলার তেমন ‘মেরিট’ নেই। এখন দেখা যাক, রায় কী হয়। রায় যদি প্রতিকূলে যায় তবে তা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করা হবে বলে বিএনপির একজন নেতা বলেছেন। তবে এটা ঠিক, এই রায় প্রতিকূলে গেলে শুধু দলের নেতাকর্মীরাই মর্মাহত হবেন না, বিএনপির বিপুলসংখ্যক সমর্থকও মর্মাহত হবেন। রায় প্রতিকূলে গেলে উচ্চ আদালতে গিয়ে তা হয়তো স্থগিত করা যাবে। তার পরও এটা এই দলের জন্য একটি বড় আঘাত।

এ প্রভাব আগামী নির্বাচনেও পড়তে পারে। বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার জন্য যেসব দাবি উত্থাপন করেছে, তাতে তারা দৃঢ় থাকবে। তদানীন্তন ফখরুদ্দীন-মইনউদ্দিন সরকারের আমলে দায়ের করা মামলাগুলোর ব্যাপারে সরকার নিজেদের ব্যাপারে যে ভূমিকা রেখেছে, বিএনপির ব্যাপারে তার বিপরীত ভূমিকা পালন করে চরম রাজনৈতিক সুবিধাবাদিতা দেখিয়েছে। এটা প্রতিহিংসার পরিচায়ক। সাধারণভাবে সবাই মনে করে, সরকার যৌক্তিক মনোভাব দেখিয়ে এখনো দেশে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সহ-অবস্থানের পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে। সবার জন্য সুসময় সব সময় থাকে না। দুঃসময়ও জীবনে আসে। সে কথা ভেবে প্রত্যেকের উচিত সুসময়ে সদাচরণ করা। দল ভিন্ন হতে পারে; রাজনীতি পৃথক হতে পারে। কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গনে দল-মত নির্বিশেষে সবাই একই পথের যাত্রী। রাজনৈতিক নেতাদের অপর দলের নেতানেত্রীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়াই শিষ্টাচার। অনেক দিন হলো, দেশে গণতন্ত্র এসেছে; কিন্তু আমরা আজো গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার রপ্ত করতে পারিনি। এদিকে সরকার হুমকি দিয়েছেÑ বেগম জিয়ার মামলার রায় নিয়ে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হলে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে। এখনো স্পষ্ট নয়, পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে।

 

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/289077