২৬ জানুয়ারি ২০১৮, শুক্রবার, ৯:৪৪

উদ্বোধনের আগেই হেলে পড়েছে সেতু

টাঙ্গাইলের বাসাইলে উদ্বোধনের আগেই হেলে পড়েছে অর্ধ কোটির অধিক টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট দীর্ঘ একটি সেতু। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের অভিযোগ খুবই নিন্মমানের নির্মানের সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে সেতুটি উদ্বোধনের আগেই ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। আর এজন্য বাসাইল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে গত ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে টাঙ্গাইল জেলার ১২টি উপজেলায় মোট ১২৮টি সেতু নির্মাণের দরপত্র আহবান করা হয়। এর মধ্যে বাসাইল উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে সাতটি সেতু রয়েছে। সাতটি সেতুর মধ্যে চারটি সেতুর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। বাকি তিনটি সেতুর নির্মাণ কাজ চলমান আছে। বাসাইলের ফুলকি ইউনিয়নের ফুলকি ফুলবাড়িয়া রাস্তার নিকরাইল টেংরাখালী সেতুর কাজটি পায় মেসার্স আব্দুল্লাহ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রায় ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি প্রায় তিন মাস আগে সমাপ্ত হয়। সেতুটি নির্মাণের সময়েই রড, সিমেন্ট ও বালুসহ খুবই নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

এ ব্যাপারে স্থানীয়রা মৌখিকভাবে বেশ কয়েকবার অভিযোগ জানায় বাসাইল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেনের কাছেও। কিন্তু ওই কর্মকর্তা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। স্থানীয়, বাবুল মিয়ার অভিযোগ সেতুটি নির্মাণের সময় ঠিকাদারকে দেখা যায়নি। সে সময় ধান কাটা শ্রমিকদের দিয়ে সেতুর কাজ করতে দেখা যায়। এসব অনিয়মের ব্যাপারে প্রকল্প কর্মকর্তাকে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। একই অভিযোগ স্থানীয় অনেকের। তাদের অভিযোগ প্রকল্প কর্মকর্তার উদাসীনতা ও গাফিলতির কারণেই সেতুটির এই অবস্থা। স্থানীয় ১০/১৫ গ্রামের সাথে উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ চলে আসছে এ সেতু দিয়ে। সেতুটি হেলে গিয়ে ধসে পড়ার আশংকায় ওই সড়ক দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয়রা। তাদেরকে এখন প্রায় ১৫ কিলোমিটার ঘুরে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বাসাইল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সাখাওয়াত হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে পানির ¯্রােতের কারণে সেতুটি হেলে পড়েছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। উদ্বোধনের আগেই প্রায় ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি হেলে পড়ার বিষয়ে বাসাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল ইসলাম জানান, সেতুটি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই প্রকল্প অফিসের প্রকৌশলীরা পরীক্ষা নিরীক্ষা ও পরিদর্শন করে গেছেন। এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্নধার জাহিদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামসুন নাহার সম্পা তদন্তপূর্বক এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।

 

https://www.dailyinqilab.com/article/114292