২৫ জানুয়ারি ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৫:২২

গ্রামীণ শিল্পে বিনিয়োগে ভাটা

চার মাসে কমেছে ৩৫ শতাংশ

বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ছে, কিন্তু এর প্রভাব পড়ছে না গ্রামীণ এলাকার ক্ষুদ্র কুটির শিল্পে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) এ শিল্পে বিনিয়োগ কমেছে ৩৫ শতাংশ। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ অবকাঠামো সুবিধার অভাবসহ বিভিন্ন প্রতিকূলতার প্রভাব পল্লী এলাকায় পড়েছে। বিনিয়োগ কমায় সঙ্কুচিত হয়ে আসছে গ্রামীণ কর্মস্থান। 

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, শহরের চেয়ে গ্রামে অবকাঠামোর সুবিধা কম। শহরে যে হারে বিদ্যুৎ বিতরণ করা হয়, গ্রামে ওই হারে হয় না। এমনও এলাকা আছে যেখানে দিনে রাতে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকে না। এর বাইরে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগবিমুখী তো রয়েছেই। সব মিলে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগে ভাটা পড়েছে।

বিভিন্ন অর্থনৈতিক সূচক দিয়ে তৈরি বাংলাদেশ ব্যাংকের মাসিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসের প্রতি মাসেই গ্রামীণ এলাকার ুদ্র শিল্পে বিনিয়োগ কমেছে। জুলাইয়ে এ শিল্পে বিনিয়োগ হয়েছিল সাড়ে ৮৪ কোটি টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১১১ কোটি টাকা। প্রথম মাসেই এ খাতে বিনিয়োগ কমেছে প্রায় ২৪ শতাংশ। তেমনিভাবে আগস্ট মাসে প্রায় ১০ শতাংশ, সেপ্টেম্বর মাসে ৩৯ শতাংশ এবং অক্টোবর মাসে ৪৯ শতাংশ বিনিয়োগ কমেছে গ্রামীণ শিল্পে। অথচ গত নভেম্বরে বিনিয়োগ বেড়ে ছিল ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ।

দেশের দ্বিতীয় প্রজন্মের একটি ব্যাংকের এমডি গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, পল্লী এলাকায় ুদ্র শিল্পে বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার অন্যতম কারণ হলো অবকাঠামো সুবিধা ও উদ্যোক্তার অভাব। অনেকেই নানা পরিস্থিতির কারণে এলাকা ছাড়া হয়ে পড়েছেন। অনেকেই ব্যবসায় বাণিজ্য গুটিয়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন। এসব কারণে অনেকেই ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি, কেউবা ঋণখেলাপি হয়ে পড়েছেন। অপর এক ব্যাংকার জানিয়েছেন, পল্লী এলাকায় ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ব্যাংকারদের এমনিতেই অনীহা থাকে, এর ওপর খেলাপি ঋণের কারণে কোনো কোনো ব্যাংক পুরোপুরিই ঋণ বিতরণ বন্ধ রাখে।

ফলে যে হারে বিনিয়োগ হচ্ছিল, মাঝখানে তার ভাটা পড়ে। আবার পল্লী এলাকায় সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ভালো উদ্যোক্তার অভাব। যাকে ঋণ দেয়া হবে, তার কাছ থেকে ঋণ ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা না থাকলে পুরো ঋণই ঝুঁকির মুখে পড়ে। এসব বিবেচনায় পল্লী এলাকায় ঋণ বিতরণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গ্রামীণ শিল্পে ঋণপ্রবাহে ভাটা পড়লেও প্রায় প্রতি মাসেই আদায় বেড়েছে। যেমনÑ চার মাসে এ শিল্পে আদায় হয়েছে ৪৪৮ কোটি টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪৪৫ কোটি টাকা।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/287997