২৩ জানুয়ারি ২০১৮, মঙ্গলবার, ১০:০৭

শিক্ষার ঘুষের হাটের কারবারি

শিক্ষা প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্রে ঘাঁটি গেড়েছিলেন তারা। একজন খোদ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা। অন্যজন উচ্চমান সহকারী। মন্ত্রীর দপ্তরে বসে তারা দিব্যি ঘুষের হাট বসিয়ে গড়েছেন অর্থ-বিত্তের পাহাড়। তাদের ঘুষ-দুর্নীতির বিষয়টি সচিবালয়েই ছিল ওপেন সিক্রেট। আড়াল-আবডালে বলাবলি হতো একই মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে।

কিন্তু অদৃশ্য আশীর্বাদের কারণে তাদের টিকি ছোঁয়ারও সাধ্যি ছিল না কারও! ঘুষের হাটের এই কারবারিরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কব্জায় আসায় এ নিয়ে তুমুল আলোচনা দেশজুড়ে। তোলপাড় চলছে প্রশাসনের কেন্দ্র সচিবালয়েও। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের নিজের
দপ্তরে রেখে সততার দাবিদার মন্ত্রীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। ঘুষ নিয়ে বক্তব্য দিয়ে বিতর্কে আসা মন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকে এই অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর অনেকে মন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে ঘটনার যোগসূত্র তৈরির চেষ্টাও করছেন। দুই কর্মকর্তা-কর্মচারী গ্রেপ্তারের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আরো কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী গ্রেপ্তার আতঙ্কে আছেন। তাদের বিরুদ্ধেও ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে বিস্তর।
রোববার শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) মোতালেব হোসেন ও উচ্চমান সহকারী নাসির উদ্দিনকে দুর্নীতির দায়ে গ্রেপ্তার দেখানোর পর তাদের অর্থ-বিত্তের বিষয়টি এখন আলোচনায়। মানবজমিনের অনসুন্ধানেও এ দু’জনের বিপুল অর্থ-বিত্তের সন্ধান মিলেছে। যা দ্বিতীয় শ্রেণির একজন কর্মকর্তার পক্ষে বৈধভাবে উপার্জনের কোনো সুযোগ নেই বলে তার সহকর্মীরাই বলছেন।

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামে সাধারণ কৃষক পরিবারে জন্ম মোতালেব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে টাইপরাইটার পদে যোগ দিয়ে চাকরি জীবন শুরু করেছিলেন। পদোন্নতি পেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হন। নিয়োগ পান শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে। এরপরই তার ভাগ্য বদলের পালা। গ্রেপ্তার দেখানোর আগে রাজধানীর বসিলায় নির্মাণাধীন যে বাড়ি থেকে তিনি নিখোঁজ হয়েছিলেন বলে বলা হচ্ছিল সেই বাড়িটি নির্মাণে তিনি ব্যয় করছেন অন্তত সাড়ে তিন কোটি টাকা। জমির মূল্য ধরলে ওই বাড়ির মূল্য দাঁড়াবে চার কোটি টাকার উপরে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্র জানিয়েছে, ঘুষের হাট বসানো দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে গুরুতর ও স্পর্শকাতর এক অনিয়মের সূত্র ধরে। জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বন্ধ করে দেয়া রাজধানীর লেকহেড গ্রামার স্কুল চালু করার (বর্তমানে চালু আছে) প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছিল তাদের একজন। গতকাল রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গ্রেপ্তার দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানিয়েছে, মামলার কাগজপত্র প্রস্তুত হচ্ছে। ঘুষ-অনিয়মের অভিযোগেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। এদিকে গতকাল শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সাংবাদিকদের তিনি জানান, কেউ ঘুষ খাবে না- এটা বলাই ছিল। কিন্তু তারা এত কিছু করলো এ রকম রিপোর্ট আমার কাছে আসেনি। তিনি বলেন, তাদের পুলিশ ধরেছে এখন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো অন্যায় দুর্নীতি বা ঘুষের সঙ্গে জড়ালে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া যাবে তা চাকরি বিধিতে বলা আছে।

গ্রেপ্তার দু’জন ছাড়াও আরো পাঁচজনের একটি গ্রুপ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সিন্ডিকেট করে বদলি, জাল সনদে চাকরি পাইয়ে দেয়া, এমপিও, পদোন্নতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে। তারাও আছেন গ্রেপ্তার আতঙ্কে। এদের কেউ কেউ মন্ত্রণালয়ে এসে অফিস করতেও ভয় পাচ্ছেন।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই পিও হিসেবে আছেন মোতালেব। মাঝখানে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তাকে সরিয়ে দেয়া হয়। এরপর দুই মাসের মধ্যে ফের পিও’র দায়িত্বে চলে আসেন। মন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হওয়ার পর কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান তিনি। রাজধানীর বছিলায় ছয়তলা আলিশান বাড়ি তৈরি করেছেন মোতালেব। এছাড়াও মিরপুর ডিওএইচএসে তার ফ্ল্যাট রয়েছে বলে তার সহকর্মীরাই তথ্য দিয়েছেন।

মোতালেবের বাবা দেনছের আলী হাওলাদার ছিলেন একজন কৃষক। তার রেখে যাওয়া ভিটায় কেবল একটি টিনের ঘর আছে। দেনছের আলীর পাঁচ সন্তানের মধ্যে মোতালেব হোসেন সবার বড়। এলাকায় তিনি কমই যাতায়াত করেন।
পশ্চিম ধানমন্ডির বসিলা এলাকার সবাই একনামেই চিনেন তাকে। এই এলাকাতেই কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে ভবন তৈরি করছেন। ইতিমধ্যে ছয়তলা ভবনের কাজও শেষ পর্যায়ে। এলাকার সবাই তাকে চিনেন শিক্ষামন্ত্রীর কাছের লোক হিসেবে। ছুটির দিনে ওই বাড়িতে যখনই আসতেন অল্প সময়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য ছুটে যেতেন অনেকে। পাড়ার গলিতে তখন গাড়ির দীর্ঘ সারি। আগতরা তাকে লিডার হিসেবে সম্বোধন করেন।
গতকাল পশ্চিম ধানমন্ডি মসজিদ রোড এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে বি ব্লকের চার নম্বর সড়কে বিলাসবহুল বাড়ি তৈরি করছেন মোতালেব। ওই বাড়িতে সার্বক্ষণিক একজন তত্ত্বাবধায়ক রয়েছেন। কাজও চলছিলো জোরেশোরে। কিন্তু গত শনিবার থেকে কাজ বন্ধ। পাশের চা বিক্রেতা বলেন, ‘লিডার নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে কাম-কাজ বন্ধ।’ ইতিমধ্যে ভবনের ছয় তলা পর্যন্ত কাজ করা হয়েছে। দু’তলার কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়েছে। প্রতি তলায় দুটি ইউনিট। দু’তলায় উঠে দুটি ইউনিটের দরজায় তালা ঝুলতে দেখা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, কম টাকায় অন্যের দখলের জমি কিনতে আগ্রহী ছিলেন তিনি। জবর-দখলের দায়িত্ব তার নিজের। শুধু কাগজ হলেই চলবে। এমনটিই বলতেন জমির দালালদের। কথায় কথায় দম্ভ করতেন শিক্ষামন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে। এসব কারণেই তার সম্পর্কে কথা বললেও ভয়ে অনেকে পরিচয় দিতে চান না। তারা জানান, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার লোকজন নানা তদবির নিয়ে হাজির হতেন তার কাছে। নির্মাণাধীন বাড়ির দু’তলায় মোতালেবের বৈঠকখানা। সেখানে জড়ো হতেন আগতরা। খাবার আনা হতো ধানমন্ডি থেকে।
প্রায় সাত মাস আগে এই ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। দ্রুতই কাজ প্রায় শেষ হতে যাচ্ছে। বসিলার ওই এলাকার মতোই তাকে ঘিরে তৎপরতা ছিল মিন্টু রোডের ডিএমপি ও ডিবি অফিসে। এই তৎপরতায় সম্পৃক্ত ছিলেন লেকহেড স্কুলের মালিক মো. খালেদ হাসান মতিন, শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. মোতালেব হোসেন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী মো. নাসির উদ্দিন।

সূত্রমতে, দীর্ঘদিন থেকেই শিক্ষামন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ জন ও এই মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তার প্রতি নজরদারি ছিল গোয়েন্দাদের। জঙ্গি তৎপরতা ও ধর্মীয় উস্কানির অভিযোগে লেকহেড স্কুল বন্ধ হওয়ার পর স্কুলকে কেন্দ্র করে তদন্ত শুরু করেন গোয়েন্দারা। তদন্তের এক পর্যায়ে খালেদ হাসান মতিনের সঙ্গে নাসিরুদ্দিনের যোগাযোগের সূত্র পান তারা। ওই সূত্র ধরেই জানা যায় এতে সম্পৃক্ত রয়েছে শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোতালেব। বিপুল অঙ্কের টাকার মাধ্যমে গোপনে দফারফা হয় লেকহেড স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। স্কুল খুলে দেয়ার দায়িত্ব নিয়েছিলেন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ক’জন। কথা ছিল টাকা দেয়া হবে কয়েক ধাপে। দুর্নীতির এই বিষয়টি পৌঁছে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতার কানে। তার নির্দেশেই তৎপরতা আরো বৃদ্ধি করেন গোয়েন্দারা। অবশেষে টাকা নিতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন নাসির উদ্দিন। একই অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় বাকি দুজনকেও। গ্রেপ্তারের পর গতকাল দিনভর ডিএমপি ও ডিবি পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মামলা দিয়ে আদালতে হাজির করার প্রস্তুতি থাকলেও শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশ না আসায় তা সম্ভব হয়নি। সূত্রমতে, শেষ পর্যন্ত দুটি মামলায় তিন জনকে আসামি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেকোনো সময়ে গুলশান ও হাজারীবাগ থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হবে।
এ বিষয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। যথাসময়ে তাদের আদালতে হাজির করা হবে।
গ্রেপ্তার হওয়া উচ্চমান সহকারী নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। দুর্নীতি দমন কমিশন তার দুর্নীতির তদন্ত করছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক নির্র্ভরযোগ্য সূত্রমতে, জঙ্গি ও ধর্মীয় উস্কানির দায়ে সম্প্রতি বন্ধ হওয়া লেকহেড স্কুল খুলে দেয়ার শর্তে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেয়ার অলিখিত চুক্তি হয়। অগ্রিম হিসেবে ৬ লাখ টাকা নিয়েছিল। কাজ হলে বাকিটা দেয়ার কথা ছিল। এর সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের স্কুল শাখার কর্মকর্তারা সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। মোতালেব গ্রেপ্তার হওয়ার পর তারাও গ্রেপ্তার আতঙ্কে আছেন। উচ্চমান সহকারী নাসির উদ্দিন সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বনভোজন আয়োজন কমিটিতে ছিলেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অভিযোগ করেন, বনভোজন তারিখ শুরু হওয়ার পর থেকেই নাসির তৎপরতা শুরু করেন। বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বনভোজনের নামে মোটা অঙ্কের চাঁদা তোলার অভিযোগ আসতে থাকে তার বিরুদ্ধে। এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা তাকে ডেকে সাবধান করার পরও তিনি থামেননি। তাকে ১৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা তোলার দায়িত্ব দেয়া হলেও রাজধানী এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই যেখানে নাসির চাঁদা চায়নি। বনভোজনের একদিন আগেই নাসির নিখোঁজ হওয়ার আগ পর্যন্ত তার কাছে প্রায় ২ কোটি টাকা ছিল বলে কর্মকর্তারা জানতে পেরেছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মচারী সমিতির নেতারা জানান, এমপিও জালিয়াতিসহ নানা অনিয়ম করে নাসির এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। ২০১৩ সালে এমপিও জালিয়াতির দায়ে নাসিরকে ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৫ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পে অফিস সহায়ক হিসেবে চাকরি নেন এই নাসির। পরে মাউশির অফিস সহকারী পদে চাকরি পান তিনি। এরপর থেকে তার উত্থান শুরু। মাউশির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শাখায় কাজ করেছেন নাসির। ২০১০ থেকে মাউশি থেকে বদলি হওয়ার আগ পর্যন্ত এমপিও শাখায় ছিলেন তিনি। এমপিও পেতে হলে নাসিরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে এরকম কথা প্রচলিত ছিল শিক্ষা ভবনে। তার বিরুদ্ধে পাহাড়সহ অভিযোগ আসার পর তৎকালীন মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন তাকে ঢাকার বাইরে বদলি করেন। এর মধ্যে মাউশি থেকে এমপিও ৯টি আঞ্চলিক কেন্দ্রে বিকেন্দ্রীকরণ করা হলে তিনি আবার ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্রে বদলি হয়ে আসেন। কয়েক মাসের মধ্যে আঞ্চলিক কেন্দ্রের উপ-পরিচালক গৌর চন্দ্র মণ্ডলের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের লিখিত অভিযোগ করেন নাসির। অভিযোগে এমপিও পেতে শিক্ষকদের হয়রানি, ঘুষসহ বিভিন্ন অভিযোগ করা হয়। এ ব্যাপারে উপ-পরিচালক গৌড় চন্দ্র মণ্ডল বলেন, আমি তার অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ি। উল্টো সে আমার বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করে। তার হাত অনেক লম্বা ওইদিন বোঝা গেছে। তবে তদন্ত করে অভিযোগের কোনো সত্যতা পায়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেখানে সুবিধা করতে না পেরে উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে তৎপর হন নাসির। পরে নাসিরকে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় আকবর আলী খান কলেজে বদলি করা হয়। এরমধ্যে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সুপারিশ নিয়ে মাউশিতে বদলি হয়ে আসার চেষ্টা শুরু করেন। কিন্তু তৎকালীন মাউশির মহাপরিচালক তার ব্যাপারে সায় দেয়নি। পরে মোতালেব চক্রকে ধরে প্রেষণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আসেন নাসির। দায়িত্ব দেয়া হয় পত্র গ্রহণ ও ছাড়পত্র শাখায়। তবে তিনি সব শাখায় দৌড়ঝাঁপ করতেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তাকে আনার পেছনে শিক্ষামন্ত্রীর সাবেক একজন এপিএস কলকাটি নাড়েন বলে আলোচনা আছে।

নাসির খিলক্ষেতের কনকর্ড লেকসিটি টাওয়ারের একটি ফ্ল্যাটে সপরিবারে বসবাস করেন। ওই ভবনে তার দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নাসিরের এক সহকর্মী। নাসির খিলক্ষেত এলাকায় এফএনএফ (ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ফ্যামিলি) ক্লাব নামে (সমিতি) প্রতিষ্ঠা করেন। নাসির এই ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=101758