২২ জানুয়ারি ২০১৮, সোমবার, ৮:৪৩

সীমিত সড়কে সাত বছরে গাড়ি দ্বিগুণ

অপরিকল্পিত নগরায়ণে ঢাকা মহানগরে ভূমির সংকট তীব্র হওয়ায় ভূমির সমান্তরালে সড়ক নির্মাণ কঠিন হয়ে পড়েছে। ঢাকায় জন ও যান চলাচলের সড়ক তাই ভূমির সমতল থেকে বিদ্যমান সড়কের ওপর দিয়ে নির্মাণ করতে হচ্ছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে ফ্লাইওভার। ভারত, চীন ও মালয়েশিয়ায় যেখানে ফ্লাইওভারে প্রতি কিলোমিটারে খরচ পড়ছে শত কোটি টাকার নিচে, মূলত ভূমি অধিগ্রহণ ব্যয়ের কারণে ঢাকায় সেই খরচ কিলোমিটারে শত কোটি টাকার বেশি হচ্ছে, এমনকি কোথাও তা ৪০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। দোতলা বা তিনতলা বা তারও বেশি উচ্চতার একাধিক সড়ক এবং একটি রেলপথ (উত্তরা-মতিঝিল) নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। পর্যাপ্ত সড়ক না থাকা সত্ত্বেও গত সাত বছরে রাজধানীতে গাড়ি নিবন্ধন বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। কিন্তু সেই হারে বাড়েনি গণপরিবহন তথা বাস ও মিনিবাসের নিবন্ধন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সর্বশেষ তথ্য পর্যালোচনা করে এই উদ্বেগজনক চিত্র পাওয়া গেছে।

বিআরটিএর পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ঢাকায় ২০১০ সাল পর্যন্ত নিবন্ধিত গাড়ি ছিল পাঁচ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭টি। পরে ২০১১ সালে নিবন্ধন হয়েছে ৭২ হাজার ৯৪৭টি গাড়ির। ২০১২ সালে ৫৯ হাজার ৫৭৩, ২০১৩ সালে ৫৪ হাজার ৪৯২, ২০১৪ সালে ৭৩ হাজার ৫১, ২০১৫ সালে ৯৫ হাজার ৭৪৩, ২০১৬ সালে এক লাখ ১০ হাজার ৫২০ এবং ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত এক লাখ ১৪ হাজার ২৭১টি গাড়ির নিবন্ধন হয়েছে। এই হিসাব অনুযায়ী ২০১৭ সালে প্রতি মাসে গড়ে নিবন্ধন হয়েছে ১১ হাজার ৪২৭টি গাড়ির। এভাবে বেড়ে গত অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকায় নিবন্ধিত গাড়ির সংখ্যা হয়েছে ১১ লাখ ৭৩ হাজার ৬৭৪। আর গত বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ২২ হাজার ৮৫৪টি গাড়ির নিবন্ধন ধরে নিলে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সাত বছরে মোট নিবন্ধিত গাড়ির সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১২ লাখে। অর্থাৎ সাত বছরে নিবন্ধন বৃদ্ধির হার ১০০ শতাংশ। অথচ একই সময়ে গণপরিবহন (বাস-মিনিবাস) নিবন্ধন বৃদ্ধির হার ৬৭ শতাংশ।
ঢাকায় নিবন্ধিত গাড়ি ছাড়াও প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে গাড়ি ঢুকে চলাচল করছে নগরীতে। ঢাকার সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, সুপারিশগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন না হলে ঢাকায় ২০৩৫ সালে বেড়ে দ্বিগুণ হবে যানজট। তবে গাড়ি নিবন্ধন নিয়ন্ত্রণে না আসায় ওই সময়ের আগেই যানজট দ্বিগুণের বেশি হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের কর্মসূচি, মেলা, উৎসব, অনুষ্ঠান, ভিআইপি চলাচল এবং উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের জন্য নিয়মিত অচলাবস্থা তৈরি হচ্ছে ঢাকার রাস্তায়।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ঢাকায় সর্বোচ্চ দুই লাখ ১৬ হাজার গাড়ি চলাচল করার কথা। সেখানে নিবন্ধন আছে তার চেয়ে প্রায় ছয় গুণ বেশি গাড়ির।
ঢাকার যানজট নিরসনের কাজে সরাসরি জড়িত ৮ থেকে ১০টি সংস্থা। পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ৩২টি সংস্থা। এ ক্ষেত্রে তাদের সমন্বয় নেই। যানজট সামাল দিতে এসব সংস্থার কাজে সমন্বয় আনা জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সেই সঙ্গে আন্দোলন কর্মসূচির জন্য মাঠসহ খোলা স্থান ব্যবহারের সুযোগ অবারিত করে দেওয়া উচিত বলেও মত দেন তাঁরা।

যানজট সামলাতে হিমশিম ট্রাফিক পুলিশ : ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গাড়ির চাপ সামাল দিতে ভিআইপি সড়কে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করা, একমুখী সড়ক চালু, প্রতি সপ্তাহে এলাকাভেদে আলাদা দিনে বিভিন্ন বিপণিবিতান বন্ধ রাখাসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইদানীং ক্রসিংয়ে দড়ি টানিয়ে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে। এত কিছু করেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গত ১৬ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে বলেছেন, ‘আমাদের ট্রাফিক পুলিশ যানজট নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। ঢাকায় প্রতিদিন ৩৭১টি নতুন গাড়ি নামছে, যার বেশির ভাগই ব্যক্তিগত।’
গভীর রাতে, ছুটির দিনেও যানজট : গত কয়েক দিন সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গভীর রাতে এবং ছুটির দিনেও যানজট লেগে থাকে ঢাকায়। কর্মদিবসে কোনো এলাকায় রাজনৈতিক বা পেশাজীবী সংগঠন কিংবা শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির রেশ ধরে পুরো মহানগরী অচল হয়ে পড়ে। ঢাকায় বিকল্প প্রধান সড়ক নির্মাণ করা হয়নি প্রায় ৩০ বছরেও। কোনো এক অংশে চাপ বাড়লে তাই বিমানবন্দর-শাহবাগ, গাবতলী-আজিমপুর, মালিবাগ-প্রগতি সরণি-কুড়িল, মিরপুর-১২, যাত্রাবাড়ী সড়ক অথবা এসব সড়কের স্থানে স্থানে যানজট তীব্র হয়ে ওঠে।
পরিবহনব্যবস্থা বিশেষজ্ঞ ড. সামছুল হক জানান, ঢাকায় বাস চলাচলের জন্য ১০ থেকে ১২ শতাংশ জায়গা থাকার কথা, সেখানে আছে আড়াই শতাংশ। ঢাকার কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা অনুসারে, পূর্ব ও পশ্চিমে সংযোগ তেমন বাড়েনি। পূর্বাঞ্চলে সড়ক সম্প্রসারণ করা হয়নি। বিমানবন্দর সড়ক এবং গাবতলী-আজিমপুরসহ চারটি বড় সড়কের ওপর বেশি চাপ পড়ছে।

জানা গেছে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন এবং সাভার ও কেরানীগঞ্জ ঢাকা মেগা সিটির অন্তর্ভুক্ত। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আয়তন ১২৯ বর্গকিলোমিটার থেকে বেড়ে হয়েছে ২৭০ বর্গকিলোমিটার। ১৬টি ইউনিয়ন যোগ হওয়ায় সিটির আয়তন বাড়লেও নতুন সড়ক বাড়েনি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কুড়িল ফ্লাইওভার, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার, বনানী ওভারপাস, জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার নির্মাণ এবং হাতিরঝিল সমন্বিত প্রকল্পের অধীন পূর্ব-পশ্চিমে কিছু সড়ক বেড়েছে। তবে মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভার চালু হলেও তাতে যানজট ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। সাড়ে আট বছরে সরকার ছয়টি প্রকল্পের অধীনে ঢাকায় ২৯ কিলোমিটার ফ্লাইওভার নির্মাণ করেছে। কুড়িল, মালিবাগ, বনানী, তেজগাঁও, মিরপুরের মাটিকাটাসহ বিভিন্ন স্থানে সড়কের ওপর দিয়ে এগুলো করতে হয়েছে। বিমানবন্দর সড়ক থেকে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত এবং বিমানবন্দর সড়ক থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করতেও প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

উন্নয়ন প্রকল্পের নানা কাজের কারণে বিদ্যমান সড়কের বড় অংশ বন্ধ থাকায় যানজট আরো অসহনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও দুপুর থেকেই বিজয় সরণি থেকে পুরো রোকেয়া সরণি হয়ে মিরপুর-১২ পর্যন্ত সড়কটি প্রায় অচল ছিল। দুপুর আড়াইটায় শেওড়াপাড়া থেকে মিরপুর-১২ নম্বর যেতে লেগেছে এক ঘণ্টা। মিরপুর থেকে সবচেয়ে বেশি বাস চলাচল করে ঢাকায় এবং এর আশপাশে। মিরপুর-নতুনবাজার রুটের বিহঙ্গ পরিবহনের যাত্রী রিয়াজ মিয়া কাজীপাড়ায় ৪০ মিনিট আটকে ছিলেন। তিনি বললেন, ‘সামনে আরো আটকে পড়তে হবে। দেখি, কখন যেতে পারি।’
জানা গেছে, মেট্রো রেল প্রকল্পের কাজের জন্য এই পথে প্রধান সড়কের মাঝামাঝি সব মিলিয়ে প্রায় অর্ধেক অংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাতে ওই সড়কে যানজট এক রকম স্থায়ী রূপ নিয়েছে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের গবেষণা ফেলো ড. মো. শাহনেওয়াজ হোসেন বলেছেন, যানজটের কারণে বিমানবন্দর থেকে পোস্তগোলা পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার পথেই দিনে গড়ে ক্ষতি হচ্ছে ২২৭ কোটি টাকা।

অ্যাপভিত্তিক সেবায় যানজট আরো বাড়তে পারে : বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যানজটের বড় কারণ ব্যক্তিগত গাড়িকে নিরুৎসাহিত না করা। গত ১৫ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে অ্যাপভিত্তিক পরিবহন পরিচালনার নীতিমালা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কত গাড়ি এই নতুন সেবার আওতায় নামানো যাবে তার নিয়ন্ত্রণ না রেখেই নীতিমালা করায় যানজটের মাত্রা বেড়ে যাবে। নীতিমালা অনুমোদন হওয়ার পর পুরনো গাড়ি কিনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভাড়ায় চালানোর প্রবণতা বেড়েছে। জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২২ নভেম্বর চালু হওয়ার পর থেকে এ যাবৎ উবারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অ্যাপভিত্তিক সেবায় যোগ হয়েছে ১০ হাজার পুরনো ব্যক্তিগত গাড়ি। এ ছাড়া মোটরসাইকেল যোগ হয়েছে আরো ১৫ হাজার।

রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাড়ে ভোগান্তি : সাংগঠনিক কর্মসূচি রাজধানীতে কর্মদিবসে সকাল থেকেই ৭৩টি সিগন্যালে স্তব্ধ হয়ে পড়ে যান চলাচল। বিশ্বের যানজটপূর্ণ নগরীগুলোর একটি ঢাকা। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, দিনে ঢাকায় গড়ে নষ্ট হচ্ছে ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা। তবে কর্মঘণ্টা বেশি নষ্ট হচ্ছে ঢাকার কোনো অংশে সড়কে শোভাযাত্রা, সংবর্ধনা, মিছিল, অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচির কারণে। রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকলে ঢাকার বিভিন্ন অংশ অচল হয়ে পড়ে। এতে দুর্ভোগ বাড়ে নাগরিকদের। তবে গত ৭ জানুয়ারি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে ঢাকা যানবাহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, শুক্র ও শনিবার ছাড়া রাজধানীতে শোভাযাত্রা বা সভা-সমাবেশ করা যাবে না।

সরকারের শেষ বছরে দাবি আদায়ের জন্য রাজপথে কর্মসূচি বাড়ছে। বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীরাও রাস্তায় নামছে। গাড়িতে ঠাসা রাজধানীতে দেখা দিচ্ছে অসহনীয় দুর্ভোগ। এমন পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে যথাযথ বিকল্পব্যবস্থা রাখা এবং সঠিক ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সামছুল হক গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাহবাগে আধঘণ্টার বেশি যানজটে আটকে ছিলেন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কোনো অসুস্থ রোগী বিকল্পপথে দ্রুত হাসপাতালে যেতে পারবে—এমন সুযোগও নেই। মাটির ওপরে ও নিচে রেলপথ থাকলে বিকল্প পথ তৈরি হতো। দাবির আন্দোলনের জন্য আগে মুক্তাঙ্গন ছিল। সেটা দখল করে গাড়িস্ট্যান্ড করা হয়েছে। পল্টন মাঠ সেভাবে আর নেই। আন্দোলনের জন্য খোলা স্থান ব্যবহারের সুযোগ অবারিত করে দেওয়া উচিত। যানজট নিরসনে সরাসরি জড়িত ৮ থেকে ১০টি সংস্থা। পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ৩২টি সংস্থা। ঢাকায় এ ক্ষেত্রে তাদের সমন্বয় নেই।’
জানা গেছে, ডিএনসিসি, ডিএসসিসি, রাজউক, সওজ অধিদপ্তর, এলজিইডি, ডিটিসিএ, ট্রাফিক পুলিশ, বিআরটিএ, বিআরটিসিসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে পরিবহন পরিচালনার ব্যবস্থাপনা নিয়ে কোনো সমন্বয় নেই। তবে ডিটিসিএর প্রকৌশলী (পরিবহন) আনিসুর রহমান বলেন, সব সংস্থার মধ্যে সমন্বয় আরো জোরদার করার সুযোগ আছেই। ঢাকায় বাস কম্পানি গঠন করে পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনার জন্য প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। সমীক্ষা আগেই শেষ হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় বর্ষের ফল প্রকাশ ও তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা নেওয়াসহ কয়েকটি দাবিতে গত বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন নিউ মার্কেট মোড়ে। তার এক ঘণ্টা আগে ইডেন কলেজের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। তাতে যান চলাচলে অচলাবস্থা দেখা দেয়। ১১টা থেকে যান চলাচল বন্ধ থাকে আজিমপুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও বিজিবি সদর দপ্তরসংলগ্ন চারটি সড়ক ধরে। চলাচলের অন্যতম একটি সড়ক গাবতলী থেকে আজিমপুর। বিভিন্ন পরিবহন মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, এই পথে গণপরিবহনের ৮০ শতাংশই বন্ধ হয়ে পড়েছিল। শ্যামলী থেকে সকাল ১০টায় রওনা দিয়ে সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার পথে সায়েন্স ল্যাবরেটরির আগেই আটকা পড়েন ইয়াসমীন হক। যানজট ঠেলে শেষ পর্যন্ত দুপুর আড়াইটায় তিনি সচিবালয়ের সামনে যেতে পারেন। সচিবালয়ে ঢোকার আগেই মোবাইল ফোনে জানতে পারেন, বাকি সময়ে নির্দিষ্ট জরুরি কাজটি করা আর সম্ভব হবে না। শ্যামলীর দিকে যেতে চাইলে বাসের অপেক্ষা করেও পাননি। কারণ যানজটে বাস উধাও। ভুক্তভোগী যাত্রী ও চালকরা জানায়, দাবি আদায়ের জন্য কোনো রাস্তা বন্ধ থাকলে হঠাৎ দুর্ভোগ নেমে আসে। সে ক্ষেত্রে বিকল্প সড়কে চলাচল বা সড়কের অংশ দিয়ে চলাচলের জন্য ট্রাফিক পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ব্যবস্থা নিতে পারেন।

http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2018/01/22/592535