২২ জানুয়ারি ২০১৮, সোমবার, ৮:৩৬

চট্টগ্রামে বেপরোয়া ছাত্রলীগ

এক রাতে তিন স্থানে সংঘর্ষ * তিন পুলিশ সদস্য আহত * ১৫ নেতাকর্মী আটক

চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। শনিবার রাতে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা তিনটি স্থানে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ক্যাডারদের হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। নাসিরাবাদ সরকারি পলিটেক ইন্সটিটিউট এলাকায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে এক ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হলের সিট দখলকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপে সংঘর্ষ হয়েছে। চমেক হাসপাতালে হামলার ঘটনায় একজন এবং পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় ১৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকরা সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।
শনিবার রাতে ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হামলায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির তিন সদস্য আহত হন। এর মধ্যে কনস্টেবল ফিরোজ ও কনস্টেবল মাহমুদকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া এএসআই শীলব্রত বড়ুয়াকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১০টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কনস্টেবল মাহমুদের সঙ্গে ছাত্রলীগের এক নেতার কথা কাটাকাটি হয়। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এরপর ওই নেতা ফোন করে দলবল ডেকে আনে। এ সময় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করে। খবর পেয়ে পাঁচলাইশ থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স গিয়ে ছাত্রলীগকে ধাওয়া দেয়। ছাত্রলীগও পাল্টাধাওয়া করে। এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী আহত হন। রওনক নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করে পুলিশ। পাঁচলাইশ থানার ওসি (তদন্ত) ওয়ালী আকবর জানান, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় চারজনকে আসামি করে ও অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্য মাহমুদুর রহমান বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন।
শনিবার নগরীর নাসিরাবাদ সরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের বিরোধকে কেন্দ্র করে তানভীর হোসেন (২৫) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। আহত তানভীরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর বায়েজিদ বোস্তামী ও খুলশী থানার পুলিশ যৌথভাবে অভিযানে নামে। পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটসংলগ্ন মোজাফফর নগর এলাকার একটি মেসে তল্লাশি করে ৮টি রামদা ও ৭টি কিরিচ উদ্ধার করা হয়। ওই মেসের ১৪ জনকে আটক করা হয়। তাদের বেশির ভাগ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ জানায়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হলের সিট দখলকে কেন্দ্র করে শাহজালাল ও শাহ আমানত হলের সামনে সিক্সটি নাইন ও সিএফসি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দুপুরে শাহ আমানত হলের ২২০ নম্বর কক্ষের সিট নিয়ে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মী শফিকুল ইসলাম শাওনের সঙ্গে সিএফসি গ্রুপের কর্মীদের কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী শাওনকে মারধর করা হয়। এর জেরে রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেন ক্যাম্পাসে পৌঁছলে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা সিএফসি গ্রুপের কর্মীদের ধাওয়া দেয়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি উভয়ের মাঝে অবস্থান নেয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

https://www.jugantor.com/todays-paper/news/9642