২০ জানুয়ারি ২০১৮, শনিবার, ১০:০০

বাঁধ নির্মাণ শুরু না হওয়ায় উদ্বেগে কৃষক

jগত বছরের এপ্রিল মাসে হাওরে ব্যাপক ফসলহানির পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সুনামগঞ্জে এসে মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দেখে গেছেন। বছরব্যাপী আলোচনায় ছিল হাওরের ফসলহানি এবং ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়। হাওরের কৃষকেরা আশা করেছিলেন, এবার অন্তত নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শুরু ও শেষ হবে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো ৯০ শতাংশ বাঁধের কাজ শুরুই হয়নি। এ কারণে কৃষকেরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। গতকাল শুক্রবার বেলা তিনটায় জেলার তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওর এলাকায় অনুষ্ঠিত এক
মানববন্ধনে স্থানীয় কৃষক ও সাধারণ মানুষ এমন হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। হাওর ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থা নামের একটি সংগঠন সব হাওরে দ্রুত বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরুর দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। টাঙ্গুয়ার হাওরের গোলাবাড়ি এলাকায় অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে হাওরপাড়ের বিভিন্ন গ্রামের লোকজন অংশ নেন। এর আগে দুপুর ১২টায় সংগঠনের উদ্যোগে উপজেলার শনির হাওর এলাকায় একই দাবিতে মানববন্ধন হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত বছর ফসলহানির পর হাওর এলাকার লোকজন চরম দুঃখ-কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এখন আবার হাওরে বোরো আবাদ শুরু করেছেন। কিন্তু ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ নিয়ে তাঁরা হতাশ। নীতিমালা অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বর বাঁধের কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা শুরু হয়নি। এখনো ৯০ শতাংশ বাঁধে কোনো মাটি পড়েনি। অথচ ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব হাওরে বাঁধের কাজ শেষ করতে হবে।

পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেছেন, হাওর থেকে এবার পানি ধীরে নামছে। তাই বোরো আবাদে বিলম্ব হচ্ছে। একই কথা বলা হচ্ছে বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রেও। তাই বলে সবাইকে বসে থাকলে চলবে না। অবিলম্বে সব হাওরে বাঁধের কাজ শুরু এবং নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে হবে। না হলে এবারও হাওরে ফসলহানি ঘটতে পারে।

মানববন্ধন চলাকালে আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ছাড়াও সাধারণ সম্পাদক পীযূষ পুরকায়স্থ, স্থানীয় জয়নাল আবেদিন মহাবিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যক্ষ সাইদুল কিবরিয়া প্রমুখ বক্তব্য দেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের হাওরে এবার ৮৭০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) বাঁধের কাজ করবে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাঁধের কাজ শুরু করেছে মাত্র ১৭৫টি পিআইসি।
সুনামগঞ্জে গত বছরের এপ্রিল মাসে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে ১৫৪টি হাওরের বোরো ধান তলিয়ে যায়। এরপর ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।

http://www.prothomalo.com/bangladesh/article/1412706