১৫ জানুয়ারি ২০১৮, সোমবার, ১০:১৯

পুঁজিবাজারে ব্যাপক দরপতন

ব্যাংকের ঋণ প্রদানে লাগাম টানা হবে এমন সংবাদে পুঁজিবাজারে ব্যাপক দরপতন হয়েছে। গত সাত কর্মদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক ২০১ পয়েন্ট কমে গেছে। আর গতকাল একদিনেই কমেছে ৬১ পয়েন্ট। সম্পদ ব্যবস্থাপকরা বলছেন, ব্যাংকের ঋণ প্রদানের সক্ষমতা কমানো হলে পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের ক্ষমতা কমে যাবে। আর এ খবর বাজারে ছড়িয়ে পড়ার পরই কমতে শুরু করেছে সূচক।

বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ব্র্যাক ইপিএলের হেড অব পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট সৈয়দ আদনান হুদা বলেন, পুঁজিবাজারে বর্তমানে দরপতনের মূল কারণ হলো তারল্য সংকট। বাজারে পর্যাপ্ত তারল্য আসলে বাজার আবারও ভালো হবে। এদিকে এডিআর কমানোর কথা বাজারে চাউর হয়েছে। আসলেই তা কমানো হলে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর ঋণ প্রদানের সক্ষমতা কমে যাবে। এতে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ কমিয়ে আনতে হবে। তাছাড়া ব্যাংকের ঋণ প্রদানের পরিমাণ কমলে অর্থনীতিতে তারল্য কমবে, বাড়বে ব্যাংকের আমানতের সুদের হার। আর ব্যাংকের সুদের হার বেশি হলে স্বাভাবিকভাবেই মানুষ পুঁজিবাজার থেকে ব্যাংকের দিকে যেতে চাইবে।এদিকে এডিআর কমানোর সত্যতা জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল বলেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণ-আমানত অনুপাত (এডি রেশিও) কিছুটা কমানোর ব্যাপারে আলোচনা চলছে, তবে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আর এডিআর যতোটা কমানো হতে পারে বলে বাজারে কথা উঠেছে ততোটা কমানো সম্ভব নয়। সুতরাং এতোটা উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।

এদিকে পুঁজিবাজারে চাউর হয়েছে, প্রথাগত ব্যাংকগুলোর এডি রেশিও ৮৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮০ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হতে পারে। আর ইসলামী ব্যাংকের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮৮ শতাংশ করা হতে পারে। অনুত্পাদনশীল খাতে ঋণ কমাতে ব্যাংকগুলোকে চাপে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। মার্চেন্ট ব্যাংকাররা বলছেন, এডিআর কমার খবরে অনেক শেয়ার বিনিয়োগকারী হাত গুটিয়ে বসে আছেন, শেয়ার কিনছেন না। ফলে সূচক ও লেনদেন কমে যাচ্ছে। তবে কোম্পানির মৌলভিত্তি বিবেচনা করে বিনিয়োগ করলে ভয়ের কিছু থাকবে না। কারণ এসব কোম্পানির শেয়ারের দাম কমলেও তারা যে লভ্যাংশ দেয় তাতে প্রকৃত লভ্যাংশের হার (শেয়ারের বাজারমূল্য বিবেচনায় লভ্যাংশ) ব্যাংকের এফডিআরের হারের তুলনায় ভালো। আর যেসব কোম্পানির প্রকৃত লভ্যাংশের হার ভালো সেসব কোম্পানির শেয়ারের দাম বাজার পতনের পরও খুব বেশি কমে না। তাছাড়া বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এখনও এশিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় লাভজনক। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের (সার্বিক) প্রকৃত লভ্যাংশের হার সাড়ে তিন শতাংশের মতো। যেখানে এশিয়ার অন্য দেশগুলোতে এ হার দুই শতাংশেরও কম। আর উন্নত দেশগুলোতে এ হার আরও কম।

 

http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/first-page/2018/01/15/250367.html