এ যেন কান্নার মাধ্যদিয়ে শত কষ্টের বহিঃপ্রকাশ। ছবিটি গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মাদরাসা জাতীয়করণের দাবিতে আমরণ অনশনরত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষকদের
১৫ জানুয়ারি ২০১৮, সোমবার, ৯:২৭

দুই মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেও সুরাহা হয়নি ইবতেদায়ী শিক্ষকদের

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীর সঙ্গে বৈঠকেও ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে কোনও সুরাহা হয়নি। দুই মন্ত্রী অনশন ভেঙ্গে আন্দোলন থেকে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করলেও শিক্ষক নেতারা তাতে সম্মত হননি।

নেতারা বলছেন, তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। মাদরাসা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ১৫ দিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছেন ইবতেদায়ী শিক্ষকরা। প্রথমে অবস্থান কর্মসূচির পরও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে কোনও আশ্বাস না পেয়ে তারা আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন। গত ৯ জানুয়ারি থেকে অনশনে রয়েছেন শিক্ষকরা।
গতকাল রোববার দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদরাসা ও কারিগরি বিভাগে ২৫ জন শিক্ষক নেতার সঙ্গে বৈঠকে বসেন দুই মন্ত্রী। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ইবতেদায়ী শিক্ষকদের জাতীয়করণের দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন দুই মন্ত্রী। অনশন ভাঙার অনুরোধও করেছেন তারা। কিন্তু শিক্ষকরা তাতে রাজি হননি।

ওই বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের মাদরাসা ও কারিগরি বিভাগের সচিব আলমগীর হোসেন, অতিরিক্ত সচিব এ কে এম জাকির হোসেন ভূঁইয়া, অশোক কুমার বিশ্বাস ও রওনক মাহমুদ, মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. বিল্লাল হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে যোগ দেয়া ইবতেদায়ী শিক্ষক সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, শিক্ষামন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী আমাদের সেই পুরনো কথাই বলেছেন। তারা বলেছেন, আমাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করবেন। এই কথা তারা গত কয়েক বছর ধরেই বলেন। কোনও লাভ হয়নি। তারা আমাদের অনশন ভেঙে চলে যাওয়ার জন্য বলেছেন। কিন্তু তাদের আশ্বাসে আর বিশ্বাস করি না। আমরা বলে এসেছি আন্দোলন চালিয়ে যাবো। প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস পেলেই আমরা বিশ্বাস করবো। তিনি আরও বলেন, সারাদেশে ইবতেদায়ী মাদরাসার সংখ্যা ১০ হাজার। ৪৪ হাজার শিক্ষক। কেউ এক টাকাও বেতন পান না। শুধুমাত্র একবার কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করেছিল, তখন দেড় হাজার মাদরাসাও সেই আওতায় নিয়েছিল। কিন্তু বাকিরা অনাহারে থাকে। আমরা জাতীয়করণ ছাড়া প্রেস ক্লাব থেকে এক চুলও নড়বো না।

রুহুল আমিন আরও বলেন, অনশনরত শিক্ষকদের মনোবল আমাদের থেকেও শক্তিশালী। তারা কোনও অবস্থাতেই ঘোষণা না আসা পর্যন্ত রাজপথ ছেড়ে যাবেন না।
এদিকে সচিবালয়ে অন্য একটি অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলে দিয়েছেন, চলতি বছর কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হবে। তবে সেটা ঢালাওভাবে হবে না। এমনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে যেগুলোর এক রুমে ৫ ক্লাসের শিক্ষা কার্যক্রম চলে। এসব স্কুলকে এমপিও দেয়া হবে না। মানসম্মত স্কুলকেই এমপিও দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, মাদরাসার শিক্ষকরা জাতীয়করণের জন্য অনশন করছেন এ মুহূর্তে তাদের জন্য সরকারের কিছু করার নেই।
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, অনশনের সপ্তম দিন পর্যন্ত অসুস্থ শিক্ষকের সংখ্যা বেড়ে দেড়শ’ ছাড়িয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এ সংখ্যা ১৬৫ বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি আছেন সাতজন।

 

http://www.dailysangram.com/post/315280