১৩ জানুয়ারি ২০১৮, শনিবার, ৯:২৮

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে দিশেহারা মানুষ

একের পর এক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিতে দিশেহারা মানুষ। কখনো চালের দাম আকাশচুম্বী হয়ে যায় আবার কখনো পেঁয়াজ-রসুনের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়। আর সবজির দাম তো কোনটির বাড়তি আবার কোনটি কমতির দিকে থাকে। দু’একটি পণ্যের দাম নাগালের মধ্যে থাকে। এভাবে দু’মুঠো ভাত খাওয়ার শাকসবজির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অল্প আয়ের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অবিলম্বে সরকারি পদক্ষেপ নিয়ে বাজার মনিটরিং জোরদার করে নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার দাবি জানিয়েছে ভোক্তারা।

নিত্যপণ্যের বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত প্রায় বছর খানেক ধরেই নিত্যপণ্যের মূল্য বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। যে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তা আর আগের স্থানে ফিরে যায়নি। কিছুটা কমেও নাগালের বাইরেই রয়ে গেছে। চালের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির পর এখনো তা আগের স্থানে ফিরে আসেনি। এদিকে মুরগী ও আপেলের দামের সমান হওয়া পেঁয়াজের দাম এখনো স্বাভাবিক হয়নি। পৌষ মাসে পেঁয়াজের ভরা মৌসুমেও অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম আকাশ ছোঁয়া। বাজারে নতুন পেঁয়াজ এসেছে তবু দাম এখনো বেশি। বাজারে এখনো দেশী নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি। আমদানী করা ভারতীয় পেঁয়াজও বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে। পুরনো দেশী পেঁয়াজের কেজি ১৪০-১৫০ টাকা হওয়ায় খুচরা বাজারে এ পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না। অপরদিকে শীতের সবজি বাজারে থাকায় দাম কিছুটা কম। কিন্তু চালের দাম কমেনি।
গতকাল শুক্রবার কাঁচা বাজারে দেখা গেছে, গত দুই সপ্তাহ ধরেই একটু একটু করে কমছে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহেও পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। তবে পেঁয়াজের দাম কমার হার পাইকারিতেই বেশি। পাইকারিতে যে হারে দাম কমেছে খুচরায় তার খুব বেশি প্রভাব পড়েনি।

রাজধানীর পাইকারি বাজার কাওরান বাজারে দেশি ছোট নতুন পেঁয়াজের পাইকারি দর ৬০-৬৩ টাকা প্রতিকেজি। আর আমদানি করা ভারতীয় লাল পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৮-৬০ টাকা কেজিতে। অথচ খুচরা বাজারে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে। আর পেঁয়াজের পাতা (ঠোস) বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি।
এদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে মচিরের দামের ঝালও কিছুটা কমেছে উভয় বাজারে। কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে।
এদিকে ভরা মৌসুমে বাজারে যোগান বাড়ায় শাক সবজির দামও কমে এসেছে রাজধানীর কাঁচাবাজার গুলোতে। সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, আলু ২৫ টাকা, ফুল কপি ২৪ টাকা ছাড়া বেশিরভাগ সবজিই ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এই সপ্তাহে চালের দাম বাড়েনি। তবে আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সব চাল। মোটা চাল ৪৮ টাকা ও মিনিকেট চালের দাম ৬২ টাকা পর্যন্ত কেজি।

রসুন ৮০ টাকা, আমদানি রসুন ১০০ টাকা, চিনি ৫৫-৬০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১০০ থেকে ১২০ টাকা, আমদানি করা মসুর ডাল ৬০ টাকা করে কেজি বিক্রি হচ্ছে।
অপরিবর্তিত রয়েছে সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও মাছ গোশতের দাম। মাছের সবশেষ বাজার দর প্রতিকেজি কাতল মাছ ২২০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০ টাকা, রুই ২৩০-২৮০ টাকা, সিলভারকার্প ১৩০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ টাকা, শিং ৪০০ টাকা ও চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৫০০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গোশতের বাজার রয়েছে গত সপ্তাহের দর অনুযায়ী। প্রতিকেজি গরুর গোশত ৪৮০-৫০০ টাকা, খাসির গোশত ৭০০-৭৫০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কক মুরগি প্রতি পিস সাইজ অনুযায়ী ১৫০-২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

http://www.dailysangram.com/post/315038