১২ জানুয়ারি ২০১৮, শুক্রবার, ৮:৪৯

রোহিঙ্গা হত্যার কথা স্বীকার

কৌশল বদলাচ্ছে মিয়ানমার

রোহিঙ্গা হত্যার বিষয়ে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর বিরল স্বীকারোক্তিকে দেশটির নতুন কৌশল হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। তাঁদের মতে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের ভাবমূর্তি বাড়ানোর চেষ্টা হিসেবে এটি করছে মিয়ানমার।
বিশ্বেষকরা বলছেন, গণকবরের অনুসন্ধান চালানো বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে আটক করা এবং রাখাইন রাজ্যে গণকবর পাওয়ার পর এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জোরালো হচ্ছিল। মিয়ানমার সামরিক বাহিনী নিজেই তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে একটি এলাকায় গণকবরের দায় স্বীকার করে দেখাতে চাচ্ছে যে তাদেরও জবাবদিহি আছে। এর মাধ্যমে মিয়ানমার নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা চালাচ্ছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের পরিচালক জেমস গোমেজ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই স্বীকারোক্তি তাদের অন্যায়কে আড়াল করার সংস্কৃতির সঙ্গে যায় না। তবে এটি পানিতে ভেসে থাকা বরফখণ্ডের ওপরের অংশ মাত্র। পুরো ঘটনা জানতে অভিযোগগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত হতে হবে।’ ফরটিফাই রাইটসের ম্যাথু স্মিথ বলেন, ‘মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর স্বীকারোক্তির মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে যে গণহত্যার সঙ্গে তাদের সেনা ও কমান্ডাররা জড়িত। পুরো ঘটনা আড়াল করতেই সাংবাদিকদের আটক করা হয়েছে।’

ইয়াঙ্গুনভিত্তিক থিংকট্যাংক টাম্পাডিপা ইনস্টিটিউটের খিন যাউ উইন বলেন, ‘অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততা স্বীকার করা ছাড়া মিয়ানমারের সামনে আর কোনো উপায় ছিল না।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোয় নেতৃত্ব দেওয়া মিয়ানমারের একজন জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডারের ওপর গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। অন্য সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যেও নিষেধাজ্ঞার খড়্গ নামার আতঙ্ক আছে। তাই তড়িঘড়ি করে মিয়ানমার দেখাতে চাচ্ছে যে তারাও কাউকে দায়মুক্তি দিচ্ছে না।

 

http://www.kalerkantho.com/print-edition/news/2018/01/12/588461