১১ জানুয়ারি ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৬:৫৭

রাখাইনে আটকা পড়েছে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ৬০ হাজার বা তারও বেশি রোহিঙ্গা শিশু আটকা পড়েছে। তারা অত্যন্ত অমানবিক পরিস্থিতিতে আছে। জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফ গতকাল বুধবার এ কথা জানিয়েছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইউনিসেফের মুখপাত্র ম্যারিক্সি মারক্যাডো ৬ ডিসেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি মিয়ানমার সফর করেন। ওই সফর নিয়ে গত মঙ্গলবার জেনেভায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘অংশীদাররা (মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা) এমন ২০টি শিশুকে চিহ্নিত করেছে যারা সহিংসতার সময় তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এমন শিশুর সংখ্যা ১০০ হতে পারে। তাদের বেশির ভাগই রাখাইন রাজ্যে। কিন্তু অংশীদাররা সেখানে যেতে পারছে না। তারা গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে সহিংসতা শুরুর আগে সেখানে ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভোগা চার হাজার ৮০০ শিশুর সেবা করছিল। ওই শিশুরা এখন আর তা পাচ্ছে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের অংশীদারদের পরিচালিত ১২টি বহির্বিভাগ থেরাপি চিকিৎসা কেন্দ্রের সবই বন্ধ হয়ে গেছে। সেগুলো হয় লুটপাট বা ধ্বংস হয়েছে, নয়তো কর্মীরা সেখানে যেতে পারছে না।’

মুখপাত্র ম্যারিক্সি মারক্যাডো রাখাইনে ঝুঁকিতে থাকা রোহিঙ্গাদের কাছে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর পৌঁছাতে না পারাকে বড় যন্ত্রণার বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ছয় লাখ ৫৫ হাজার রোহিঙ্গার দিকেই সারা বিশ্বের দৃষ্টি। অথচ মধ্য রাখাইনে ময়লা-আবর্জনায় ভরা শিবিরে এখনো ৬০ হাজার রোহিঙ্গা থাকার কথা বিশ্ব প্রায় ভুলেই গেছে। পল্লী অঞ্চলে যে রোহিঙ্গা শিশুরা আছে তারা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। আমরা রোহিঙ্গা ও রাখাইন—দুই সম্প্রদায়ের শিশুদের মধ্যে উচ্চমাত্রার পরিবেশদূষণের কথা শুনছি।’
ম্যারিক্সি মারক্যাডো রাখাইন রাজ্যে পেয়োক্তো টাউনশিপে তাঁর দেখা সবচেয়ে খারাপ শিবিরের বর্ণনা দেন। সেখানে পৌঁছতে নৌকায় তাঁর চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগে। তিনি বলেন, সেখানে গেলে প্রথমেই ভয়াবহ অপুষ্টির শিকার শিশুদের চোখে পড়ে। আক্ষরিক অর্থেই শিবিরটি একটি ভাগাড়। ডিসেম্বর মাসের প্রথম ১৮ দিনে তিন থেকে ১০ বছর বয়সী চারটি শিশুর মৃত্যুর কথা শিবিরের ব্যবস্থাপক তাঁকে জানিয়েছেন।

http://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2018/01/11/588151